উৎসবমুখর পরিবেশে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টাঙ্গাইল জেলার আটটি সংসদীয় আসনে ৬৫ প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) বিকেল পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসে এ মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া হয়। ৮৬ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন।
মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সকালে জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম এ তথ্য সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন।
জেলা নির্বাচন অফিস সূত্র জানায়, জেলার ৮টি আসনের ৮৬ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করলেও ৬৫ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেয়। জেলায় মোট ভোটার ৩৩ লাখ ৩৪ হাজার ৪২৭ জন। জেলায় ৮টি আসনে এবার ১ হাজার ৬৩টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
টাঙ্গাইল-১ (মধুপুর ও ধনবাড়ী) এ আসন থেকে মাট ৯ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন। তবে ৭ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেয়। বিএনপি’র মনোনীত প্রার্থী ফকির মাহবুব আনাম বিএনপির স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ আলী মনোনয়নপত্র জমা দেন। এছাড়া জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে মুহাম্মদ ইলিয়াছ হোসেন, জামায়াতের প্রার্থী মুহাম্মদ আব্দুল্লাহেল কাফী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী হারুন অর রশীদ মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মোন্তাজ আলী, এবং আসাদুল ইসলাম মনোনয়নপত্র জমা দেয়।
টাঙ্গাইল-২ (গোপালপুর ও ভূঞাপুর)এ আসন থেকে মোট ৭ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন। তবে ৫ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেয়। বিএনপির মনোনীত প্রার্থী হিসেবে আব্দুস সালাম পিন্টু মনোনয়নপত্র জমা দেয়। জামায়াতের প্রার্থী হিসেবে হুমায়ুন কবির, গণ অধিকার পরিষদের প্রার্থী শাকিল উজ্জামান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মনোয়ার হোসেন সাগর এবং জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে হুমায়ুন কবির তালুকদার মনোনয়নপত্র জমা দেয়।
টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল)এ আসন থেকে মাট ৮ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করলেও ৭ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেয়। বিএনপির প্রার্থী হিসেবে এস এম ওবায়দুল হক এবং বিএনপির বিদ্রোহী হিসেবে সাবেক মন্ত্রী লুৎফর রহমান খান আজাদ মনোনয়নপত্র জমা দেয়। এছাড়া এনসিপির প্রার্থী সাইফুল্লাহ হায়দার, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী রেজাউল করিম, জামায়াতে প্রার্থী হোসেনী মোবারক মনোনয়নপত্র জমা দেয়। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে শাহজাহান মিয়া ও আইনিন নাহার মনোনয়নপত্র জমা দেয়।
টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী)এ আসন থেকে মাট ১০ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন। তবে ৭ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেয়। বিএনপির প্রার্থী হিসেবে লুৎফর রহমান মনোনয়নপত্র জমা দেন। এছাড়া জাতীয় পার্টির প্রার্থী লিয়াকত আলী, জামায়াতে প্রার্থী খন্দকার আব্দুর রাজ্জাক, ইসলাম আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী আলী আমজাদ হোসেন মনোনয়নপত্র জমা দেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিক, আব্দুল হালিম মিঞা এবং মো. শাহ আলম তালুকদার মনোনয়নপত্র জমা দেন৷
টাঙ্গাইল-৫ (সদর)এ আসন থেকে ১৪ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন। তবে ১১ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেন। বিএনপির প্রার্থী হিসেবে কেন্দ্রীয় বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু এবং বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবাল মনোনয়নপত্র জমা দেয়।
এছাড়া জামায়াতের প্রার্থী হিসেবে আহসান হাবীব, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) প্রার্থী সৈয়দ খালেক মোস্তফা, খেলাফত মজলিসের হাসনাত আল আমীন, জাতীয় পার্টির মোজাম্মেল হক, গণ অধিকার পরিষদের শফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ সুপ্রীম পার্টি (বিএসপি) এর হাসরত খান ভাসানী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের খন্দকার জাকির হোসেন, গণসংহতি আন্দোলন (জিএসএ) প্রার্থী ফাতেমা আক্তার মনোনয়নপত্র জমা দেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ছানোয়ার হোসেন মনোনয়নপত্র জমা দেয়।
টাঙ্গাইল-৬ (নাগরপুর-দেলদুয়ার)এ আসন থেকে ১৮ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন। তবে ১২ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেয়।
মনোনয়নপত্র জমাকারীরা হলেন- বিএনপির প্রার্থী রবিউল আওয়াল, জার্তীয় পার্টির আব্দুর রহিম, গণ অধিকার পরিষদের কবির হোসেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আখীনুর মিয়া, জাতীয় পার্টি (জেপি) তারেক শামস খান, জামায়াতে ইসলামীর ডা. এ কে এম আব্দুল হামিদ।
বিএনপির স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জুয়েল সরকার, রিপন মিয়া, শরীফুল ইসলাম এবং আতিকুর রহমান মনোনয়নপত্র জমা দেয়। এছাড়াও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সাইফুর রহমান এবং মুহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম মনোনয়নপত্র জমা দেয়।
টাঙ্গাইল-৭ (মির্জাপুর)এ আসন থেকে ৯ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন। তবে ৬ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দে। বিএনপির প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ ইবনে আবুল হোসেন, বাংলাদেশ রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী তোফাজ্জল হোসেন, খেলাফত মজলিসের প্রার্থী আবু তাহের, ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী এ টি এম রেজাউল করিম আল রাজি এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ফিরোজ হায়দার খান মনোনয়নপত্র জমায়াতের।
টাঙ্গাইল-৮ (বাসাইল- সখীপুর)এ আসন থেকে ১১ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন। তবে ১০ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেন। বিএনপির প্রার্থী আহম্মেদ আযম খান, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর শফিকুল ইসলাম খান, জাতীয় পার্টির নাজমুল হাসান, আমজনতার দলের আলমগীর হোসেন, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কাস পার্টির আওয়াল মাহামুদ, খেলাফত মজলিসের শহিদুল ইসলাম মনোনয়নপত্র জমা দেয়।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে এস এম হাবিবুর রহমান, হাবিবুর রহমান, আবুল ফজল মাহমুদুল হক এবং সালাউদ্দিন আলমগীর মনোনয়নপত্র জমা দেয়।
সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিসার মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, উৎসবমুখর পরিবেশে প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। আমাদের সব কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রার্থীদের প্রতি আহ্বান, সবাই যেন নির্বাচনি আচরণবিধি মেনে চলেন।
তফসিল অনুযায়ী, রিটার্নিং কর্মকর্তা কর্তৃক মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের তারিখ ৩০ ডিসেম্বর থেকে আগামী ৪ জানুয়ারি। মনোনয়নপত্র বাছাইয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল দায়েরের তারিখ ৫ জানুয়ারি থেকে ৯ জানুয়ারি। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ২০ জানুয়ারি আর প্রতীক বরাদ্দ ২১ জানুয়ারি।
আব্দুল্লাহ আল নোমান/এমএন/এমএস