রাজনীতি

খালেদা জিয়াকে বিদায় জানাতে জানাজাস্থলে মানুষের ঢল

কারও চোখে অস্রু, কারও হাতে তসবি, কেউ আবার ভারাক্রান্ত মনে চুপচাপ হাঁটছেন। তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জানাজায় আসা মানুষের মধ্যে দেখা গেছে এ চিত্র। বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) বেলা ২টার দিকে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু সকাল থেকেই মানুষ আসতে শুরু করেছে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে।

বেলা ১১টায় সরেজমিনে দেখা যায়, কুয়াশাজড়ানো তীব্র শীত উপেক্ষা করেও মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ ও আশপাশের এলাকায় মানুষের ঢল। যতই সময় গড়াচ্ছে ততই লোকসমাগম বাড়ছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসা মানুষের চোখে-মুখে একজন আপসহীন দেশনেত্রীকে হারানোর বেদনা।

খামারবাড়ি এলাকায় কথা হয় জানাজায় অংশগ্রহণ করতে আসা রাকিবুল ইসলাম নামের একজনের সঙ্গে। তিনি বলেন, নিজের টাকা খরচ করে প্রিয় নেত্রীর জানাজা করতে ছুটে এসেছি। এই অবস্থায় বাড়িতে থাকা সম্ভব নয়। এরকম দেশপ্রেমিক সাহসী নেত্রী বাংলাদেশের ইতিহাসে আর আসবে কি না জানি না। প্রিয় নেত্রীকে শেষ বিদায় জানাতে চলে এসেছি।

রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্তে অবস্থান করা জাগো নিউজের একাধিক প্রতিবেদক জানান, সকাল থেকে ঢাকার প্রবেশপথগুলো দিয়ে সারি সারি গাড়ি ঢাকায় প্রবেশ করেছে। দূর দূরান্ত থেকে আসা মানুষ খঅলেদা জিয়াকে শেষ বিদায় জানাতে গাড়ি থেকে নেমে পায়ে হেঁটে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের দিকে রওনা হচ্ছেন।

এদিকে জানাজা উপলক্ষে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পুলিশের পাশাপাশি এপিবিএন, র‌্যাব, বিজিবি ও সেনাবাহিনী মোতায়েন থাকবে। সার্বিক নিরাপত্তার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১০ হাজারের বেশি সদস্য মোতায়েন থাকবে।

ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) সূত্রে জানা গেছে, এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে শুরু করে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউজুড়ে মরদেহবাহী গাড়ি ঘিরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার থাকবে। এরই মধ্যে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ, জিয়া উদ্যান ও আশপাশের এলাকায় মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) রাত থেকেই পুলিশের পাশাপাশি অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন রয়েছে। জানাজা থেকে শুরু করে দাফনকাজ পর্যন্ত সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে মিয়া অ্যাভিনিউসহ পুরো রাজধানীজুড়ে।

ডিএমপি বলছে, বাংলাদেশের জাতীয় নেতাকে সর্বস্তরের জনগণ যেন নির্বিঘ্নে সম্মান জানাতে পারেন এবং তার জানাজায় অংশ নিতে পারেন সেজন্য যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করছে নিরাপত্তা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রীয় সব দপ্তর। মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের চারপাশের সড়কগুলোতেও যেন জনসাধারণ অবস্থান করতে পারেন সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

খালেদা জিয়ার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে এবং তার জানাজায় অংশ নিতে পাকিস্তানের স্পিকার ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, মালদ্বীপের প্রেসিডেন্টের বিশেষ দূত ও দেশটির উচ্চশিক্ষামন্ত্রী, শ্রীলঙ্কা ও নেপাল সরকারের একজন প্রতিনিধিসহ বেশ কয়েকটি দেশের মন্ত্রী ও বিশেষ দূত ঢাকায় আসার কথা রয়েছে।

টিটি/এমএমকে/এএসএম