সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে যে বিষপাণ করতে বাধ্য হয়েছিল জার্মান ক্লাব বায়ার্ন মিউনিখ, প্রায় দুই মাসেরও বেশি সময় পর অবশেষে সেই বিষের জ্বালা থেকে কিছুটা হলেও মুক্তি মিলেছে তাদের। ২৮ সেপ্টেম্বর পিএসজির মাঠে গিয়ে ৩-০ গোলে হেরে এসেছিল ভাবারিয়ানরা। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রুপ পর্বে এর আগে এতবড় পরাজয়ের মুখোমুখি আর কখনও। যে কারণে কোচ কার্লো আনচেলত্তিকে পর্যন্ত বরখাস্ত করেছিল জার্মান জায়ান্টরা।
জাত্যাভিমান কতটা বেশি হলে এমন কাজ করতে পারে, তা এই ঘটনাই প্রমাণ করে। বায়ার্ন মিউনিখও ছিল প্রতিশোধের নেশায় মত্ত। কারণ, তাদের তো জানা, ফিরতি পর্বে তাদেরই ডেরা- আলিয়াঞ্জ এরেনায় খেলতে আসতে হবে নেইমার-কাভানিদের।
অবশেষে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ উপস্থিত। এবং সুযোগটা কাজেই লাগিয়ে ছাড়ল বায়ার্ন। গুনে গুনে পিএসজির জালে তারাও তিনবার বল প্রবেশ করাল। তবে, দুর্ভাগ্য যে একটি গোল হজমও করে ফেলতে হলো বায়ার্নকে। ফিরতি পর্বের এই ম্যাচে পিএসজিকে ৩-১ ব্যবধানে হারিয়েছে বায়ার্ন মিউনিখ। দুই লেগের গড় গোলের হিসেবে কিন্তু পিএসজিই এগিয়ে থাকলো ৪-৩ ব্যবধানে।
এই জয়েও কিন্তু গ্রুপ পর্বে পিএসজিকে পেছনে ফেলতে পারেনি বায়ার্ন মিউনিখ। দু’দলেই পয়েন্ট হয়েছে সমান ১৫ করে। কিন্তু গোল গড়ে অনেক বেশি এগিয়ে পিএসজি। তারা এগিয়ে ২১ গোলে। বিপরীতে বায়ার্ন এগিয়ে ৭ গোলে। গোল ব্যবধানে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েই শেষ ষোল নিশ্চিত হলো পিএসজির। বায়ার্ন হলো রানারআপ।
নিজেদের মাঠে বায়ার্নই পরিস্কার ফেবারিট। সে তকমা ধরে রেখেই ম্যাচের শুরুতে পিএসজির জালে বল জড়িয়ে দেন বায়ার্নের পোলিশ স্ট্রাইকার রবার্ট লেভানডভস্কি। খেলার আট মিনিটেই গোলটি করেন তিনি। এই মৌসুমে সব ধরনের প্রতিযোগিতায় লেভানডভস্কির ২০তম গোলে দারুণ অবদান হামেস রদ্রিগুয়েজের।
পিএসজির আক্রমণভাগের তিন তারকার অন্যতম এডিনসন কাভানি এদিন ছিলেন নিজের ছায়া হয়ে। গতি দিয়ে ভীতি ছড়িয়েছেন এমবাপে। নেইমারকে মোটেও দেখা যায়নি সেরা ছন্দে। ব্রাজিল অধিনায়কের ফ্রি-কিক থেকে ২৩তম মিনিটে গোল পরিশোধের খুব কাছে চলে গিয়েছিল পিএসজি। সেবার একটুর জন্য লক্ষ্যে থাকেনি নেইমারের শট।
৩৪তম মিনিটে নেইমারের দুর্দান্ত এক প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয় সভেন উলরিখের নৈপুণ্যে। ঝাঁপিয়ে পড়ে কর্নারের বিনিময়ে বায়ার্নকে রক্ষা করেন এই গোলরক্ষক। ৪৩তম মিনিটে আবার নেইমারকে হতাশ করেন তিনি।
পিএসজির দুই প্রচেষ্টার মাঝে ৩৭তম মিনিটে ব্যবধান বাড়ান কোরেন্তিন তোলিসো। এই গোলেও দারুণ অবদান ছিল রদ্রিগেসের। ডি-বক্সে তার অসাধারণ ক্রসে ফরাসি ফরোয়ার্ডের দারুণ হেড জালে জড়ায়। গোলের জন্য মরিয়া পিএসজি ব্যবধান কমায় দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে। ৫০তম মিনিটে কাভানির থেকে বল পেয়ে খুব কাছ থেকে লক্ষ্যভেদ করেন এমবাপে।
১০ মিনিট পর সমতা ফেরানোর সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করেন মার্কো ভেরাত্তি। অরক্ষিত ফরোয়ার্ড বিপজ্জনক জায়গায় বল পেয়েও গোলরক্ষক বরাবর শট নেন তিনি। পাল্টা আক্রমণ থেকে ৬৯তম মিনিটে আবার ব্যবধান বাড়ান তোলিসো। স্বদেশি ফরোয়ার্ড কোমানের কাছ থেকে বল পেয়ে কোনাকুনি শটে বল পিএসজির জালে পাঠান তিনি। বাকি সময়ে গোলের দেখা পায়নি কোনো দলই।
আইএইচএস/আইআই