আরাফাতের ময়দান থেকে মুজদালিফায় গিয়ে রাতে অবস্থান করা সুন্নাত। আর ১০ জিলহজ ফজরের নামাজের পর থেকে সূর্য ওঠার আগ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে কিছু সময় অবস্থান করা ওয়াজিব।
অতঃপর সূর্য ওঠার আগেই মুজদালিফা থেকে মিনার (১০ জিলহজ) উদ্দেশে কংকর নিক্ষেপে রওয়ানা হতে হবে। মুজদালিফা থেকে যাওয়ার পথে প্রত্যেক হাজি ছোট ছোট পাথর সংগ্রহ করতে হবে।
১০ জিলহজপ্রথম দিন শুধুমাত্র বড় জামারাতে কংকর নিক্ষেপ করতে হবে। তিন ধাপে মিনায় মসজিদে খায়েফের সন্নিকটে অবস্থতি জামরায়ে উলা তথা বড় জামরায় কংকর মারা শুরু করবে। অতঃপর ৭টি কংকর একের পর এক নিক্ষেপ করতে হবে।
স্মরণ রাখতে হবে-বড় জামরাতে কংকর নিক্ষেপের পর ক্বিরান ও তামাত্তু হজ আদায়কারীরা কুরবানি করবে। (ওয়াজিব) অতঃপর হাজিগণ মাথা মুণ্ডন করবে। মাথা মুণ্ডনের ফলে হাজিগন (স্ত্রীর সহবাস ছাড়া সবকিছু) হালাল হয়ে যাবেন।
অতপর তাওয়াফে ইযাফা বা তাওয়াফে যিয়ারাত আদায় করতে মক্কায় কাবা শরিফে যেতে হবে। এ তাওয়াফ ১২ জিলহজ সূর্যাস্তের আগ পর্যন্ত করা যাবে। যারা এ তাওয়াফ আদায় করবে তারা পরিপূর্ণ হালাল হয়ে যাবে এবং সব কাজ করতে পারবে।
অতঃপর যারা আগে সাঈ করে নাই, তারা তাওয়াফে জিয়ারাতের পরপরই সাঈ আদায় করে নিবে।
১১ ও ১২ জিলহজইফরাদ, ক্বিরান ও তামাত্তু হজ আদায়কারীরা ১১ ও ১২ জিলহজ উভয় দিন প্রথমে ছোট জামরায় কংকর মারা শুরু করবে এবং একের পর এক সাতটি কংকর মারবে।
তারপর মধ্যম জামরায়ও একইভাবে সাতটি কংকর নিক্ষেপ করবে এবং সর্বশেষ বড় জামরায় কংকর মারার মাধ্যমে মিনায় কংকর মারার ওয়াজিব কাজ সম্পন্ন করবেন।
যেভাবে কংকর নিক্ষেপ করতে হবে
- প্রথম জামরাকংকর মারার পর কিছুটা পিছনে সরে আসবে এবং জামরাকে (কংকর মারার স্থান) বাম দিকে রেখে ক্বিবলামুখী হয়ে দুই হাত উত্তোলন করে করুণ আবেদন-নিবদনের মাধ্যমে আল্লাহ তআলার নিকট দোয়া করতে থাকা।
- দ্বিতীয় জামরাকংকর মারার পর কিছুটা সম্মুখের দিকে সরে যাবে এবং জামরাকে (কংকর মারার স্থান) ডান দিকে এবং ক্বিবলাকে সম্মুখে রেখে দুই হাত উত্তোলন করে করুণ আবেদন-নিবদনের মাধ্যমে আল্লাহ তআলার নিকট দোয়া করতে থাকা।
- তৃতীয় জামরাতৃতীয় জামরায় কংকর নিক্ষেপ করবে কিন্তু সেখানে দাঁড়ানো যাবে না এবং দোয়া না করে শুধু কংকর নিক্ষেপ করে চলে আসা।
অতঃপর...যারা ১১ ও ১২ জিলহজ কংকর নিক্ষেপ করে মিনা ত্যাগ করবে তাদের জন্য সূর্যাস্তের পূর্বেই মিনা ত্যাগ করা উত্তম।
আর যারা ১২ জিলহজ সুর্যাস্তের পর মিনায় অবস্থান করবে তারা সেখানে অবস্থান করবে এবং ১৩ জিলহজও মিনার জামরাতে কংকর নিক্ষেপ করবে। আর তৃতীয় দিবসে কংকর নিক্ষেপ করা উত্তম এবং অধিক সাওয়াবের কাজ।
কারণ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম লোকদেরকে ১২ তারিখ চলে যাওয়া বৈধ বললেও তিনি নিজে ১২ জিলহজ না যেয়ে ১৩ জিলহজ পর্যন্ত অপেক্ষা করে ঐ দিন দ্বিপ্রহরের পর সব জামরায় কংকর নিক্ষেপ করে জোহর নামাজ আদায় না করেই মিনা ত্যাগ করেছিলেন।
সুতরাং আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর সব হজপালনকারীদের উল্লেখিত দিনগুলোতে মাসনুন পদ্ধতিতে কংকর নিক্ষেপ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/জেআইএম