আন্তর্জাতিক

২০২৬ সালে প্রতিরক্ষা শিল্পে ব্যবসা হবে রমরমা

২০২৬ সালে বিশ্বজুড়ে প্রতিরক্ষা শিল্পে রমরমা ব্যবসা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। নতুন বছরে বৈশ্বিক প্রতিরক্ষা ব্যয় প্রথমবারের মতো প্রায় ২ দশমিক ৯ ট্রিলিয়ন (২ লাখ ৯০ হাজার কোটি) ডলারে পৌঁছাতে পারে। রাশিয়া ও চীনের সামরিক হুমকি, পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চাপের মুখে ন্যাটোভুক্ত দেশগুলো ২০৩৫ সালের মধ্যে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৫ শতাংশ প্রতিরক্ষায় ব্যয়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে।

এই উদ্যোগে নেতৃত্ব দেবে জার্মানি। দেশটি ঋণ গ্রহণ এবং প্রায় ১০০ বিলিয়ন ইউরো মূল্যের একটি বিশেষ প্রতিরক্ষা তহবিলের মাধ্যমে সামরিক ব্যয় বাড়াচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রেও প্রতিরক্ষা বাজেট এক ট্রিলিয়ন (এক লাখ কোটি) ডলার ছাড়াবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। ওয়াশিংটন একটি ‘গোল্ডেন ডোম’ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গঠনের বিষয়টি বিবেচনা করছে।

পূর্ব ইউরোপের দেশগুলো যৌথ ক্রয় ব্যবস্থার মাধ্যমে অস্ত্রভাণ্ডার নতুন করে পূরণে মনোযোগ দেবে। পোল্যান্ড ২০৩৫ সালের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার নয় বছর আগেই জিডিপির ৫ শতাংশ প্রতিরক্ষায় ব্যয়ের পথে এগোতে পারে।

আরও পড়ুন>>রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ আর কতদিন চলবে?বিশ্বজুড়ে আবারও শুরু হতে পারে পারমাণবিক অস্ত্রের প্রতিযোগিতা২০২৫ সালে কতটা মিললো পূর্বাভাস

অন্যদিকে, মূল্যস্ফীতির চাপে রাশিয়া প্রতিরক্ষা ব্যয় কমানোর চেষ্টা করতে পারে। তবে চীন বার্ষিক সামরিক ব্যয় বাড়াবে। বেইজিং হাইপারসনিক অস্ত্র ও মহাকাশভিত্তিক প্ল্যাটফর্মের পরীক্ষা চালানোর পাশাপাশি কমান্ড ও কন্ট্রোল ব্যবস্থায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যুক্ত করার দিকে জোর দেবে।

জাপানও সামরিক ব্যয় জিডিপির প্রায় দুই শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্যে হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ও রোবটিক প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ বাড়াবে এবং অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে যৌথভাবে যুদ্ধজাহাজ নির্মাণে অংশীদারত্ব গড়বে। দক্ষিণ কোরিয়া প্রতিরক্ষা রপ্তানি সম্প্রসারণে এগোবে, আর উত্তর কোরিয়া নৌবাহিনী শক্তিশালী করার উদ্যোগ নেবে।

মধ্যপ্রাচ্যে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত যৌথ উদ্যোগের মাধ্যমে প্রতিরক্ষা উৎপাদন বাড়াবে। এসব কারণে বড় প্রতিরক্ষা কোম্পানিগুলোর অর্ডার বুক হবে ভরপুর। একই সঙ্গে তুলনামূলক ছোট কিন্তু প্রযুক্তিনির্ভর দ্রুতগামী প্রতিষ্ঠানগুলোও নতুন সুযোগ কাজে লাগিয়ে বাজার সম্প্রসারণের সুযোগ পাবে।

বিশ্লেষকদের মতে, ২০২৬ সালে প্রতিরক্ষা খাতে ব্যবসায়িক বিস্ফোরণের আরেকটি বড় কারণ হতে পারে পারমাণবিক অস্ত্র প্রতিযোগিতা। নিউ স্টার্ট চুক্তির মেয়াদ শেষ হলে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে নতুন করে পারমাণবিক অস্ত্র প্রতিযোগিতা শুরু হতে পারে। মহাকাশে পারমাণবিক অস্ত্রসহ নতুন ধরনের বিধ্বংসী প্রযুক্তি এবং পারমাণবিক শক্তি হিসেবে চীনের উচ্চাকাঙ্ক্ষা বৈশ্বিক নিরাপত্তার জন্য যেমন হুমকি তৈরি করবে, তেমনি অস্ত্র নির্মাতাদের জন্য নতুন ব্যবসায়িক সুযোগও সৃষ্টি করবে।

সূত্র: দ্য ইকোনমিস্টকেএএ/