দেশজুড়ে

মোমেনের হাতে ফুল দিয়ে এবার সমালোচনার মুখে বিএনপি নেতা শফি

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেনের হাতে ফুল দিয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের তোপের মুখে পড়েছেন সিলেট-৩ আসনের বিএনপি মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী শফি আহমদ চৌধুরী।

জেলা জুড়ে এখন সমালোচনা চলছে, তাহলে কি চৌধুরীও ইনাম চৌধুরীর দেখানো পথে হাঁটছেন? তিনিও কি যোগ দিচ্ছেন আওয়ামী লীগে! ফুলে কি তবে দল বদলের সুভাষ ছড়াবে?

মঙ্গলবার (১৫ জানুয়ারি) রাতে নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে দেখা করে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান সিলেট-৩ আসনে (দক্ষিণসুরমা-ফেঞ্চুগঞ্জ) বিএনপির পরাজিত প্রার্থী ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য শফি আহমদ চৌধুরী। এরপর এ ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়লে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা। কেউ কেউ এটিকে সাধুবাদ জানালেও শফি চৌধুরীও ইনাম আহমদ চৌধুরীর পথ ধরে হাঁটছেন কিনা এমন প্রশ্ন তোলেন অনেকে।

এদিকে ড. একে আব্দুল মোমেনের ঘনিষ্ঠজনদের পক্ষ থেকে দেখা করার বিষয়টি নিশ্চিত করা হলেও কী কারণে দেখা হয়েছে বা কী কথা হয়েছে সে ব্যাপারে কিছু জানাতে পারেননি তারা।

তবে শফি আহমদ চৌধুরী নির্বাচনের সময় গ্রেফতার নেতাকর্মীদের ছাড়ানোর অনুরোধ করতে মোমেনের কাছে গিয়েছিলেন জানিয়ে বলেন, সৌজন্য সাক্ষাৎ কিংবা রাজনৈতিক কোনো ফায়দা লাভের উদ্দেশ্যে আমি মোমেনের বাসায় যাইনি। সিলেটের একজন মন্ত্রী হিসেবে আমি তার কাছে গিয়েছিলাম যাতে নির্বাচনের জের ধরে আমার যেসব নেতাকর্মীদের হয়রানি করা হচ্ছে এবং যেসব নেতাকর্মী এখনও কারাগারে বন্দী আছে তাদের যেন ছেড়ে দেয়া হয়। আর সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড যেন বন্ধ হয় এসব অনুরোধ করতেই আমি তার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম।

আওয়ামী লীগে যোগদান করছেন কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে শফি চৌধুরী জানান, ড. মোমেনের সঙ্গে পারিবারিক সম্পর্ক রয়েছে সত্য। মোমেনের সঙ্গে দেখা করেছি বলেই যে আমি আওয়ামী লীগে যোগদান করেছি, এ রকম প্রোপাগান্ডা সত্য নয়। আমি এর আগে এরশাদ সরকারের আমল ছাড়াও অন্য সরকারের আমলেও মন্ত্রিত্বের প্রস্তাব পেয়েছিলাম। আমার রক্তে বিএনপি। বিএনপি ছাড়া অন্য কোনো দলের সঙ্গে রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা চিন্তা করতে পারি না।

সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ বলেন, শফি আহমদ চৌধুরীর সঙ্গে আমার ফোনে কথা হয়েছে এবং সকালে দেখাও হয়েছে। তিনি আমাকে বলেছেন, মোমেন সাহেবের ভাইয়ের সঙ্গে তার ভালো সম্পর্ক। সেই সম্পর্কের কারণেই দেখা করতে গিয়েছেন। তবে দেখা করে কী কথা বলেছেন তা আমার জানা নেই।

এতে বিএনপির সাংগঠনিক ক্ষতি হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে আলী আহমদ বলেন, এটা মূলত সৌজন্যতাবশত সাক্ষাৎ। এখন বিষয়টিকে কে কিভাবে নেবে তা বুঝতে পারছি না।

প্রসঙ্গত, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কয়েকদিন আগে সিলেট-১ আসনে বিএনপি থেকে প্রাথমিকভাবে মনোনয়ন পাওয়া ইনাম আহমদ চৌধুরীও তৎকালীন অর্থমন্ত্রী আব্দুল মুহিত ও ড. একে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে গিয়েছিলেন। পরবর্তীতে চূড়ান্ত মনোনয়ন না পেয়ে তিনি আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার হাতে ফুল দিয়ে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। এবার শফি চৌধুরী ড. মোমেনকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানোর পর আবার সেই আলোচনাই উঠে এসেছে।

ছামির মাহমুদ/এফএ/পিআর