ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসুর) সমাজসেবা সম্পাদক এ বি জোবায়ের বলেছেন, দেশনেতারে কেউ একটু বোঝায়েন, জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করে জনসমর্থন পাওয়া যায় না।
শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) বিকেলে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে পরপর দুটি পোস্টে এমন মন্তব্য করেন জোবায়ের।
বিকেল ৫টা ৩৯ মিনিটে দেওয়া ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘ঢাবিতে অ্যাডমিশন টেস্ট দেওয়ার সুযোগ লাইফে একবারই আসে। কিন্তু দেশনেতার (!) আগমন উপলক্ষে দীর্ঘসময় রাস্তা বন্ধ রাখায় সৃষ্টি হওয়া জ্যামের কারণে অনেক পরীক্ষার্থী আজ নির্ধারিত সময়ে পরীক্ষায় বসতে পারেনি। অনেকে ত্রিশ, চল্লিশ মিনিটও দেরি করে এসেছে। দেড় ঘণ্টার পরীক্ষার আধাঘণ্টাই যদি নষ্ট হয়ে যায় তাহলে আর বাকি থাকে কি! কতজনের যে স্বপ্নভঙ্গ হলো আজ! তাদের চোখের পানি যেন আপনাদের জন্য অভিশাপ হয়ে না দাঁড়ায় দোয়া করি।
এইটা নিয়ে কথা বলতে গেলেও আবার বিএনপির বটবাহিনী তেড়ে আসে! ‘আমাদের নেতা বারোটার মধ্যেই বের হয়ে গেছে। বরং জ্যামের জন্য দায়ী ইনকিলাব মঞ্চ। তারা শাহবাগ আটকে প্রোগ্রাম করছে।’
আরে ভাই, আপনাদের নেতা তো আসার বহু সময় আগ থেকেই পুরো রাস্তা আটকে রেখেছে পুলিশ। তার ওপরে বিশাল বহর, প্রটোকল নিয়ে নেতাকর্মীদের ধাক্কাধাক্কি করতে করতে রাস্তা দখল করে আসায় পুরো চাপটাই তো এখানে পড়েছে। দীর্ঘ সময় ধরে রাস্তাটা বন্ধ। এই রোড দিয়ে ঢামেকের গাড়ি, নিউমার্কেটমুখী গাড়ি, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, সচিবালয়ের গাড়ি, বুয়েট, ঢাকা কলেজ সহ কত প্রতিষ্ঠানের গাড়ি চলাচল করে দৈনিক। তো রাস্তা বন্ধ থাকায় যেই গাড়িগুলো সিরিয়াল ধরে দাঁড়ায় ছিল পেছনে সেগুলো বের হতে সময় লাগে না? আপনাদের নেতা বেরিয়ে যাওয়ার পরেও জ্যাম ছিল দীর্ঘসময়। তারপর নেতা তো সেখান থেকে বেরিয়ে আবার আগারগাঁও গেলো প্রটোকল নিয়ে। চাপ পড়ে না এতে?
আর ইনকিলাব মঞ্চের শাহবাগ ব্লকেডেরও একটা প্রভাব জ্যামের পেছনে আছে অবশ্যই। অস্বীকার করি না। বাট তারা কিন্তু একটা সাইড উন্মুক্ত রেখেছে চলাচলের জন্য। তাই একতরফাভাবে ইনকিলাব মঞ্চের ওপর দোষ চাপিয়ে দিয়ে জন-দুর্ভোগের দায় এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নাই।
তাছাড়া এইটা তো একটা ঘটনা মাত্র। গত দিনেও নেতা স্মৃতিসৌধে গিয়েছে তার প্রটোকল রক্ষা করতে গিয়ে কত মানুষের ভোগান্তি হইলো! এয়ারপোর্ট এলাকায় নেতার প্রটোকল দিতে গিয়ে বাকি রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের যে গাড়ি না পেয়ে হেঁটে হেঁটে ফিরতে হয়েছে তা কি মিথ্যা? এগুলো একটু চিন্তাভাবনা কইরেন আপনারা। সবকিছু উড়িয়ে দিয়েন না। জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করে জনসমর্থন পাওয়া যায় না ভাই।’
বিকেল ৫টা ৫৭ মিনিটে দেওয়া ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘দেশনেতারে কেউ একটু বুঝায়েন, জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করে জনসমর্থন পাওয়া যায় না।’
এমএএইচ/এমএস