দেড় বছর আগে ভালো কাজের প্রলোভন দেখিয়ে ভারতে পাচারের পর থেকে আর হদিস মিলছে না সাতক্ষীরা সদর উপজেলার সাতানী দাসপাড়ার দূর্গা দাস (৪৫) ও শেফালী দাসের (৪৩)। তাদের প্রলোভন দেখিয়ে ভারতে নিয়ে যায় আগরদাড়ি পশ্চিমপাড়া গ্রামের হযরত আলীর মেয়ে বিধবা পুতুল (৩৫)। দূর্গা দাস সাতানী দাসপাড়া গ্রামের মনোহর দাসের মেয়ে। শেফালী দাস রঞ্জন দাসের মেয়ে।
দূর্গা দাস ও শেফালীর বাবা জানান, দেড় বছর আগে ভালো কাজ ও টাকার প্রলোভন দেখিয়ে তাদের ভারতে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রথমে মুম্বাইতে রাখা হয়। এরপর থেকে তাদের আর কোনো খোঁজ নেই। অনেক সন্ধানের চেষ্টা করেও আমরা তাদের কোন সন্ধান পাইনি। ধারণা করেছি, দূর্গা ও শেফালীকে পতিতালয়ে বিক্রি করে দেয়া হয়েছে।
দূর্গা দাসের বাবা মনোহর দাস বলেন, দূর্গা এখন মুম্বাইয়ের নাসিক পতিতালয়ে আটক রয়েছে বলে বিভিন্ন মাধ্যমে জেনেছি। তবে সেখানে পৌঁছানোর সাধ্য নেই আমাদের।
শেফালী দাসের বাবা রঞ্জন দাস বলেন, শেফালীর কোনো হদিস পাচ্ছি না। তাকেও হয়তো কোনো পতিতালয়ে আটকে রাখা হয়েছে। আমরা তার সন্ধান চাই।
একই এলাকার মিজানুর রহমান ও তার স্ত্রীকে মারুফা খাতুনকে কারখানায় কাজ দেয়ার কথা বলে ভারতে নিয়ে যায় পুতুল। পরে ভারতে নিয়ে মারুফাকে খারাপ কাজের প্রস্তাব দেয়। রাজি না হলে আটকে রাখে। এসব কথা জানান সাতানী এলাকার মিজানুর রহমান।
তিনি আরও জানান, এরপর পুতুলকে ৪২ হাজার টাকা মুক্তিপণ দিতে হয় আমাদের। পরে ভারতের স্থানীয়দের সহযোগিতায় মারুফা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে।
এই তিন পরিবারের অভিযোগ, পুতুলের এই অনৈতিক কাজে সহযোগিতা করে তার বিধবা মাতা হাসিনা খাতুন ও বড় বোন ফজিলা খাতুন পুটু। পুতুল মুম্বাই শহরে লতা নামে পরিচিত। সেখানে দেহ ব্যবসা করে সে। বর্তমানে সেখানে রয়েছে। তবে এসব ঘটনায় কোথাও কোনো অভিযোগ জানায়নি বলেও জানান তারা।
অভিযোগের বিষয়ে পুতুল ওরফে লতা ভারতে থাকায় তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে তার বড় বোন ফজিলা খাতুন পুটু বলেন, দূর্গা দাস, শেফালী দাস ও মারুফা খাতুন ভারতে যাওয়ার জন্য আমাদের বাড়িতে ধরনা দিত। পরে পুতুল তাদের মুম্বাইতে নিয়ে যায়। এখন সেখানেই রয়েছে। কোথায় রয়েছে সেটি বলতে পারব না। আর আমার বোন দেহ ব্যবসা করলেও করতে পারে আমার জানা নেই।
সাতক্ষীরা থানা পুলিশের ওসি মোস্তাফিজুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, এসব নারীকে ভারতের পতিতালয়ে বিক্রি করে দেয়া হয়েছে এমন অভিযোগ পাইনি। ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আকরামুল ইসলাম/এএম/এমকেএইচ