শিক্ষা

স্কুলে পৌঁছেছে প্রাথমিকের সাড়ে ৮ কোটি বই, অপেক্ষায় শিক্ষার্থীরা

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য এবার আগেভাগে পাঠ্যবই ছাপার কাজ শেষ করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। ছাপানো নতুন বইগুলো দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের বিদ্যালয়গুলোতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। গত সপ্তাহে প্রাথমিকের বই পাঠানোর সব কাজ শেষ। আগামী ১ জানুয়ারি শিক্ষাবর্ষ শুরুর প্রথমদিনে কোমলমতি শিশুশিক্ষার্থীরা নতুন বই হাতে বাড়ি ফিরতে পারবে।

পাঠ্যপুস্তক বোর্ড, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, কয়েকটি জেলা ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ও এনসিটিবি সূত্র জানায়, এবার ৩০ নভেম্বরের মধ্যে বই ছাপা শেষে উপজেলা পৌঁছানোর কথা ছিল। তবে তাতে কিছুটা দেরি হলেও সমস্যা হয়নি। গত ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যেই সব উপজেলায় শতভাগ বই পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস স্ব স্ব উপজেলার বিদ্যালয়গুলোর প্রধান শিক্ষকদের কাছে চাহিদা অনুযায়ী বই বুঝিয়ে দিয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য কত কপি বই লাগবে, সেই চাহিদা এনসিটিবিকে দেয় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এরপর চাহিদা অনুযায়ী বই ছাপা ও বিতরণের কাজ দেখভাল করে এনসিটিবির উৎপাদন শাখা।

উৎপাদন শাখার তথ্যমতে, ২০২৬ শিক্ষাবর্ষের জন্য প্রাক-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত এবার মোট বইয়ের সংখ্যা ৮ কোটি ৫৯ লাখ ২৫ হাজার ৩৭৯ কপি। শতভাগ বই ছাপা, বাঁধাই, কাটিংয়ের কাজ শেষে বিতরণে জন্য উপজেলায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

এনসিটিবির উৎপাদন নিয়ন্ত্রক আবু নাসের টুকু জাগো নিউজকে বলেন, ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই প্রাথমিকের শতভাগ বই প্রস্তুত করা হয়েছে। সব বই উপজেলায় পাঠিয়ে দিয়েছি। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে বিভিন্ন বিদ্যালয়ে বই পাঠানোর কাজ শেষ। শিক্ষার্থীরা বছরের প্রথম দিনে নতুন পাঠ্যবই হাতে নিয়ে ক্লাস করতে পারবে।

কুড়িগ্রামের কুড়িগ্রামের সহকারী জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সৈয়দ ফিরোজ ইফতেখার জাগো নিউজকে বলেন, এবার আমরা বেশ আগেই বই পেয়েছি। জেলা অফিসের তত্ত্বাবধানে সবগুলো উপজেলা অফিসে পাঠানো হয়েছে। এরপর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে সব বিদ্যালয়ে চাহিদামতো বই সরবরাহ করা হয়েছে।

কতদিন আগে থেকে বই সরবরাহ শুরু এবং কবে শেষ হয়েছে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমরা নভেম্বর থেকেই বই পেতে শুরু করি। আর উপজেলা অফিস হয়ে বিদ্যালয়গুলোতে বিতরণের কাজ শেষ হয়েছে গত সপ্তাহে। বলা চলে দুই সপ্তাহ আগেই প্রায় সব পাঠ্যবই স্কুলে স্কুলে পৌঁছে দেওয়ার কাজ শেষ হয়েছে। আগামী ১ জানুয়ারি প্রাথমিকের সব শিক্ষার্থী সব বই হাতে পাবে।

জানতে চাইলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) আবু নূর মো. শামসুজ্জামান জাগো নিউজকে বলেন, এবার পাঠ্যবই নিয়ে আমাদের (প্রাথমিক) কোনো সংকট নেই। পাঠ্যবই যথাসময়ে পাওয়া গেছে। বই স্কুলেও চলে গেছে। ১ জানুয়ারি থেকে শিক্ষাবর্ষ শুরু হবে। সেদিনই বই বিতরণ হবে। প্রাথমিকের প্রায় এক কোটি কোমলমতি শিক্ষার্থী নতুন বই ঘ্রাণ পাবে। তারা নতুন বই হাতে ক্লাসে আসতেও আগ্রহী হবে বলে আশা করছি।

এএএইচ/ইএ/এমএস