কনকনে শীতের সকালে হাঁটা যে সব সময় উপকারী হবে এমন নয়। বরং এই সময় কিছু মানুষের জন্য তা ঝুঁকির কারণও হয়ে দাঁড়াতে পারে। ঠান্ডা হাওয়া, কুয়াশা আর তাপমাত্রার হঠাৎ ওঠানামায় শ্বাসকষ্ট, সর্দি-কাশি বা রক্তচাপের সমস্যা বাড়তে পারে। তাই শীতে ফিট থাকার জন্য সকালে বাইরে হাঁটার বদলে ভিন্ন পথে ভাবাই বুদ্ধিমানের কাজ।
সকালবেলা হাঁটার উপকারিতা অস্বীকার করার সুযোগ নেই। নিয়মিত হাঁটলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে, হৃদ্যন্ত্র ভালো থাকে, নানা দীর্ঘমেয়াদি রোগের ঝুঁকিও কমে। তবে শীতকালে পরিবেশের কারণে এই অভ্যাস অনেক সময় উল্টো ফল দিতে পারে। তাই চিকিৎসকেরাও পরামর্শ দেন কনকনে ঠান্ডায় খুব ভোরে বাইরে বেরোনো এড়িয়ে চলাই ভালো।
তাই বলে কি শীতে শরীরচর্চা বন্ধ থাকবে? মোটেও না। বরং এই সময় শরীর সক্রিয় রাখা আরও বেশি প্রয়োজন। পার্থক্য শুধু এতটুকু হাঁটাহাঁটির জায়গা বদলে নিন। বাইরে নয়, ঘরের ভেতরেই তৈরি করুন সুস্থ থাকার রুটিন।
ঘরে বসেই করা যায় এমন ব্যায়ামের অভাব নেই। হালকা ফ্রি-হ্যান্ড এক্সারসাইজ, স্কোয়াট, লাঞ্জ, জায়গায় দাঁড়িয়ে হাঁটার মতো মুভমেন্ট দিয়ে শুরু করা যেতে পারে। যোগাসনও শীতের জন্য দারুণ উপযোগী। ভুজঙ্গাসন, ত্রিকোণাসনের মতো আসন শরীর গরম রাখে ও নমনীয়তা বাড়ায়। সঠিক ভঙ্গি জানতে অনলাইনে নির্ভরযোগ্য ভিডিও দেখে নেওয়াই ভালো।
অনেকে ব্যায়াম বলতে শুধু নির্দিষ্ট অনুশীলনকেই বোঝেন। অথচ ঘরের কাজও হতে পারে কার্যকর শরীরচর্চা। ঝাঁট দেওয়া, মোছা, কাপড় ধোয়া বা রান্নাঘরে সক্রিয় থাকা এসব কাজেও শরীর নড়াচড়া করে, ঘাম ঝরে। নিয়মিত করলে ক্যালোরিও খরচ হয় অনেক।
আরও পড়ুন:
আপনি কি চিৎকার করে কাঁদছেন? জানুন সম্ভাব্য সমস্যাগুলো শোকের সময় মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষার উপায় শীতের আরাম মোজা, সম্পর্কে কি প্রভাব ফেলেআর একটা সহজ কিন্তু দারুণ কার্যকর উপায় হল নাচ। আলাদা করে নাচ শেখার দরকার নেই। পছন্দের গান চালিয়ে নিজের মতো করে নড়াচড়া করুন। এতে যেমন শরীরচর্চা হবে, তেমনই মনও ভালো থাকবে। স্ট্রেচিংও সকালে হাঁটার ভালো বিকল্প হতে পারে বিশেষ করে যারা বেশি সময় বসে কাজ করেন।
শরীরচর্চার পাশাপাশি শীতকালে খাওয়াদাওয়ায় সামান্য নিয়ন্ত্রণ জরুরি। ভারী ও তেলঝাল খাবার কমিয়ে, ঘরোয়া ও পুষ্টিকর খাবারে জোর দিন। বাইরে খাবার যত কম খাবেন, শরীর ততই হালকা থাকবে। তবে শুধু ডায়েট মানলেই হবে না, নিয়মিত নড়াচড়া না করলে ফিট থাকা কঠিন।
সব মিলিয়ে বলা যায় শীতের সকালে হাঁটতে না গেলেও সুস্থ থাকার পথ বন্ধ হয়ে যায় না। ঘরে বসেই ব্যায়াম, যোগাসন, নাচ বা সক্রিয় দৈনন্দিন কাজের মাধ্যমে নিজেকে ফিট রাখা সম্ভব। একটু পরিকল্পনা আর নিয়ম মেনে চললেই শীতকালও কাটবে সুস্থ ও চনমনে।
জেএস/