ফ্রিজ অপরিষ্কার থাকলে খাবার যেমন দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়, তেমনই সেই খাবার থেকে আমাদের শরীরে নানা ধরনের রোগ বাসা বাঁধতে পারে। আর নোংরা থাকার কারনে আপনার অতি শখের ফ্রিজটিও দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। তাই ফ্রিজের দরকার বিশেষ যত্ন। আসুন জেনে নেই ফ্রিজ ঝকঝকে ও সুন্দর রাখার, সাথে খাবার সংরক্ষণের নানা রকম পদ্ধতি -১. সপ্তাহে অন্তত একদিন ফ্রিজের ভেতরটা পরিষ্কার করুন। যেদিন আপনার ফ্রিজে অল্প পরিমাণে খাবার থাকে, বা সপ্তাহের শেষ দিনটি বেছে নিন ফ্রিজ পরিষ্কার করার জন্য।২. মাসে একবার সাবান পানি দিয়ে ফ্রিজ পরিষ্কার করুন। ব্যবহার করতে পারেন গ্লাস ক্লিনারও। পাওয়ার অফ করে নিন শুরুতেই। ফ্রিজের ভেতরের সব খাবার আর ট্রে বের করে নিন। তারপর লিকুইড সাবান ও স্পঞ্জ দিয়ে ফ্রিজের ভেতরটা ভালোভাবে মুছে নিন ।৩. হালকা গরম পানিতে গুঁড়ো সাবান গুলে প্রতিটি শেলফ আর ট্রে আধা ঘণ্টা ডুবিয়ে রাখুন, শুকনো করে মুছে নিন, তারপর জায়গা মতো ফিট করে দিন।৪. ফ্রিজের দুর্গন্ধ দূর করার জন্য হালকা গরম পানির সাথে বেকিং সোডা বা ভিনিগার মিশিয়ে সেই মিশ্রণ দিয়ে ফ্রিজ পরিষ্কার করুন। ফ্রিজের এক কোনায় একটি ছোট কৌটায় বেকিং সোডা রাখতে পারেন, এতে ফ্রিজে দুর্গন্ধ কম হবে।৫. ফ্রিজ পরিষ্কার করার জন্য ক্লোরিন ব্লিচ ও খসখসে কাপড় ব্যবহার করবেন না, এতে শেলফের প্লাস্টিকের আবরণ উঠে যেতে পারে ।৬. ফ্রিজের বাইরের অংশ পরিষ্কার করার জন্য ভিনেগার ব্যবহার করতে পারেন। ফ্রিজের চারপাশের রাবারের অংশ নিয়মিত সাবান পানি দিয়ে পরিষ্কার করুন, না হলে ধুলো বালি জমে রাবার ফেটে যেতে পারে।৭. রান্না ঘরে ফ্রিজ থাকলে ফ্রিজের উপরের অংশ পাতলা তোয়ালে দিয়ে ঢেকে রাখুন, তা হলে উপরের অংশ তেল চিট চিটে হবে না ।৮. বেশিদিনের পুরানো খাবার ফ্রিজে ফেলে রাখবেন না, ফ্রিজে বাজে গন্ধ হয়ে যেতে পারে।৯. গরম অবস্থায় খাবার ফ্রিজে রাখবেন না, ফ্যানের নিচে খাবার রেখে ঠাণ্ডা করে তবেই ফ্রিজে রাখুন।১০. ফল, সব্জি, মাছ প্রতিটি খাবার সংরক্ষণের জন্য আলাদা তাপমাত্রার প্রয়োজন। তাই মাছ মাংস, ফ্রোজেন ফুড ডীপ ফ্রিজে সংরক্ষণ করুন। এছাড়া দুধ, ডিম,পাউরুটি, জ্যামের মতো খাবার নির্দিষ্ট তাকে রাখুন।১১. ফ্রিজের ভেতর ফল ও সবজি এক সাথে না রেখে আলাদা রাখুন। কারন আপেল ও অন্য কয়েক ধরনের ফল থেকে ইথিলিন নামক গ্যাস বের হয় যা সবজিকে জলদি পাকিয়ে দেয়।১২. সবজি প্লাস্টিকের প্যাকেটে ভরে ফ্রিজে রাখুন,খেয়াল রাখবেন প্যাকেটের মুখটা যেন ভালোভাবে আটকানো থাকে। এতে সবজির আদ্রতা ও পুষ্টি গুন বজায় থাকবে। ফ্রিজেও গন্ধ হবে না।১৩. মাসে একবার ফ্রিজের সিল পরীক্ষা করুন । যদি কোথাও চিড় দেখা দেয় তা হলে দেরি না করে জলদি সারিয়ে নিন ।১৪. ছয় মাস পর পর ফ্রিজের পাওয়ার অফ করে ফ্রিজের পেছনে বা নিচে থাকা কয়েল পরিষ্কার করুন। নরম ঝাড়ন দিয়ে কয়েলে লেগে থাকা ধুলো পরিষ্কার করুন ।১৫. ফ্রিজের উপর ভারি জিনিস রাখবেন না ।১৬. সপ্তাহে একদিন সবজি রাখার তাক/বক্স পরিষ্কার করুন । বর্ষাকালে সবজি পানি দিয়ে ধুয়ে শুকনো কাপড় দিয়ে মুছে সংরক্ষণ করুন। শাক পাতার আঁটি খুলে রাখুন, নষ্ট হয়ে যাবে না। কাঁচা মরিচের বোটা ফেলে ফ্রিজে রাখুন, বেশি দিন ভাল থাকবে। এগুলো পচলে কিন্তু বিচ্ছিরি গন্ধ হয়।১৭. এয়ার টাইট বক্সে খাবার সংরক্ষণ করুন,তা হলে খাবার পচে যাবার সম্ভাবনা কম থাকে, ফলে ফ্রিজেও দুর্গন্ধ হবে না ।১৮. ফ্রিজ পরিষ্কার করার পর তাপমাত্রার সুইচ চালু করে দিতে ভুলবেন না। সব সেটিং ঠিক আছে কিনা খেয়াল করে নিন। লোডশেডিঙয়ের পর সব সময় পরীক্ষা করুন ফ্রিজ ঠিক মতন চলছে কিনা।১৯. কখনো জোরে করে বন্ধ করবেন না, এতে ফ্রিজের রাবারের সিল নষ্ট হয়ে যায়। দরজা ঠিক মতন বন্ধ হচ্ছে কিনা খেয়াল রাখুন।২০. ফ্রিজ কখনো দেয়ালের সাথে একদম লাগিয়ে রাখবেন না, দূরত্ব রাখুন।২১. চুলার কাছে বা খুব গরম স্থানে ফ্রিজ রাখবেন না। যে স্থানে ফ্রিজ রাখা সেটি খুব গরম হলে মাঝে মধ্যেই ফ্যান ছেড়ে রাখু।এইচএন/আরআইপি