নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রাজধানীর আবাসিক হোটেলগুলোকে আট দফা নির্দেশনা দিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
গত ১৫ আগস্ট পান্থপথের হোটেল ওলিও ইন্টারন্যাশনালে জঙ্গিবিরোধী অভিযানের পর এই নির্দেশনা দেওয়া হয়। ওই অভিযানে এক জঙ্গি আত্মঘাতী হন।
এদিকে, হোটেল কর্তৃপক্ষ ডিএমপির এই নির্দেশনা মানছে কিনা তাও নজরদারিতে রাখতে পুলিশকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
জানতে চাইলে তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাজহারুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, তেজগাঁও এলাকার আবাসিক হোটেলগুলোতে ডিএমপি কমিশনারের নির্দেশনা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। হোটেল মালিকেরা তা মানতেও শুরু করেছেন।
ডিএমপির ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, পান্থপথের হোটেলে নিহত জঙ্গি বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক নিয়ে হোটেলে অবস্থান করছিলেন। জাতীয় শোক দিবসের শোভাযাত্রায় আত্মঘাতী হামলার পরিকল্পনা ছিল।
আরও বলা হয়, ঢাকা মহানগরকে জঙ্গিমুক্ত করার অংশ হিসেবে ঢাকায় বসবাসরত ভাড়াটেদের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। এই ব্যবস্থায় জঙ্গি তৎপরতাসহ নানা ধরনের অপরাধ প্রবণতা কমে যাবে। কিন্তু আবাসিক হোটেলে আগতদের তথ্য সংগ্রহ, তাঁদের শরীর ও লাগেজ তল্লাশি ইত্যাদি কার্যক্রম সচল না থাকলে সন্ত্রাসীরা নির্বিঘ্নে আবাসিক হোটেলগুলোতে আশ্রয় নেওয়ার সুযোগ পাবে। সেজন্য সব ধরণের নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়ানোর তাগিদ দেওয়া হয়।
হোটেল কর্তৃপক্ষকে দেওয়া ডিএমপির ৮ নির্দেশনা১. বোর্ডার এন্ট্রির সময় তার ছবি তুলতে হবে, জাতীয় পরিচয়পত্র/পাসপোর্ট/ড্রাইভিং লাইসেন্সের কপি সংগ্রহ করতে হবে।
২. বোর্ডারের পূর্ণাঙ্গ নাম-ঠিকানা ও মোবাইল ফোন নম্বর লিপিবদ্ধ করতে হবে। তাৎক্ষণিক কল করে নম্বরের সঠিকতা যাচাই করতে হবে।
৩. আর্চওয়ে দিয়ে বোর্ডারের দেহ তল্লাশি করতে হবে। আর্চওয়ে না থাকলে মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে তল্লাশির ব্যবস্থা করতে হবে। বোর্ডার যতবার হোটেলে প্রবেশ করবেন, ততবার দেহ তল্লাশি করতে হবে।
৪. সব লাগেজ স্ক্যানার দিয়ে চেক করতে হবে। স্ক্যানার না থাকলে ম্যানুয়াল চেকের ব্যবস্থা করতে হবে।
৫. বোর্ডার হোটেলে অবস্থানকালে যতবার লাগেজ, ব্যাগ, মালামাল নিয়ে প্রবেশ করবেন, ততবারই লাগেজ, ব্যাগ ও মালামাল স্ক্যান/ম্যানুয়াল চেক করতে হবে।
৬. বোর্ডারের কাছে কোনো অতিথি আসলে তার দেহ ও ব্যাগও তল্লাশি করতে হবে।
৭. সিসি ক্যামেরা (রাত্রীকালীন ছবি ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন) স্থাপন করতে হবে এবং হোটেলের চারপাশে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করতে হবে।
৮. ভেকিহেল স্ক্যানারের মাধ্যমে গাড়ি চেকিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে।
এসব বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, মূলত নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার রাখতেই আবাসিক হোটেলগুলোকে আটটি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বোর্ডার রাখার ক্ষেত্রে যেসব নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, তা না মানলে হোটেল মালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেইউ/এসআর/পিআর