সাবেক মিস আর্থ বাংলাদেশ ও আলোচিত মেঘনা আলম আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে যাচ্ছেন। ঢাকা-৮ আসন থেকে নুরুল হক নুরের গণ অধিকার পরিষদের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে লড়ার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। আজ বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) মেঘনা আলম নিজেই বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন।
এই আসনটিতে সম্ভাব্য প্রার্থী ছিলেন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্ববায়ক শহীদ ওসমান হাদি। তিনি গত ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর পল্টন বক্স কালভার্ট রোডে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন। মুমূর্ষু অবস্থায় হাদিকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল ও পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তাকে সিঙ্গাপুর নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৮ ডিসেম্বর রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে তিনি মারা যান।
এদিকে মেঘনা আলমের জনসংযোগ বিভাগ থেকে তাকে মডেল হিসেবে ‘ভুল’ পরিচয় প্রকাশ না করার অনুরোধ করা হয়েছে।
নিজেকে একজন সচেতন পরিবেশকর্মী পরিচয়ে মেঘনা আলম বলেন, তিনি প্রচারণার ক্ষেত্রে কাগজের অপচয় রোধ করতে বড় কোনো পোস্টার বা লিফলেট ব্যবহার করবেন না।
মেঘনা আলম তার নির্বাচনী পরিকল্পনায় ঢাকা-৮ আসনকে বাংলাদেশের সবচেয়ে নারী-বান্ধব এলাকা হিসেবে গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
আরও পড়ুনহাদির আসনে প্রার্থী হচ্ছেন মেঘনা আলমমডেল মেঘনা আলমের হাজিরা, প্রতিবেদন দাখিলে নতুন তারিখ
তিনি জানান, নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিশেষ সিসিটিভি ব্যবস্থা স্থাপন করা হবে। এতে স্ট্রিট হ্যারাসমেন্ট বা অনাকাঙ্ক্ষিত স্পর্শ রোধ করা যাবে। এছাড়া নারীদের জন্য বিশেষ ডে-কেয়ার সিস্টেম চালু করবেন, যাতে তারা নিজের স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়া বা নতুন কিছু শেখার অবসর পান। নারীদের জন্য আলাদা মসজিদ নির্মাণ ও বিদ্যমান মসজিদে নামাজের স্থান নিশ্চিত করার পরিকল্পনাও তার ইশতেহারে রয়েছে।
চিরাচরিত ‘সিঙ্গাপুর বানানোর’ ফাঁপা প্রতিশ্রুতির বাইরে গিয়ে মেঘনা আলম বাস্তবসম্মত উন্নয়নের ওপর জোর দিয়েছেন। তার পরিকল্পনায় রয়েছে, বস্তিবাসী ও সাধারণ পথচারীদের জন্য স্বল্প ব্যয়ে গোসল, ব্রেস্টফিডিং ও লন্ড্রি সুবিধা সম্বলিত আধুনিক পাবলিক ওয়াশরুম। প্রতি মাসে বিনামূল্যে ডেন্টাল চেকআপ ও স্বল্পমূল্যে দাঁতের চিকিৎসার ব্যবস্থা করবেন।
নিরাপদ যাতায়াতের জন্য নিরাপদ হাঁটাচলা ও সাইকেল ব্যবহারের জন্য কার্যকর ট্রাফিক কাঠামো গড়ে তুলবেন। এছাড়াও রমজানে বিনামূল্যে ইফতার এবং পুষ্টিচাহিদা পূরণে বিশেষ উদ্যোগ নেবেন মেঘনা।
মেঘনা আলম জানিয়েছেন, তিনি নির্বাচিত হলে প্রতি মাসে লিগ্যাল অ্যাসেসমেন্ট ওয়ার্কশপ করবেন যাতে মানুষ আইনি অধিকার সম্পর্কে সচেতন হয়। যুবসমাজের নেতৃত্ব বিকাশে থাকবে রাজনৈতিক শিক্ষা কার্যক্রম। এছাড়া প্রতি তিন মাস অন্তর তিনি সরাসরি জনগণের মুখোমুখি হয়ে ‘টাউন হল মিটিং’ করবেন এবং প্রতিটি সেবাকেন্দ্রে একটি করে কমপ্লেইন্ট বক্স বা অভিযোগ বাক্স রাখা হবে।
গণ অধিকার পরিষদের এই প্রার্থী বিশ্বাস করেন, সমাজে অপরাধ ও অবক্ষয় দূর করতে মানুষের পুষ্টি, পরিচ্ছন্নতা এবং আইনগত জ্ঞান বৃদ্ধি করা সবচেয়ে জরুরি। কেবল মুখের বুলি নয়, আধুনিক চিন্তা ও আন্তর্জাতিক মানের নেতৃত্ব দিয়ে ঢাকা-৮ আসনকে রূপান্তর করতে চান তিনি।
বিষয়টি নিয়ে গণ অধিকার পরিষদের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তবে তাৎক্ষণিকভাবে তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এমডিএএ/এলআইএ