দেশজুড়ে

দিনাজপুরে বর্ণিল সাজে খ্রিষ্টান পল্লীগুলো

বড়দিনকে সামনে রেখে বর্ণিল সাজে সেজেছে দিনাজপুরের খ্রিষ্টান পল্লীগুলো। জাঁকজমকভাবে বড়দিন উদযাপন করতে জেলার ১৩টি উপজেলায় ৭৯০ গির্জায় ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) ফুলবাড়ী উপজেলার আলাদীপুর ইউনিয়নের সূর্যপাড়া ও পারুইল, সিরামপুর ও এলুয়াড়ীর শ্রীরামপুর গনিপুর সাঁওতাল পল্লি ঘুরে দেখা যায়, রং তুলির আচরে নারীরা তাদের বাড়িগুলো সাজাচ্ছেন। অনেকে নতুন কাপড় কেনাকাটায় ব্যস্ত। ব্যস্ত ও উৎসবমুখর সময় পার করছেন সবাই। এই চিত্র এখন দিনাজপুরের ১৩টি উপজেলা জুড়ে।

উপজেলার আলাদীপুর ইউনিয়নের বাসুদেবপুর সূর্যপাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায় দল বেঁধে নারীরা সাজাচ্ছেন বাড়িঘর-উঠান। মাটির ঘরে কয়লা দিয়ে তৈরি কালো রঙ, বাজার থেকে কিনে আনা নীল রঙ, চুন এবং বিভিন্ন রঙ দিয়ে মাটির দেয়ালে অসাধারণ কারুকার্যময় বিভিন্ন আলপনা ও ফুল আঁকছেন তারা।

আলপনা আঁকতে আঁকতে লুচিয়া কিসকু বলছিলেন, ‘সরই হেতু ওড়া সাজাও। সিকাতে রংইং ক্রিংয়া পাইসা বানু তিয়া।’ (বড়দিন উপলক্ষে বাড়ি সাজাচ্ছি। চুন দিয়ে এভাবে রঙ বা আলপনা আঁকছি। টাকা নেই কী আর করা)। একই কথা বলেন ইতি কিনা মার্ডি।

বড়দিনকে সামনে রেখে কাজিহাল ইউনিয়নের পারইল কোদবীর মিশনপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আলবিনা বাস্কে চুন দিয়ে আলপনা আঁকছেন।

তিনি বলেন, ‘আনে রেংগেই হড় বানু তালে টাকা পাইসা আনাতে যাহা লেকাতে পরবও কানা লে (আমরা গরিব মানুষ টাকাপয়সা কম থাকলেও উৎসব পালন করি)।

সাঁওতাল নেতা কমল কিসকু বলেন, ২৫ ডিসেম্বর বড়দিন ফুলবাড়ী উপলক্ষে জাঁকজমকভাবে বড়দিন উদযাপনে নেওয়া হয়েছে ব্যাপক প্রস্তুতি। উপজেলার ব্যাপ্টিস্ট, ক্যাথলিক, লাথারন, এফসিসি ও চার্চ অব গর্ডের ৬৩টি চার্চে প্রার্থনা করা হবে।

উপজেলার কাজিহাল ইউনিয়নের পারইল কোদবীর ক্যাথলিক চার্চের ফাদার রবেন হাসদা বলেন, খ্রিষ্টধর্মের প্রবর্তক যিশুখ্রিষ্ট ২৫ ডিসেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। সৃষ্টিকর্তার মহিমা প্রচার এবং মানবজাতিকে সত্য ও ন্যায়ের পথে পরিচালনার জন্য যিশুখ্রিষ্ট জন্ম নিয়েছিলেন। দিবসটি উপলক্ষে গির্জায় নানা আয়োজন করা হয়েছে। ২৪ ডিসেম্বর রাত থেকে প্রার্থনা শুরু হবে। ২৫ ডিসেম্বর সারাদিন বিশেষ প্রার্থনাসহ নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে দিবসটি উদযাপন শেষ হবে। এই দিনে মানুষের শান্তি, কল্যাণ ও সমৃদ্ধি কামনা করে প্রার্থনা করে যিশুকে স্মরণ করা হয়।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আনিসুর রহমান জানান দিনাজপুর জেলার ১৩টি উপজেলায় ৭৯০টি গির্জা রয়েছে। প্রতিটি গির্জায় সরকারের পক্ষ থেকে ৫০০ কেজি করে চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। জেলায় ৭৯০টি গির্জায় মোট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ৩৯৫ টন চাল।

এমদাদুল হক মিলন/এনএইচআর/জেআইএম