ধর্ম

অত্যাচারিত ব্যক্তির ফরিয়াদ সম্পর্কে বিশ্বনবির সতর্কতা

আল্লাহ তাআলা মানুষকে তাঁর প্রতিনিধি হিসেবে দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন। মানুষ যখন আল্লাহর প্রতিনিধিত্ব করবে; তাঁর হুকুম-আহকাম মেনে চলবে; সবই ইবাদাত-বন্দেগি হিসেবে পরিগণিত হবে।

দুনিয়ায় মানুষের সব কাজ যেন মাওলার ইবাদত বন্দেগিতে পরিণত হয়; সে জন্য তিনি পৃথিবীতে প্রেরণ করেছেন নবি-রাসুল এবং তাঁদের প্রতি নাজিল করেছেন আসমানি কিতাব। যাতে মানুষ সঠিক পথ প্রাপ্ত হতে পারে। যার মাধ্যমে মানুষ নিজেদেরকে সংশোধন করে তাঁর আনুগত্য করতে পারে।

মানুষ যদি তাঁর প্রতিনিধিত্ব করতে গিয়ে কুরআন-সুন্নাহর নির্দেশ অমান্য করে অন্যায় পথে পরিচালিত হয়। আল্লাহ তাআলার সৃষ্টির প্রতি এমন আচরণ করে বসে, যে আচরণের কারণে মানুষ অত্যাচারিত ও নির্যাতিত হয়। এ অত্যাচার পরিণাম মারাত্মক ভয়াবহ।

অত্যাচারিত ব্যক্তির অন্তরের নিশ্বাস আল্লাহ তাআলা সহ্য করতে পারেন না। মজলুম বা অত্যাচারিত ব্যক্তির ফরিয়াদ এবং আল্লাহ তাআলার মাঝে কোনো পর্দা থাকে না।

প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাদিসে এ বিষয়ে উম্মতে মুহাম্মাদিকে বিশেষভাবে সতর্ক করেন। রাষ্ট্র পরিচালনায়ও যাতে কোনো মানুষ অত্যাচারের স্বীকার না হন সে বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেছেন।হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন হজরত মুয়াজ রাদিয়াল্লাহু আনহুকে ইয়ামেনে (শাসক করে) পাঠান; তখন তাকে বলেন- মজলুমের (অত্যাচারিত ব্যক্তির) ফরিয়াদকে ভয় করবে। কারণ মজলুমের ফরিয়াদ এবং আল্লাহর মাঝে কোনো পর্দা থাকে না। (বুখারি)

হাদিসের আলোকে বুঝা যায়->> শুধুমাত্র মানুষের প্রতি অত্যচার নয় বরং আল্লাহ তাআলার সৃষ্টি কোনো প্রাণীর প্রতিই অত্যাচার করা যাবে না। কারণ বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছিলেন সমগ্র বিশ্ব জাহানের জন্য রহমতস্বরূপ। সুতরাং বিশ্বজাহানের কোনো সৃষ্টির প্রতিই অত্যাচার করার সুযোগ নেই।

বিশেষ করে মানুষের জন্য সতর্কতা-মানুষ আশরাফুল মাখলুকাত তথা সৃষ্টির সেরা জীব। যাদের জন্য আল্লাহ তাআলা সুনির্দিষ্ট নীতিমালা সম্বলিত গ্রন্থ ‘কুরআনুল কারিম’ নাজিল করেছেন। তাদের প্রতিটি কাজের জন্য জবাবদিহিতার বিষয়টিও সুনিশ্চিত করেছেন। পরকালীন জীবনে কোনো আদম সন্তানই জবাবদিহিতা ছাড়া এক কদমও নাড়াতে পারবে না বলে বিশ্বনবি ঘোষণা করেছেন।

তাই মানুষের সঙ্গে কারণে হোক আর অকারণে, কোনোভাবেই অন্যায় আচরণ, জুলুম-অত্যাচার করা যাবে না। মানুষের প্রতি জুলুম-অত্যাচার সবচেয়ে মারাত্মক অপরাধ। এ কারণেই অত্যাচারিত ব্যক্তির আবেদন-নিবেদন আল্লাহ তাআলার দরবারে সরাসরি পৌঁছে যায়। আল্লাহ তাআলার মাজলুমের চাওয়া-পাওয়া খুবই দ্রুততার সঙ্গে কবুল করে থাকেন।

সুতরাং মানুষের উচিত, দুনিয়ার কোনো সৃষ্টির প্রতিই জুলুম অত্যাচার না করা। পরকালের জবাবদিহিতার কথা স্মরণ করে পরস্পরের প্রতি দয়া ও সহানুভুতি প্রদর্শন করা। দায়িত্ব পালনে হাদিসে ঘোষিত নসিহতের প্রতি সতর্কতা হওয়া আবশ্যক।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে হাদিসের উল্লেখিত হাদিসের ওপর আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/জেআইএম