জাগো জবস

দুইবার ফেল করেও বোর্ডে প্রথম হয়েছিলাম: গৌরাঙ্গ চন্দ্র দেবনাথ

অধ্যাপক ড. গৌরাঙ্গ চন্দ্র দেবনাথ বাংলাদেশের শিক্ষাঙ্গনের অনন্য ব্যক্তিত্ব। জীবনের শুরুতে একাধিকবার পরীক্ষায় ব্যর্থ হলেও হার মানেননি কখনো। বরং ব্যর্থতাকে শক্তিতে রূপান্তর করে এইচএসসি পরীক্ষায় কুমিল্লা বোর্ডের সর্বোচ্চ ফলাফল অর্জনকারী হয়েছেন। তার এই ব্যতিক্রমী পথচলা শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি সব বয়সী মানুষকেই অনুপ্রাণিত করে। শিক্ষকতা, গবেষণা ও তরুণদের মেন্টর হিসেবে তার অবদান অসামান্য। সম্প্রতি তার শৈশব, উত্থান-পতনের গল্প, শিক্ষাদর্শন এবং তরুণ প্রজন্মের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ নিয়ে জাগো নিউজের সঙ্গে কথা বলেছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আনিসুল ইসলাম নাঈম—

জাগো নিউজ: আপনার শৈশব ও শিক্ষাজীবনের শুরুটা কেমন ছিল?অধ্যাপক ড. গৌরাঙ্গ চন্দ্র দেবনাথ: প্রত্যেক মানুষের মতো আমারও একটা শৈশব ছিল। আমাদের যৌথ ফ্যামিলি ছিল। আমার বাবা ও কাকারা ছিলেন ৬ জন। আমরা ভাই-বোন ছিলাম ছয়জন। কাকাতো ভাই-বোন মিলে অনেক বড় একটা পরিবার ছিল। ছোটবেলায় আমি খুবই দুরন্ত ছিলাম। বাবা জীবিত থাকাবস্থায় গ্রামের একটি কিন্ডারগার্টেন পড়াশোনার হাতেখড়ি শুরু হয়। এরপর মামার বাড়িতে শিফট হই। সেখানে রামকৃষ্ণপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা শুরু করি। একবছর পর বাবা মারা যান। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরিয়ে রামকৃষ্ণপুর কেকেআরকে উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশোনা শুরু করি। এটা কুমিল্লা জেলার হোমনা উপজেলার অন্তর্গত চান্দেরচর ইউনিয়নের রামকৃষ্ণপুর গ্রামে।

জাগো নিউজ: ছাত্রজীবনে বড় কোনো চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছিলেন? পড়লে কীভাবে তা কাটিয়ে উঠেছেন?অধ্যাপক ড. গৌরাঙ্গ চন্দ্র দেবনাথ: আমার জীবনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ি এসএসসি পাস করার পর। ১৯৯৪ সালে সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজে এইচএসসিতে ভর্তি হলাম। এইচএসসির ফাইনাল পরীক্ষা দেওয়ার আগে আমার প্রিপারেশন তেমন ভালো ছিল না। আসলে কলেজে ঠিকভাবে ক্লাস হতো না। তখন প্রাইভেট পড়তে পারতাম না। বিজ্ঞানের ছাত্র হিসেবে আমার প্রিপারেশনের অনেক ঘাটতি ছিল। ফলাফল যা হওয়ার তা-ই হলো। ১৯৯৬ সালে আমি ইন্টারমিডিয়েটে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ফেল করি। শতকরা পাসের হার সবচেয়ে বেশি ছিল ঢাকা বোর্ডে ২৬%। সবচেয়ে খারাপ ছিল যশোর বোর্ডে ১৬%। তখন পরীক্ষার ফলাফল এখনকার মতো এত তাড়াতাড়ি দিতো না। ফলাফল পেতে সেপ্টেম্বর বা অক্টোবর মাস পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতো। ফলাফল পাওয়ার পর হাতে তেমন সময় থাকতো না পুনরায় রেজিস্ট্রেশন করার। এরপর আবার রেজিস্ট্রেশন করে ফাইনাল পরীক্ষায় বসি। একইভাবে ১৯৯৭ সালেও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় আবার ফেল করি। আমার পড়াশোনায় এটাই ছিল সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

জাগো নিউজ: উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় দুইবার ফেল করার পর কুমিল্লা বোর্ডে প্রথম হওয়া—এটা কীভাবে সম্ভব হলো?অধ্যাপক ড. গৌরাঙ্গ চন্দ্র দেবনাথ: পরপর দুইবার ফেল করার পর সামাজিক-পারিবারিক অনেক প্রেসারে ছিলাম। এমন একটা আওয়াজ তখন উঠেছিল, আমাকে দিয়ে পড়াশোনা হবে না। সুতরাং আমি যদি বিদেশ চলে যাই, ওখান থেকে কিছু টাকা-পয়সা হয়তো ইনকাম করে ফ্যামিলির জন্য পাঠাতে পারবো। কিন্তু আমি ভাবলাম ভিন্ন কথা, আরেকবার চেষ্টা করে দেখি। যদি কিছু করা যায়। যেমন ভাবনা; তেমনই কাজ। ঢাকা বোর্ড থেকে আমার এসএসসির মার্কশিট-সার্টিফিকেটগুলো বোর্ড থেকে উত্তোলন করে গ্রামে গিয়ে কুমিল্লা বোর্ডের অধীনে অধ্যাপক আব্দুল মজিদ কলেজে বিজ্ঞান বিভাগ বাদ দিয়ে বাণিজ্য বিভাগে ভর্তি হই।

কলেজে যেদিন ভর্তি হয়েছিলাম; প্রায় ওইদিন থেকে আমি ১০ ঘণ্টা পড়াশোনা করি। আমি একটা বাড়িতে তিনটা বাচ্চাকে পড়াতাম। দুই বেলা পড়াতাম। তাদের বাড়িতে তিনবেলা খাওয়া-দাওয়া করতাম। কলেজ থেকে বেশি দূরে ছিল না বাড়িটা। দুইবেলা পড়ানো এবং কলেজের সময় ছাড়াও দৈনিক কমপক্ষে ১০ ঘণ্টা পড়তাম। কোনো দিন যদি ৯ ঘণ্টা পড়তাম, পরের দিন ১১ ঘণ্টা পরে সমান করে দিতাম। যখন সেকেন্ড ইয়ারে পড়ি; তখন ছোট ভাই নিতাই চন্দ্র দেবনাথ বাণিজ্য বিভাগ থেকে কুমিল্লা বোর্ডের অধীনে মেধা তালিকায় সপ্তম স্থান লাভ করে। নিতাই আমাকে বলল যে, আমি যদি ৭ম হতে পারি তুই ইচ্ছা করলে ফার্স্ট, সেকেন্ড কিংবা থার্ড হতে পারিস।

তখন ওই লজিং বাড়িতে বাচ্চাগুলো পড়ানো বাদ দিয়ে হোস্টেলে গিয়ে উঠলাম। ৫০০ টাকার একটা টিউশন করতাম। এটা দিয়ে কোনোভাবে চলতাম। দিনে ১২-১৪ ঘণ্টা পড়া শুরু করলাম। কোনো এক সময় আমার মধ্যে একটা লোভ কাজ করছিল। আমি চাইলেই তো ফার্স্ট হতে পারি। যদি ফার্স্ট হই, তাহলে আমার মা, বড়দা সর্বোপরি আমার পরিবার অনেক খুশি হবে। যারা আমার খারাপ ফলাফলের জন্য কষ্ট পেয়েছেন। ওই ভাবনা অনুযায়ী ১৬ ঘণ্টা, ১৭ ঘণ্টা, ১৮ ঘণ্টাও পড়াশোনা করি। অনেকেরই হয়তো বিশ্বাস হবে না, কোনো একসময় আমি দিনে ২০-২২ ঘণ্টা পড়াশোনা করি। যদি ওই সময়টা অনেক বেশি না। মাত্র তিন মাস। কিন্তু করেছিলাম। কারণ লক্ষ্য একটাই, যে কোনোভাবে মেধাতালিকায় প্রথম হতেই হবে।

জাগো নিউজ: শিক্ষকতা পেশা বেছে নেওয়ার পেছনে অনুপ্রেরণা কী ছিল?অধ্যাপক ড. গৌরাঙ্গ চন্দ্র দেবনাথ: জীবনে অনেক ভালো শিক্ষকের সান্নিধ্য পেয়েছি। শিক্ষকরাই ছিলেন আমার শিক্ষকতা পেশার অনুপ্রেরণার প্রধান কারিগর। প্রথম যখন শ্রীনগর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ি, আমার অঙ্কের টিচার ছিলেন মালেক স্যার। অনেক প্রিয় একজন শিক্ষক। হাইস্কুলে যখন পড়ি, মালেক স্যারের ছেলে আসাদুজ্জামান আমার ক্লাসমেট। সে-ও অঙ্কে দুর্দান্ত, ইংরেজিতেও ভালো। ক্লাস সিক্স থেকে যখন সেভেনে ওঠে; তখন তার রোল নাম্বার ছিল ৩। তারপর যখন স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে হাইস্কুলে উঠলাম। দেখলাম তারচেয়ে আরও ভালো মানের শিক্ষক আছেন। তেমনই একজন শিক্ষক পেলাম সন্তোষ রঞ্জন গুহ স্যারকে। তিনি আমাদের অঙ্ক ও ইংরেজি পড়াতেন। তাকে না দেখলে হয়তো বুঝতেই পারতাম না, ছাত্রদের প্রতি কত ভালোবাসা, স্নেহ, মমতা মানুষের মনে কাজ করে। তার কাছে অনেক দিন পয়সা ছাড়া পড়েছি। শুধু আমি না। অনেক ছাত্রকে তিনি পয়সা ছাড়া পড়াতেন।

আরও পড়ুনচাকরি ও ক্যারিয়ারের মধ্যে পার্থক্য কী? বিদেশে উচ্চশিক্ষায় কভার লেটারের গুরুত্ব 

ক্লাস সেভেন-এইটে পড়াবস্থায় নিয়মিত ডায়েরি মেইন্টেইন করতাম। সেসময় ডায়েরির এক কোণে লিখেছিলাম ‘আমি জীবনে শিক্ষক হতে চাই’। ছাত্রছাত্রীদের সাথে কাটানো সময়টাই শ্রেষ্ঠ সময় মনে হয়। অনেক ভালো লাগে তাদের সাথে সময় কাটাতে। কেননা উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাস করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াবস্থায় কোচিং সেন্টারে পড়াতাম। তখনই অনুভব করলাম ব্যাপারটা। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার প্রায় শেষ পর্যায়ে নিজে নিজে সিদ্ধান্ত নিই, শিক্ষকতাই হবে আমার একমাত্র পেশা। অন্য কোনো চাকরি করবো না। আমার কাছের মানুষেরা জানেন আমি শিক্ষকতা পেশা ছাড়া অন্য কোনো চাকরিতে কোনোদিন ইন্টারভিউ দিইনি। কারণ আমি জানি অন্য কোনো চাকরি আমার দ্বারা হবে না।

জাগো নিউজ: বর্তমানে তরুণদের শিক্ষা ও ক্যারিয়ার নিয়ে কী ভাবেন?অধ্যাপক ড. গৌরাঙ্গ চন্দ্র দেবনাথ: বর্তমানে একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াচ্ছি। এর আগে প্রায় ১০ বছর আরেকটা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়িয়েছিলাম। এখনকার ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে লক্ষ্যণীয় বিষয় হচ্ছে, কম সংখ্যক ছাত্রছাত্রী খুব ভালো পড়াশোনা করে। বেশিরভাগ ছাত্রছাত্রী গভীর মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করে না। পড়াশোনার খুব গভীরে যায় না। একটু ভালো রেজাল্ট করার জন্য প্রয়োজন অনুযায়ী পড়াশোনা করে। তারা ভাবে, কয়েক ঘণ্টা বা কয়েকদিন মনে রেখে পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করতে পারলেই হবে। আসলে এটি চাকরি ক্ষেত্রে বা কর্মক্ষেত্রে পটেনশিয়াল করে তোলে না। কারণ কয়েকদিন পরেই হয়তো সে এগুলো ভুলে যাবে। বাস্তব জীবনে এগুলোর অ্যাপ্লিকেশন তার দ্বারা সম্ভব হবে না। কিছু সংখ্যক ছাত্রছাত্রী খুব ভালোভাবে পড়াশোনা করে। জুনিয়র, সিনিয়র বা আমার ব্যাচের যারা ভালো রেজাল্ট করতো; তাদের চেয়েও অনেক বেশি পড়ুয়া ছাত্রছাত্রী এখন পাওয়া যায়। সংখ্যাটা একেবারই কম। ছাত্রছাত্রীদের প্রতি একটা অনুরোধ, ছাত্র জীবন শেষ করার পরে চাইলেও কিন্তু এখানে ফিরে আসতে পারবেন না। আবার ভালো রেজাল্ট করার সুযোগ থাকবে না। সুতরাং এখন যদি আপনি ভালো রেজাল্ট না করেন, সারাজীবন আপনাকে পে করতে হবে। ভালোভাবে পড়াশোনা করলে আপনার ভবিষ্যৎ ভালো হবে। ভালোভাবে পড়াশোনা না করলে সারাজীবন আফসোস করতে হবে।

জাগো নিউজ: শিক্ষক হিসেবে শিক্ষার্থীদের মধ্যে কী ধরনের গুণাবলি গড়ে তুলতে চান?অধ্যাপক ড. গৌরাঙ্গ চন্দ্র দেবনাথ: সব সময় ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে তিনটি গুণ দেখতে চাই। তাদের মধ্যে সময়নিষ্ঠা এবং শৃঙ্খলা থাকতে হবে। কঠোর পরিশ্রম করার সংকল্প থাকতে হবে। অবশ্যই সৎ হতে হবে। আমার কাছে সততার মিনিং ভিন্ন। সৎ মানে সত্য কথা বলছেন, নৈতিক কাজ করছেন—ব্যাপারটা এমন না। আমার কাছে সৎ মানে, নিজস্ব কর্ম অনুযায়ী সর্বোচ্চ মনোযোগ দিয়ে কাজ করা। ছাত্র হলে সর্বোচ্চ মনোযোগ থাকবে কীভাবে ভালোভাবে পড়াশোনা করা যায়। ব্যবসায়ী হলে মনোযোগ থাকবে কীভাবে ভালো ব্যবসা করা যায়। খেলোয়াড় হলে মনোযোগ থাকবে কীভাবে আরও গভীর মনোনিবেশ বা পরিশ্রম করে ভালোভাবে খেলা যায়। এমন কাউকে দেখাতে পারবেন না, যারা সময়নিষ্ঠা ও শৃঙ্খলাবদ্ধ ভাবে চলে না। জীবনে অনেক কিছু করে ফেলেছেন। জীবনে সময়নিষ্ঠা ও শৃঙ্খলাবদ্ধ ভাবে চলার কোনো বিকল্প নেই। অন্যদিকে যদি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ না থাকেন, তাহলে কঠোর পরিশ্রম আসবে না। যখন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হবেন; তখন প্রশ্ন আসবে কঠোর পরিশ্রম করার। কঠোর পরিশ্রম করলেই সফলতা একদিন ধরা দেবে।

জাগো নিউজ: আপনার গবেষণার প্রধান ক্ষেত্রগুলো কী কী?অধ্যাপক ড. গৌরাঙ্গ চন্দ্র দেবনাথ: আমি মূলত হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্টের ছাত্র। যার জন্য আমার গবেষণার মূল বিষয়বস্তু থাকে হিউম্যান রিসোর্স ব্যবস্থাপনা। স্পেসিফিক্যালি রিক্রুটমেন্ট, সিলেকশন, ট্রেনিং ও ডেভেলপমেন্ট। তাছাড়া নেতৃত্বের গুণাবলি; কোন নেতৃত্বের গুণাবলি এনজিওতে সবচেয়ে বেশি পারফেক্ট, সার্কুলার ইকোনমি—এগুলোর ওপরে কিছু গবেষণা আছে।

জাগো নিউজ: জীবনে ব্যর্থতা কীভাবে মোকাবিলা করতে হয় বলে মনে করেন?অধ্যাপক ড. গৌরাঙ্গ চন্দ্র দেবনাথ: যখন ব্যর্থ হবেন; তখন প্রথমেই মাথায় একটা প্রশ্ন রাখতে হবে। আপনি কি সফল হতে চান? সফল হতে চাইলে পরিকল্পনা করতে হবে, কীভাবে সফল হতে চান? শর্টকাট পথে নাকি কঠোর পরিশ্রম এবং দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনায়। যদি শর্টকাট পথে সফল হতে চান, খুব দ্রুতগতিতে সব হারাবেন। যদি দীর্ঘমেয়াদীতে সফল হতে চান, তাহলে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। অন্যদিকে যদি সফল হতে না চান, এগুলোর কোনো কিছুই করার দরকার নেই। তাহলে আপনার কাছে প্রশ্ন পড়ে রইল, সফল হতে চাচ্ছেন নাকি চাচ্ছেন না। অবস্থা যতই প্রতিকূল হোক না কেন, মনের মধ্যে সাহস থাকতে হবে যে এটা আপনার দ্বারা সম্ভব। যখনই একবার মনে করবেন যে সম্ভব না, তাহলে এটা আপনাকে দ্বারা কোনোদিনই হবে না। যদি একবারের জন্য মনে করেন, এটা আপনার দ্বারা সম্ভব। তাহলে এটা বাস্তবায়ন করার জন্য অনেক চেষ্টা করবেন। সবশেষে সফল হবেন।

জাগো নিউজ: তরুণদের উদ্দেশে আপনার কী বার্তা থাকবে?অধ্যাপক ড. গৌরাঙ্গ চন্দ্র দেবনাথ: যদি মনে করেন এই পৃথিবীর কারোর প্রতি আপনার দায়বদ্ধতা নেই, কাউকে আপনি ভালোবাসেন না, তাতেও কোনো সমস্যা নেই। তাহলে আপনি নিজের জন্য কাজ করেন কিংবা নিজেকে ভালোবাসেন। কারণ আপনার বাবা-মা, ফ্যামিলি এবং আপনজন সবাই আপনার দিকে তাকিয়ে আছেন। যার জন্য আমি বলি, পৃথিবীর সবাইকে ভুলে যান, নিজেকে ভালোবাসেন তাহলেই সবাই খুশি হবে। কারণ সবাই চায় আপনি প্রতিষ্ঠিত হন, আপনি সুখী ও সফল হন। অনেকে আমার এ কথার ভিন্ন মাত্রা দিতে চান। কাউকে ভালো না বাসলে সে তো ভালো মানুষ হয় না। আসলে আমি কাউকে ভালোবাসবেন না এটা বলি না। আমি বলেছি কাউকে ভালোবাসার দরকার নেই, নিজেকে ভালোবাসেন। কারণ আল্টিমেটলি যারা আপনার সফলতা দেখার জন্য অপেক্ষায় আছেন, সেসব মানুষ খুশি হবেন। তাহলে সবাইকে খুশি করতে পারছেন। পরোক্ষভাবে সবাইকে ভালোবেসেছেন। এ জন্যই এত কষ্ট করে সফল হয়েছেন। আবারও বলছি নিজেকে ভালোবাসেন। নিজের ভালোবাসা প্রতিষ্ঠা করার জন্য কোনো অনৈতিক কাজ করা যাবে না। মনে রাখবেন, নিজেকে ভালোবাসবেন নৈতিকভাবে, অনৈতিকভাবে নয়।

এসইউ