তথ্যপ্রযুক্তি

ম্যাকবুক কেনার সময় যে কারণে অফিসিয়াল রিটেইলার বেছে নেবেন

বাংলাদেশের প্রযুক্তি বাজারে অ্যাপল পণ্যের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। বিশেষ করে ম্যাকবুক এখন কেবল প্রযুক্তিপ্রেমীদের নয়, পেশাজীবী, উদ্যোক্তা ও শিক্ষার্থীদের কাছেও আস্থার প্রতীক। তবে বাড়তি এই চাহিদার সুযোগ নিয়ে বাজারে সক্রিয় হয়েছে এক শ্রেণির অসাধু বিক্রেতা, যারা রিফারবিশড, ব্যবহৃত কিংবা ক্লোন ডিভাইসকে ‘ব্র্যান্ড নিউ’ হিসেবে বিক্রি করার চেষ্টা করছে। এতে প্রতারণার ঝুঁকিতে পড়ছেন সাধারণ ক্রেতারা।

একটি ম্যাকবুক যেহেতু সাধারণ ল্যাপটপের চেয়ে বড় অংকের বিনিয়োগ, তাই এটি কোথা থেকে কেনা হচ্ছে-সেই সিদ্ধান্তটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দীর্ঘমেয়াদি পারফরম্যান্স, আর্থিক নিরাপত্তা এবং মানসিক নিশ্চয়তা পেতে ম্যাকবুক কেনার ক্ষেত্রে অফিসিয়াল রিটেইলার বেছে নেওয়ার বিকল্প নেই।

শতভাগ অরিজিনাল ও সিল-ইনট্যাক্ট ডিভাইসের নিশ্চয়তা

অফিসিয়াল রিটেইলাররা সরাসরি অ্যাপলের অথরাইজড সাপ্লাই চেইন থেকে পণ্য সংগ্রহ করে। ফলে এখানে রিফারবিশড বা পার্টস পরিবর্তনের কোনো সুযোগ থাকে না। স্টার টেক-এর মতো বিশ্বস্ত প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতিটি ম্যাকবুক সম্পূর্ণ ‘সিল-ইনট্যাক্ট’ অবস্থায় গ্রাহকের হাতে তুলে দেয়। ক্রেতারা নিজেরাই বক্স আনবক্স করার সুযোগ পান, যা পণ্যের নতুনত্বের সবচেয়ে বড় প্রমাণ। অন্যদিকে গ্রে-মার্কেটের অনেক দোকানে আগেই খোলা বক্স, অ্যাক্টিভেটেড ডিভাইস কিংবা অজানা উৎসের পণ্য বিক্রির অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এতে ডিভাইসের আয়ু ও পারফরম্যান্স নিয়ে অনিশ্চয়তা থেকেই যায়।

১ বছরের অফিসিয়াল ইন্টারন্যাশনাল ওয়ারেন্টি

গ্রে-মার্কেট বিক্রেতারা অনেক সময় ‘শপ ওয়ারেন্টি’ দেওয়ার কথা বললেও এর কোনো আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি থাকে না। বিপরীতে অফিসিয়াল রিটেইলার থেকে কেনা ম্যাকবুকে সরাসরি অ্যাপলের ১ বছরের ইন্টারন্যাশনাল ওয়ারেন্টি প্রযোজ্য হয়, যা বিশ্বের যে কোনো অ্যাপল অথরাইজড সার্ভিস সেন্টারে কার্যকর। এই ওয়ারেন্টি অ্যাপলের গ্লোবাল সার্ভারে নিবন্ধিত থাকে। ফলে ম্যানুফ্যাকচারিং ত্রুটি বা হার্ডওয়্যার সমস্যায় গ্রাহক বিনা খরচে পেশাদার সেবা পাওয়ার নিশ্চয়তা পান-যা বড় অংকের বিনিয়োগে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। 

তাৎক্ষণিক ভেরিফিকেশন ও স্বচ্ছ কেনাকাটা

অফিসিয়াল রিটেইলারে ম্যাকবুক কেনার সময় ক্রেতারা সঙ্গে সঙ্গে সিরিয়াল নম্বর ব্যবহার করে অ্যাপলের ওয়েবসাইটে ডিভাইসটির ওয়ারেন্টি ও স্ট্যাটাস যাচাই করতে পারেন। ‘ভ্যালিড পারসেজ ডেট’ এবং পূর্ণ এক বছরের ওয়ারেন্টি দেখা গেলেই নিশ্চিত হওয়া যায়, ডিভাইসটি একেবারেই নতুন এবং আগে কখনো ব্যবহার হয়নি। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই স্বচ্ছতা গ্রে-মার্কেট কেনাকাটায় প্রায় অনুপস্থিত, যেখানে অনেক সময় ক্রেতারা বুঝতেই পারেন না ডিভাইসটি আগেই চালু করা হয়েছে কি না।

আইনি বৈধতা ও ভ্যাট ইনভয়েসের গুরুত্ব

অফিসিয়াল রিটেইলার থেকে কেনা ম্যাকবুকের সঙ্গে পাওয়া যায় বৈধ ভ্যাট ইনভয়েস, যা পণ্যের আইনগত মালিকানার অন্যতম প্রমাণ। এটি ভবিষ্যতে রিসেল, ব্যবসায়িক হিসাব কিংবা বিদেশ ভ্রমণের সময় ডিভাইস বহনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এছাড়া বৈধভাবে আমদানিকৃত পণ্যে কোনো ধরনের আইনি জটিলতা বা নেটওয়ার্ক সংক্রান্ত সমস্যার ঝুঁকিও থাকে না, যা পেশাদার ব্যবহারকারীদের জন্য বাড়তি স্বস্তির বিষয়। 

বিক্রয়োত্তর সেবায় পেশাদার মান

ম্যাকবুকের মতো প্রিমিয়াম ডিভাইসের সার্ভিসিংয়ে প্রয়োজন বিশেষায়িত যন্ত্রপাতি ও প্রশিক্ষিত টেকনিশিয়ান। অফিসিয়াল রিটেইলাররা অ্যাপলের নির্ধারিত গাইডলাইন অনুযায়ী জেনুইন পার্টস ব্যবহার করে সার্ভিস প্রদান করে, যা ডিভাইসের দীর্ঘস্থায়িত্ব নিশ্চিত করে। ভুল মেরামত বা নিম্নমানের যন্ত্রাংশ ব্যবহারের কারণে স্থায়ী ক্ষতির ঝুঁকি এখানে অনেকটাই কমে যায়।

ঝুঁকির চেয়ে নিশ্চয়তাই বড়

বিশেষজ্ঞদের মতে, সামান্য কিছু টাকা বাঁচানোর আশায় গ্রে-মার্কেট থেকে ম্যাকবুক কেনা শেষ পর্যন্ত বড় আর্থিক ও মানসিক ক্ষতির কারণ হতে পারে। শতভাগ অরিজিনাল পণ্য, বৈশ্বিক ওয়ারেন্টি এবং নির্ভরযোগ্য বিক্রয়োত্তর সেবা-এই তিনটি বিষয়ের নিশ্চয়তা পেতে অফিসিয়াল রিটেইলারই হওয়া উচিত ক্রেতার প্রথম পছন্দ।

আরও পড়ুন

আইফোনে শক্তিশালী পাসকোড তৈরি করবেন যেভাবে

আইফোনের ব্যাটারির আয়ু বাড়ানোর উপায়

কেএসকে