২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটেকে চমকহীন বলে মন্তব্য করেছেন একুশে পদকপ্রাপ্ত বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাবেক সভাপতি ও ইউজিসি অধ্যাপক ড. মইনুল ইসলাম।
তিনি বলেন, বছর শেষে সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখেই এ বাজেট দেয়া হয়েছে। এখানে জনগণকে তুষ্ট করার চেষ্টা থাকলেও নতুন কোনো চমক নেই। তবে বার্ষিক বরাদ্দ পুরোপুরি খরচ হলেই বাজেট ফলপ্রসূ হবে বলেও মন্তব্য করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক এ অধ্যাপক।
বৃহস্পতিবার (৭ জুন) দুপুরে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপনের পর জাগো নিউজের সঙ্গে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, বিশাল বাজেট দিয়ে লাভ নেই, যদি তার সবটুকু বাস্তবায়ন করা না যায়, এ বছরও সরকার বাজেটের ৮০ শতাংশও বাস্তবায়ন করতে পারেনি। বছরের শুরুতে বড় বাজেট দিয়ে, শেষ তিন মাসে তাড়াহুড়া করে বাস্তবায়নের চেষ্টা এখন ফ্যাশনে দাঁড়িয়েছে।
অধ্যাপক ড. মঈনুল ইসলাম বলেন, বাজেটে অনেক ভালো দিক রয়েছে, যেমন- সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা, স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি ও মাদকজাতদ্রব্য এবং বিলাস দ্রব্যে কর বৃদ্ধি।
একই সঙ্গে এবারের বাজেটে হতাশার কথাও জানিয়েছেন তিনি। বলেন, যেহেতু এবার জনগণকে তুষ্ট করার লক্ষ্যেই বাজেট তৈরি। তাই খুব বেশি আশা করেছিলাম অন্তত শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়বে। কিন্তু তা হয়নি। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশের শিক্ষাখাতে সবচেয়ে কম করাদ্দ দিয়ে থাকে। শিক্ষাখাতে যদি বাজেট বাড়ানো যেত, তবে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ‘স্কুল ফিডিং’ কর্মসূচি শতভাগ বাস্তবায়ন হত। ভারত ইতোমধ্যে তা করে দেখিয়েছে।
জ্যৈষ্ঠ এ অর্থনীতিবিদ বলেন, প্রতিবছর দেশ থেকে বড় অঙ্কের পুঁজি পাচার হচ্ছে। সরকার এ ক্ষেত্রে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। প্রতিবছর ২০ লাখ লোক দেশ থেকে ছয়-নয় বিলিয়ন ডলারেরও বেশি পুঁজি পাচার করছে।
প্রস্তাবিত বাজেটে এক লাখ ১২ হাজার ২৭৬ কেটি টাকা ঘাটতি দেখানো হয়েছে। ঘাটতি মেটাতে ব্যাংক খাত থেকে ৪২ হাজার ২৯ কোটি টাকা নেয়া হবে। সঞ্চয়পত্র থেকে নেয়া হবে ২৬ হাজার ১৯৭ কোটি টাকা।
তিনি বলেন, ঘাটতি বাজেট বাস্তবায়নে সঞ্চয়পত্র থেকে নেয়া টাকার পরিমাণ আরও বাড়বে। বছর শেষে এ অংক ৫০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে।
আবু আজাদ/এএইচ/জেআইএম