মতামত

খাদ্যমূল্য স্বাভাবিক রাখতে মজুত বাড়ান

নিত্যপণ্যের দাম বেড়েই চলেছে। বিশেষ করে খাদ্যদ্রব্যের দামও আকাশচুম্বী। অতিপ্রয়োজনীয় চালের দাম এখনো বাড়তি। বলা যায় সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। উৎপাদন ও মজুত কম থাকায় চালের দাম কমছেনা-এমনটি বলা হচ্ছে। এ অবস্থায় চালের দাম স্বাভাবিক রাখতে মজুত বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই।

প্রাকৃতিক দুর্যোগে ফসল উৎপাদন কম এবং সময়মতো আমদানি না হওয়ায় যে কোনো বছরের তুলনায় খাদ্য মজুত সর্বনিম্ন। তাই প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা জরুরি পরিস্থিতিতে সর্বনিম্ন ১০ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য মজুত রাখতে মন্ত্রণালয় ও খাদ্য অধিফতরকে নির্দেশ দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। একই সঙ্গে চলতি মৌসুমে সাত লাখ মেট্রিক টন ধান ও আট লাখ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহের সিদ্ধান্ত থাকা সত্ত্বেও কেন তা বাস্তবায়ন হয়নি তা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া ভবিষ্যতে নীতিমালা অনুযায়ী খাদ্য সংগ্রহ ও মজুতের ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। অভ্যন্তরীণ চাল সংগ্রহ বা আমদানি কোনো ক্ষেত্রেই সরকারের লক্ষ্য এখনো পূরণ হয়নি। তাই মোটা চালের দাম এখনো চড়া। এছাড়া ওএমএস কর্মসূচিও ঝিমিয়ে পড়েছে। চালের মোট মজুত যেখানে ৮-১০ লাখ টন থাকার কথা সেখানে গত ৯ নভেম্বর পর্যন্ত ছিল চার লাখ ১০ হাজার ৫২ টন। এ সময়ে মোট খাদ্যশস্য মজুতের পরিমাণ ৫ লাখ ৯৬ হাজার ১১ টন। অথচ গত বছর একই সময়ে খাদ্য মজুত ছিল আট লাখ ৭২ হাজার ৯৪ টন। এমন প্রেক্ষাপটে সরকার উপরোক্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

চালের দাম বৃদ্ধির জন্য যে কারণই থাকুক না কেন তা দূর করতে হবে। যারা চালবাজি করছে তাদের বিরুদ্ধে নিতে হবে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা। নিয়ন্ত্রণহীনভাবে আর কতদিন চলবে চালের বাজার। অনেক মিল মালিকদের কালো তালিকাভুক্ত করা হল। কিন্তু অবস্থার কোনো উন্নতি তো হয়নি। শুধু চাল নয় যে কোনো উসিলায় দ্রব্যমূল্য বাড়ানো একটি দুর্ভাগ্যজনক প্রবণতায় পরিণত হয়েছে। বাজার নিয়ন্ত্রণে কার্যকর কোনো ব্যবস্থায়ও গড়ে উঠেনি। টিসিবিকে সক্রিয় করে বাজারে একটি প্যারালাল সরবরাহ ব্যবস্থা চালু রাখার কথা বলা হয় সবসময়। কিন্তু আজো টিসিবিকে সেই মাত্রায় কার্যকর করা যায়নি। অনেকদিন ধরেই চালের বাজার অস্থিতিশীল। চালের দাম বাড়লে তা সীমাহীন দুর্ভোগ সৃষ্টি করে ভুক্তভোগীদের। তাই অবিলম্বে চালের মূল্য স্বাভাবিক ও স্থিতিশীল রাখতে নিতে হবে কার্যকর পদক্ষেপ।

এছাড়া খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিসহ ভিজিএফয়ের আওতাধীন সব কর্মসূচি যথা সময়ে সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। খাদ্যশস্যের মজুত দ্রুত সন্তোষজনক অবস্থায় ফেরানোর লক্ষ্যে স্থানীয় দরপত্র, আন্তর্জাতিক দরপত্র এবং জিটুজি (সরকার থেকে সরকার) পদ্ধতিসহ সব প্রক্রিয়া দ্রুততম সময়ে সম্পাদন করতে হবে। যথা সময়ে পরিকল্পনা প্রণয়ন করে নির্দিষ্ট সময়ে লক্ষ্যমাত্রা যাতে অর্জিত হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

এইচআর/জেআইএম