মালয়েশিয়ায় সাইবার অপরাধ আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশটিতে মোট ৫ হাজার ৭৩৫টি সাইবার ঘটনার অভিযোগ নথিভুক্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে সাইবার সিকিউরিটি রেসপন্স সেন্টার।
মালয়েশিয়ার ডিজিটাল মন্ত্রণালয়ের সচিব জেনারেল ফাবিয়ান বিগার জানান, এ সংখ্যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪ হাজার ৬৫৯টি বেশি, যা এক বছরে উল্লেখযোগ্য বাড়ার ইঙ্গিত দেয়।
তিনি বলেন, ডিজিটাল হুমকি এখন প্রতিদিনকার বাস্তবতা। আমরা প্রতিনিয়ত এসব হুমকির মুখোমুখি হচ্ছি।
ফাবিয়ান আরও জানান, রয়্যাল মালয়েশিয়ান পুলিশ (পিডিআরএম) চলতি বছরের নভেম্বর পর্যন্ত অনলাইন প্রতারণার ঘটনা অনেক বেশি লক্ষ্য করেছে। বিশেষ করে টেলিযোগাযোগভিত্তিক প্রতারণায় হাজারো মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং সারাদেশে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ৭০০ মিলিয়ন রিঙ্গিত ছাড়িয়েছে।
শনিবার (২০ ডিসেম্বর) পেরাকের লেংগংয়ে অবস্থিত মারা হায়ার স্কিলস কলেজে আয়োজিত ডিজিটাল অ্যাওয়ারনেস কার্নিভ্যাল ২০২৫-এ দেওয়া বক্তব্যে এসব তথ্য তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন পেরাকের মেন্ত্রি বেসার দাতুক সেরি সারানি মোহামাদ।
ফাবিয়ান বলেন, পরিসংখ্যানগুলোতে বিভিন্ন ধরনের সাইবার অপরাধ নথিভুক্ত রয়েছে। যেমন অনলাইন প্রতারণা, তথ্য ফাঁস, ক্ষতিকর সফটওয়্যার আক্রমণ (ম্যালিশাস কোড) এবং অনুমতি ছাড়া সিস্টেমে প্রবেশের চেষ্টা (ইনট্রুশন)। এসব হুমকি সমাজের সব স্তরের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের লক্ষ্য করে পরিচালিত হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, এই কার্নিভ্যাল শুধু ডিজিটাল জ্ঞানই দেয় না, বরং এটি জনগণের জন্য একটি ডিজিটাল সুরক্ষা ঢাল হিসেবেও কাজ করবে।
সাইবার নিরাপত্তা, প্রতারণা শনাক্তকরণ এবং নিরাপদ ডিজিটাল ব্যবহার সম্পর্কে সচেতনতা তৈরির মাধ্যমে জনগণ যেন প্রযুক্তি আরও আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ব্যবহার করতে পারে এমনটাই প্রত্যাশা করেন তিনি।
অন্যদিকে উদ্বোধনী বক্তব্যে পেরাকের মেন্ত্রি বেসার দাতুক সেরি সারানি মোহামাদ বলেন, ডিজিটাল রূপান্তর কাকতালীয়ভাবে হয় না। এটি পরিকল্পিত হতে হয় এবং মানুষের বাস্তব চাহিদার ওপর ভিত্তি করেই এগোতে হয়।
তিনি জানান, এ লক্ষ্যেই পেরাক স্টেট ডিজিটাল ইকোনমি অ্যাকশন প্ল্যান ২০৩০ চালু করা হয়েছে, যার মাধ্যমে ডিজিটাল অবকাঠামো শক্তিশালী করা, প্রশাসনিক দক্ষতা বাড়ানো এবং ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে ব্যবসা ও সমাজকে ক্ষমতায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এ পরিকল্পনার আওতায় গ্রামীণ এলাকায় ডিজিটাল সংযোগ সম্প্রসারণ, ‘পয়েন্টস অব প্রেজেন্স’ উন্নয়ন, দুর্গম অঞ্চলে লো-আর্থ অরবিট স্যাটেলাইট প্রযুক্তি ব্যবহার, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের মধ্যে ক্যাশলেস লেনদেন প্রসার এবং রাজ্যের ডিজিটাল উদ্ভাবন ইকোসিস্টেম গড়ে তোলার বিষয়গুলো সমন্বিতভাবে বাস্তবায়ন ও তদারকি করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
এমআরএম