২০২৫ সাল বাংলাদেশের জন্য ছিল অর্থনৈতিকভাবে এক জটিল ও দ্বিধাবিভক্ত বছর। একদিকে বৈশ্বিক মন্দার রেশ, জ্বালানি বাজারের অনিশ্চয়তা ও মুদ্রাস্ফীতির চাপ; অন্যদিকে দেশের ভেতরে দীর্ঘায়িত রাজনৈতিক স্থবিরতা- এই দুইয়ের সম্মিলিত অভিঘাতে বছরজুড়ে অর্থনীতি এগিয়েছে অনেকটা টালমাটাল পথ ধরে। জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়টায় উৎপাদন, বিনিয়োগ, রপ্তানি, কর্মসংস্থান-প্রায় সব খাতে এর প্রতিফলন দেখা গেছে। আমার আজকের এই কলামে ২০২৫ সালের প্রতিটি পর্যায়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা কীভাবে অর্থনীতির গতি ও প্রকৃতিকে প্রভাবিত করেছে, তা বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করব।
আমি শুরুতেই বলেছি, সদ্য বিদায়ী বছরটি বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য ছিল ‘টালমাটাল’। এক কথায় বাস্তবতার এক কঠিন অধ্যায়।
বছরজুড়ে কোথাও ছিল আশার আলো, আবার কোথাও গভীর শঙ্কা। সামগ্রিকভাবে বলা যায়, গেল বছরটি অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতার চেয়ে বেশি ছিল টিকে থাকার লড়াইয়ে। বছরের শুরুতেই অর্থনীতি চাপে পড়ে। ২০২৪ সালের শেষদিকের রাজনৈতিক টানাপড়েন ও সহিংসতার রেশ জানুয়ারিতেও অব্যাহত থাকে।
২০২৬ সালের অর্থনীতি হতে হবে মানুষকেন্দ্রিক ও ন্যায়সংগত। উন্নয়নের সুফল যেন কেবল একটি শ্রেণির মধ্যে সীমাবদ্ধ না থাকে। গ্রাম ও শহরের বৈষম্য কমাতে হবে, সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচিকে আরও কার্যকর করতে হবে। আমরা এমন এক অর্থনীতি চাই, যেখানে প্রবৃদ্ধি মানে কেবল সংখ্যার বৃদ্ধি নয়- মানুষের জীবনে আশার আলো। ২০২৬ সাল হোক ঘুরে দাঁড়ানোর বছর, স্বপ্ন ফেরানোর বছর।
বছরের প্রথম প্রান্তিকে সবচেয়ে বড় আঘাত আসে বিনিয়োগ খাতে। দেশীয় বিনিয়োগকারীরা নতুন প্রকল্পে যেতে দ্বিধাগ্রস্ত হন। ব্যাংকঋণ বিতরণ কমে যায়, বিশেষ করে দীর্ঘমেয়াদি শিল্পঋণে। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের অনেকেই ‘ওয়েট অ্যান্ড সি’ নীতি গ্রহণ করেন। কয়েকটি সম্ভাব্য বিদেশি বিনিয়োগ চুক্তি স্থগিত বা বিলম্বিত হয়। ব্যবসায়ীদের বড় অভিযোগ ছিল- পরিবহন খাত ব্যাহত হওয়ায় কাঁচামাল সময়মতো পৌঁছায়নি, পণ্য সরবরাহে দেরি হওয়ায় চুক্তি রক্ষা কঠিন হয়ে পড়ে, বীমা ও লজিস্টিক ব্যয় বেড়ে যায়। এর প্রভাব পড়ে জিডিপি প্রবৃদ্ধির গতিতে। অর্থনীতিবিদদের মতে, বছরের প্রথম তিন মাসেই সম্ভাব্য প্রবৃদ্ধির অন্তত ০.৫-০.৭ শতাংশ পয়েন্ট হারিয়ে যায়। এছাড়া আমদানি নিয়ন্ত্রণে কড়াকড়ি থাকায় শিল্পের কাঁচামাল আমদানি সংকুচিত হয়, যার প্রভাব পড়ে উৎপাদন ও কর্মসংস্থানে।
মুদ্রাস্ফীতি ছিল ২০২৫ সালের অন্যতম বড় সমস্যা। খাদ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম পুরো বছরই সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে ছিল। মধ্যবিত্ত ও নিম্নআয়ের মানুষের প্রকৃত আয় কমে যায়, ভোগব্যয় সংকুচিত হয়। ফলে অভ্যন্তরীণ বাজারে চাহিদা বাড়েনি, বরং অনেক ক্ষেত্রে কমেছে। সরকারের সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি থাকলেও তা বাস্তব ক্ষেত্রে ছিল অপর্যাপ্ত।
ব্যাংকিং খাত ২০২৫ সালেও ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি পুরোপুরি। খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমার বদলে কিছু ক্ষেত্রে বেড়েছে। রাজনৈতিক প্রভাব, দুর্বল তদারকি ও সুশাসনের অভাব ব্যাংক ব্যবস্থাকে আস্থাহীন করে রেখেছে। সুদের হার বাড়ানো হলেও বিনিয়োগ প্রত্যাশিত হারে বাড়েনি। বরং ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তারা ঋণ নিতে আরও পিছিয়ে পড়েছেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ঋণের সুদ ৯ শতাংশ থেকে ১৪-১৬ শতাংশ হওয়ার কারণে অনেক ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ী উদ্যোক্তারা বিশাল ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন, যার ব্যাপক প্রভাব পড়েছে কর্মসংস্থানে।
তবে রপ্তানি খাতে পুরোপুরি অন্ধকার ছিল না। তৈরি পোশাক খাত ধীরে ধীরে বৈশ্বিক মন্দার ধাক্কা সামলে ওঠার চেষ্টা করেছে। ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে চাহিদা কিছুটা ফিরলেও উচ্চ উৎপাদন ব্যয়, জ্বালানি সংকট এবং শ্রমিক অসন্তোষ রপ্তানির গতি সীমিত রেখেছে। রেমিট্যান্স প্রবাহ বছরজুড়ে ওঠানামা করেছে- সরকারি প্রণোদনা থাকলেও হুন্ডি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি।
বাজেট বাস্তবায়ন ছিল ২০২৫ সালের আরেক দুর্বল দিক। উন্নয়ন বাজেটের বড় অংশই বছরের শেষ প্রান্তিকে এসে খরচ হয়েছে, যা কাঙ্ক্ষিত গুণগত উন্নয়ন আনতে ব্যর্থ। রাজস্ব আদায়ে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি, ফলে ঘাটতি মেটাতে সরকারকে অভ্যন্তরীণ ঋণের ওপর আরও নির্ভর করতে হয়েছে। এতে মুদ্রাস্ফীতির চাপ আরও বেড়েছে। তবে বছরটির শেষ দিকে কিছু ইতিবাচক ইঙ্গিতও দেখা যায়। ব্যবসায় আস্থার সামান্য উন্নতি ঘটে। আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার হয়, সংস্কার নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। ডিজিটাল অর্থনীতি, আইটি সেবা ও ফ্রিল্যান্সিং খাতে তরুণদের অংশগ্রহণ অর্থনীতিতে নতুন সম্ভাবনার ইঙ্গিত দেয়।
সার্বিকভাবে ২০২৫ সাল বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য ছিল সংকটময়, কিন্তু পুরোপুরি হতাশার নয়। এটি ছিল বাস্তবতা বুঝে নেওয়ার, ভুলগুলো চিহ্নিত করার এবং ভবিষ্যৎ সংস্কারের ভিত্তি তৈরির সময়। অর্থনীতি এই বছর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি, তবে একেবারে ভেঙেও পড়েনি। প্রশ্ন হলো- এই অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে ২০২৬ সালে আমরা কি সাহসী সিদ্ধান্ত ও কার্যকর সংস্কারের পথে হাঁটতে পারব? সেখানেই নির্ভর করছে দেশের অর্থনীতির প্রকৃত উত্তরণের গল্প।
তবে এই অর্থনৈতিক সংকটের আলোচনায় রাজনৈতিক অস্থিরতার ভূমিকা উপেক্ষা করার সুযোগ নেই। দ্বিতীয় প্রান্তিকে রাজনৈতিক অস্থিরতা কিছুটা ভিন্ন রূপ নেয়। বড় ধরনের সহিংসতা না হলেও অনিশ্চয়তা কাটেনি ২০২৫-এ। এর সরাসরি প্রভাব পড়ে নতুন বিনিয়োগ শিল্প উৎপাদন ও রপ্তানি খাতে। বাংলাদেশের অর্থনীতির মেরুদণ্ড- তৈরি পোশাক খাত। ২০২৫ সালে তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল থাকার চেষ্টা করলেও রাজনৈতিক পরিবেশ এর উপর সারাক্ষণ চাপ তৈরি করে। বিশেষ করে কয়েকটি শিল্পাঞ্চলে শ্রমিকদের যাতায়াতে সমস্যা হয়, বন্দর ও কাস্টমস কার্যক্রমে মাঝে মাঝে ধীরগতি দেখা যায়, বিদেশি ক্রেতাদের মধ্যে সরবরাহ সময় নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়। ফলাফল হিসেবে কিছু অর্ডার ভিয়েতনাম ও ভারতমুখী হয়। রপ্তানি আয় পুরোপুরি ধসে না পড়লেও প্রবৃদ্ধির হার প্রত্যাশার তুলনায় অনেক কম থাকে।
প্রশ্ন উঠছে- এই অস্থিরতা কি কেবল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, নাকি অর্থনৈতিক দুরবস্থার অন্যতম মূল কারণ? বাস্তবতা হলো, রাজনৈতিক অস্থিরতা সরাসরি ও পরোক্ষভাবে দেশের অর্থনীতিকে গভীরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, বিশেষ করে ২০২৪-এর শেষ ভাগ থেকে পুরো ২০২৫ সালজুড়ে।রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা বিনিয়োগের সবচেয়ে বড় শত্রু। দেশে যখন রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, সহিংসতা, কর্মসূচি, অবরোধ কিংবা ক্ষমতার ভবিষ্যৎ নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়, তখন দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীরা স্বাভাবিকভাবেই পিছিয়ে যায়। ২০২৫ সালে নতুন শিল্প স্থাপন বা বড় বিনিয়োগ উদ্যোগ উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়। উদ্যোক্তারা ঝুঁকি নিতে চাননি বলে নতুন বিনিয়োগ বাড়েনি, ফলে কর্মসংস্থান সৃষ্টি বাধাগ্রস্ত হয়েছে এবং উৎপাদন সক্ষমতা বাড়েনি।
রাজনৈতিক অস্থিরতার আরেকটি বড় প্রভাব পড়ে সরবরাহ ব্যবস্থায়। শঙ্কা ও আতঙ্কিত হওয়ার মতো পরিস্থিতিতে পণ্য পরিবহন ব্যাহত হয়। কাঁচামাল সময়মতো কারখানায় পৌঁছায় না, কৃষিপণ্য বাজারে আসতে দেরি হয়। এর ফল ভোগ করে সাধারণ মানুষ- পণ্যের দাম বাড়ে, মুদ্রাস্ফীতি তীব্র হয়। ২০২৫ সালে খাদ্যপণ্যের দামে যে চাপ ছিল, তার পেছনে রাজনৈতিক অস্থিরতার ভূমিকা স্পষ্ট।
রাষ্ট্রীয় অর্থনীতিতেও রাজনৈতিক অস্থিরতার নেতিবাচক প্রভাব গভীর। অস্থির পরিবেশে রাজস্ব আদায় কমে যায়। ব্যবসা-বাণিজ্য স্থবির থাকায় কর আদায় লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয় না। সরকার তখন ঘাটতি মেটাতে ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে বাধ্য হয়, যা অর্থনীতিতে অতিরিক্ত অর্থপ্রবাহ সৃষ্টি করে এবং মুদ্রাস্ফীতিকে আরও উসকে দেয়। ফলে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যায়।
রাজনৈতিক অস্থিরতা ব্যাংকিং খাতের দুর্বলতাকেও আরও প্রকট করে তোলে। নীতি-নির্ধারকদের অস্থিরতা ও আস্থাহীনতার কারণে কাঙ্ক্ষিত সংস্কার বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। খেলাপি ঋণ আদায়ে কঠোর পদক্ষেপ নিতে রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব দেখা যায়। ফলে আর্থিক খাতে ঝুঁকি বাড়ে এবং সাধারণ আমানতকারীর আস্থা নষ্ট হয়।
তবে সব দায় রাজনৈতিক অস্থিরতার ঘাড়ে চাপানোও বাস্তবসম্মত নয়। বৈশ্বিক মন্দা, জ্বালানি সংকট, ডলার সংকট এবং দীর্ঘদিনের কাঠামোগত দুর্বলতাও অর্থনীতির ওপর বড় চাপ সৃষ্টি করেছে। কিন্তু রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা থাকলে এসব সংকট মোকাবিলা করা তুলনামূলক সহজ হতো। নীতিনির্ধারণে ধারাবাহিকতা ও দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ তৈরি হতো।
সব মিলিয়ে বলা যায়, মূলত রাজনৈতিক অস্থিরতা বাংলাদেশের সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক সংকটের অন্যতম প্রধান অনুঘটক। এটি সংকট তৈরি না করলেও বিদ্যমান সমস্যাগুলোকে বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। অর্থনীতির টেকসই উত্তরণের জন্য কেবল আর্থিক সংস্কার নয়, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও অংশগ্রহণমূলক গণতান্ত্রিক পরিবেশ অপরিহার্য। রাজনীতি স্থিতিশীল না হলে অর্থনীতি কখনোই স্বস্তির নিঃশ্বাস নিতে পারে না- এই সত্য অস্বীকার করার উপায় নেই।
দীর্ঘ অস্থিরতা, সংকট ও অনিশ্চয়তার পর ২০২৬ সালের দিকে তাকিয়ে দেশের মানুষের প্রত্যাশা একটাই- স্বস্তির অর্থনীতি। ২০২৫ সাল আমাদের শিখিয়েছে, কেবল প্রবৃদ্ধির সংখ্যা দিয়ে অর্থনীতির শক্তি মাপা যায় না; দরকার স্থিতিশীলতা, ন্যায়বিচার ও মানুষের জীবনে বাস্তব স্বস্তি। তাই ২০২৬ সালে আমরা এমন একটি অর্থনীতি চাই, যা কাগজে নয়- বাস্তবে মানুষের পাশে দাঁড়াবে।
প্রথমত. ২০২৬ সালের অর্থনীতি হতে হবে স্থিতিশীল ও পূর্বানুমেয়। হঠাৎ নীতিনির্ধারণ, করের বোঝা বাড়ানো কিংবা আমদানি-রপ্তানিতে অপ্রত্যাশিত সিদ্ধান্ত ব্যবসা-বাণিজ্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। বিনিয়োগকারীরা আস্থা চান, ধারাবাহিকতা চান। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার পাশাপাশি অর্থনৈতিক নীতিতে স্বচ্ছতা থাকলেই বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বাড়বে।
দ্বিতীয়ত. আমরা চাই মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রিত একটি অর্থনীতি। নিত্যপণ্যের দাম সাধারণ মানুষের আয় অনুযায়ী সহনীয় না হলে সব উন্নয়ন অর্থহীন হয়ে পড়ে। ২০২৬ সালে খাদ্য নিরাপত্তা জোরদার করতে হবে, কৃষককে ন্যায্য মূল্য দিতে হবে এবং বাজার ব্যবস্থাপনায় কঠোর নজরদারি নিশ্চিত করতে হবে। মধ্যবিত্ত ও নিম্নআয়ের মানুষের জীবনযাত্রায় স্বস্তি ফেরানোই হওয়া উচিত অর্থনৈতিক নীতির মূল লক্ষ্য।
তৃতীয়ত. কর্মসংস্থানমুখী অর্থনীতি গড়ে তোলাই হবে ২০২৬ সালের সবচেয়ে বড় চাহিদা। শিক্ষিত বেকার তরুণদের জন্য শুধু আশ্বাস নয়, বাস্তব সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। শিল্প, কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ, আইটি ও সেবা খাতে বিনিয়োগ বাড়িয়ে টেকসই চাকরি তৈরি করা জরুরি। বিদেশমুখী কর্মসংস্থানের পাশাপাশি দেশেই মর্যাদাপূর্ণ কাজের পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে।
চতুর্থত. আমরা চাই সুশাসনভিত্তিক ব্যাংকিং ও আর্থিক খাত। খেলাপি ঋণ, অর্থপাচার ও রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত ব্যাংক ব্যবস্থা ছাড়া অর্থনীতির ভিত শক্ত হয় না।দফায় দফায় ঋণ সুদ বাড়ালে উদ্যোক্তাদের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন অসম্ভব হয়ে পড়ে। ২০২৬ সালে কঠোর সংস্কার, জবাবদিহি ও দক্ষ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে আর্থিক খাতে আস্থা ফেরাতে হবে।
সবশেষে, ২০২৬ সালের অর্থনীতি হতে হবে মানুষকেন্দ্রিক ও ন্যায়সংগত। উন্নয়নের সুফল যেন কেবল একটি শ্রেণির মধ্যে সীমাবদ্ধ না থাকে। গ্রাম ও শহরের বৈষম্য কমাতে হবে, সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচিকে আরও কার্যকর করতে হবে। আমরা এমন এক অর্থনীতি চাই, যেখানে প্রবৃদ্ধি মানে কেবল সংখ্যার বৃদ্ধি নয়- মানুষের জীবনে আশার আলো। ২০২৬ সাল হোক ঘুরে দাঁড়ানোর বছর, স্বপ্ন ফেরানোর বছর।
লেখক : কলাম লেখক ও শিল্পো-উদ্যোক্তা।
এইচআর/এএসএম