আধিপত্যবাদবিরোধী জুলাইযোদ্ধা শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যার প্রতিবাদে ছাত্রশিবির চট্টগ্রাম মহানগর শাখার উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) জুমার নামাজের পর নগরীর জমিয়তুল ফালাহ জামে মসজিদ থেকে দেওয়ানহাট অভিমুখে মিছিলটি শুরু হয়ে দেওয়ানহাট মোড়ে শেষ হয়। মিছিলে ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষার্থী অংশ নেন।
নগর উত্তর সেক্রেটারি মুমিনুল হকের সঞ্চালনায় মিছিল পরবর্তী সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য দেন ছাত্রশিবির চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি মুহাম্মদ আলী ও নগর দক্ষিণ ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাইমুনুল ইসলাম মামুন।
সমাবেশে বক্তারা শহীদ শরিফ ওসমান হাদির হত্যাকারীদের অনতিবিলম্বে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি মুহাম্মদ আলী বলেন, জুলুম ও স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে যেমন অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিলেন ওসমান হাদি, তেমনি সাংস্কৃতিক ফ্যাসিজমের বিরুদ্ধেও তিনি ছিলেন সোচ্চার। দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে ভারতীয় আধিপত্যের বিরুদ্ধে সংগ্রাম ছিল তার অন্যতম পরিচয়। একজন হাদিকে শহীদ করে এ দেশে ভারতীয় আধিপত্যের নীলনকশা বাস্তবায়ন করা যাবে না।
নগর দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাইমুনুল ইসলাম মামুন বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকার বিদায় নিলেও তার আধিপত্য এখনো বহাল রয়েছে, যার প্রমাণ ওসমান হাদির শাহাদাত।
তিনি বলেন, গুলি করে কেবল একজন মানুষকে নয়, যেন পুরো জুলাই আন্দোলনকেই হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। আপাতদৃষ্টিতে হত্যাকারী দুজন হলেও এর পেছনে একটি বৃহৎ চক্রের সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র রয়েছে। দ্রুত তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রামের মাটিতে সন্ত্রাসীদের কোনো স্থান হবে না। শহীদ ওয়াসিম ও শহীদ শান্তকে স্মরণ করে তিনি আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
সমাবেশে নেতারা বলেন, জুলাই আন্দোলনের অনেক নেতার নৈতিক বিচ্যুতি ঘটলেও ওসমান হাদি ছিলেন নীতির প্রশ্নে আপসহীন। তিনি যে প্রেরণার মিনার রেখে গেছেন, শ্রম ও ত্যাগের মাধ্যমে তা আরও উচ্চকিত করে রাখার ঘোষণা দেন তারা।
জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন ১২ নভেম্বর দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগর এলাকায় মাথায় গুলিবিদ্ধ হন ওসমান হাদি। দেশে চিকিৎসার পর গত সোমবার এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তাকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার রাতে খবর আসে, সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা গেছেন।
এমআরএএইচ/এমআরএম/এএসএম