অনেকের শখ বাড়িতে প্রাণী পোষা। ধীরে-ধীরে তারা পরিবারেরই অংশ হয়ে ওঠে। এসব পোষা প্রাণীর আবার নামও থাকে, যেগুলো ধরে ডাকলে নানা অঙ্গভঙ্গিতে উত্তর দেয়। তাদের যত্ন নেওয়া হয়- সময় মতো খাওয়ানো, নির্দিষ্ট জায়গায় ঘুমানো, এমনকি শীত লাগলে কম্বলের নিচে ঢুকে পড়ে।
শীতকালে শহরের রাস্তায়, পার্কে বা ছাদে অনেক পোষ্যকে রঙিন সোয়েটার বা জ্যাকেট পরে ঘুরতে দেখা যায়। কিন্তু প্রশ্ন একটাই-শীতে পোষ্যদের জামা পরানো কি সত্যিই প্রয়োজন?
শীত প্রতিরোধ ক্ষমতাশীতকালে তাপমাত্রা কমলে পোষ্যরাও ঠান্ডা অনুভব করে, তবে সব প্রাণীর জন্য বিষয়টি এক নয়। লোম ঘন ও লম্বা কুকুর যেমন হাসকি, জার্মান শেফার্ড বা গোল্ডেন রিট্রিভার প্রাকৃতিকভাবে ঠান্ডা সহ্য করতে পারে। ছোট জাতের কুকুর বা কম লোমওয়ালা বিড়াল সহজে ঠান্ডা অনুভব করে। বয়স্ক বা অসুস্থ পোষ্যদের শরীরের তাপ ধরে রাখার ক্ষমতা কমে যায়। এই ধরনের পোষ্যদের ক্ষেত্রে শীতে হালকা জামা পরানো উপকারী হতে পারে।
জামা নির্বাচন করাঅনেক সময় দেখা যায়, সুন্দর দেখাবে বলে পোষ্যদের ভারী পোশাক পরানো হয়, যা তাদের চলাফেরা এবং স্বাভাবিক আচরণে বাধা দেয়। অতিরিক্ত মোটা বা আঁটসাঁট জামা শরীরে অস্বস্তি তৈরি করতে পারে, এমনকি ঘাম জমে ত্বকের সমস্যা হতে পারে। তাই জামা পরানোর সময় এটি যেন আরামদায়ক, নরম কাপড়ের এবং সঠিক মাপের হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
কোনো প্রাণীকে জোর করে পোশাক পরানো উচিত নয়, কারণ এতে তার জন্য অস্বস্তি তৈরি হয়। প্রয়োজনে ঢিলা পোশাক ব্যবহার করুন এবং বোতামগুলো খুলে রাখুন।
পোষা প্রাণীর যত্নশীতকালে প্রাণীর যত্ন মানে শুধু জামা পরানো নয়। ঠান্ডা মেঝেতে ঘুমানোর না দিয়ে নরম বিছানার ব্যবস্থা করা, রাতে হালকা কম্বল দেওয়া এবং গরম জায়গায় থাকার সুযোগ তৈরি করাও সমান গুরুত্বপূর্ণ।
শরীরের তাপমাত্রা ঠিক রাখতে পোষ্যের বাড়তি এনার্জি প্রয়োজন হয়। তাই তাদের খাবারে প্রোটিন ও ফ্যাটের পরিমাণ সামান্য বৃদ্ধি করুন। মুরগির মাংস, মিষ্টি আলু, সবুজ শাক এবং ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড যুক্ত খাবার পুষ্টিকর এবং শরীরকে উষ্ণ রাখে। শীতকালে খাবার হালকা গরম করে দেওয়াও উপকারী।
পানির বাটি নিয়মিত পরিষ্কার রাখুন। শীতে কুকুর ও বিড়াল মানুষের মতো কম পানি পান করে, তাই তাদের ঘন ঘন পানি পান করাতে হবে।
আচরণ পর্যবেক্ষণ করা শীতকালে পোষ্য যদি কাঁপে বা বাইরে যেতে না চায়, তবে হালকা জামা পরানো যুক্তিযুক্ত হতে পারে। তবে যদি পোষ্য স্বাভাবিকভাবে চনমনে থাকে, তাহলে জোর করে পোশাক পরানোর প্রয়োজন নেই।
শীতে পোষ্যরাও অলস হয়ে পড়ে। তাই রোদ দেখে নিয়মিত হাঁটাতে বের করুন। রাস্তা ভেজা থাকলে ফিরে এসে পা মুছিয়ে পেট্রোলিয়াম জেলি মাখিয়ে দিন।
সতর্কতাকাশি, শ্বাসকষ্ট, চোখ দিয়ে পানি পড়া বা ত্বকের রুক্ষতা দেখা দিলে দেরি না করে পোষ্যকে পশুচিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে।
সূত্র: হেডস আপ ফর টেইলস, ফোর পাওস ইন্টারন্যাশনাল
আরও পড়ুন: ঘর ভরে যাচ্ছে রাস্তার ধুলায়, পরিষ্কার রাখবেন যেভাবে খেজুরের রসে নিপাহ ভাইরাসের ঝুঁকি, সতর্কতা জরুরি
এসএকেওয়াই/