জাতীয়

দিপু চন্দ্র দাস হত্যার বিচার ও উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দাবি

পোশাক শ্রমিক শ্রমিক দিপু চন্দ্র দাসের নৃশংস ও ন্যাক্কারজনক হত্যাযজ্ঞের ঘটনায় উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দাবি করেছে শ্রমিক নিরাপত্তা ফোরাম (এসএনএফ)। একই সঙ্গে এ ঘটনায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত সবার দ্রুত বিচার দাবি করা হয়েছে। সঠিক বিচার না হলে শ্রমিকরা রাস্তায় নামবেন বরেও হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন।

সোমবার (২২ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে শ্রমিক নিরাপত্তা ফোরাম আয়োজিত মানবন্ধনে শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্যপরিষদের অন্তর্ভুক্ত শ্রমিক সংগঠন ও মানবাধিকার সংগঠনের প্রতিনিধিরা এসব দাবি জানান।

উপস্থিত বক্তারা শ্রমিকের প্রতি এ ধরনের অমানবিক ও নৃশংস হত্যার কথা তুলে ধরে বলেন, এ হত্যার যথাযথ বিচার না হলে শ্রমিকরা বিচারের জন্য পথে নামতে বাধ্য হবে, যার দায় সরকারকে বহন করতে হবে। এমন অবস্থা চলতে থাকলে আমরা কেউই নিরাপদ নই, তাই এ ঘটনার আশু বিচার হওয়া দরকার।

বিলসের নির্বাহী পরিচালক ও শ্রম সংস্কার কমিশন ২০২৪ এর প্রধান সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহম্মদ বলেন, মালিকের দায়িত্ব হলো তার অধীন শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। কিন্তু মালিক এখানে দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছেন। তার অধীন শ্রমিককে নিরাপত্তা না দিয়ে মবের মুখে ঠেলে দেন। এ কারণেই এমন একটি নির্মম ঘটনা ঘটেছে। মালিক কখনোই তার দায় এড়াতে পারেন না, তাকে এই হত্যার দায় বহন করতে হবে। এই হত্যার সঙ্গে যারা যুক্ত ছিল তাদের সবাইকে বিচারের আওতাভুক্ত করতে হবে।

সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতন বলেন, ধর্মের নামে, কাফের ফতোয়া দিয়ে এভাবে শ্রমিকের ওপর আক্রমণ ও নৃশংস হত্যাযজ্ঞও গ্রহণযোগ্য নয়। এমন হলে কোনো মানুষই নিরাপদ নয়।

বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সহ-সভাপতি আবুল কালাম আজাদ বলেন, বিভিন্ন সময়ে অত্যাচারী সরকারের বিরুদ্ধে শ্রমিকরা সংগঠিত হয়ে প্রতিবাদ করেছে, সমাধানের দিকে এগিয়েছে। আর এখন শ্রমিকের ওপর এই নির্মমতার প্রতিবাদ আমরা করবো। ভবিষ্যতে যেন এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয় সে বিষয়ে স্কপসহ সব শ্রমিক সংগঠন সংঘবদ্ধভাবে লড়াই করবো।

শ্রমিক নিরাপত্তা ফোরামের সদস্য সচিব এবং সেইফটি অ্যান্ড রাইটস সোসাইটির (এসআরএস) নির্বাহী পরিচালক সেকেন্দার আলী মিনা বলেন, দিপু চন্দ্র দাসের বড় পরিচয় হলো তিনি একজন শ্রমিক। আর শ্রমিকের অধিকার রক্ষায় সচেষ্ট থাকার ফলে তার এই পরিণতি। শ্রমিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারলে এ দেশের শিল্পব্যবস্থা নড়বড়ে হয়ে যাবে। আমাদের দাবি হলো এই হত্যার সঙ্গে যুক্তদের বিচারের আওতায় আনা, পরিবারের জন্য যথাযথ ক্ষতিপূরণ এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদলের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জাতীয় শ্রমিক জোটের যুগ্ম সমন্বয়কারী আবদুল কাদের হাওলাদার, বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ফয়েজ হোসেন, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফন্টের যুগ্ম সমন্বয়ক আহসান হাবিব বুলবুল, কর্মজীবী নারীর সমন্বয়ক রাজীব আহমেদ, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সহ-সভাপতি মাহবুব আলম, বাংলাদেশ জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শামীম আরা।

মানবাধিকার ইস্যুতে কাজ করে এমন ১৫টি সংগঠন ও শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদের অন্তর্ভুক্ত ১৪টি সংগঠনের সমন্বয়ে শ্রমিক নিরাপত্তা ফোরাম গঠিত, যার আহ্বায়ক মানবাধিকারকর্মী হামিদা হোসেন এবং সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন সেইফটি অ্যান্ড রাইটস সোসাইটি’র নির্বাহী পরিচালক সেকেন্দার আলী মিনা।

ইএইচটি/ইএ/জেআইএম