দেশজুড়ে

তাঈহিম আর হোটেল বয় নয়

চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র তাঈহিম রহমান (৯)। পড়াশুনায় প্রবল আগ্রহ থাকায় হোটেলে বয় হিসেবে কাজ করার পাশাপাশি নিয়মিত পড়াশুনা চালিয়ে যাচ্ছে সে। মেধাবী শিক্ষার্থী হয়েও অভাবের তাড়নায় হোটেলে কাজ করতে হয় তাকে। এজন্য প্রায়ই স্কুলে অনুপস্থিত থাকত হতো। কিন্তু সে আর এখন হোটেল বয় নয়। বুধবার থেকে তাঈহিম রহমানের পড়াশুনার দায়িত্ব নিয়েছেন স্থানীয় মেয়র রেজাউল কবির চৌধুরী বাবু।শিক্ষার্থীদের স্কুল থেকে ঝরে পড়া রোধ করতে নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলার নজিপুর পৌরসভার মেয়র বুধবার দুপুরে পৌরসভার বিভিন্ন স্কুল পরিদর্শনে যান। নজিপুর পৌর এলাকার পলিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পরিদর্শনের সময় চতুর্থ শ্রেণির মেধাবী তালিকায় প্রথম শিক্ষার্থী তাঈহিম রহমান অনুপস্থিত দেখতে পান। এসময় তিনি স্কুলের প্রধান শিক্ষক শাকুরা জাহান শিউলির কাছে এর কারণ জানতে চান। এরপর মেয়র রেজাউল কবির চৌধুরী বাবু পৌরসভা এলাকার পলিপাড়া গ্রামে তাঈহিমের বাড়ি। সেখানে তাঈহিমকে পাওয়া না গেলেও তার বাবা জিয়াউর রহমানকে পাওয়া যায়। তাঈহিমের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সংসারে অভাব থাকায় নজিরপুরে একটি হোটেলে বয় হিসেবে কাজ করছে তাঈহিম। হোটেল থেকে যে বেতন পায় তা দিয়ে সংসারে কিছুটা কাজে লাগানো হয়। আর কিছু টাকা তার পড়াশুনায় ব্যয় করে। পরে তাঈহিমের বাবাসহ মেয়র, নজিপুর পৌরসভার কাউন্সিলর অরুণ কুমার পাল, কাউন্সিলর যুগল চন্দ্র দেবনাথ, বাচ্চু চন্দ্র সাহা, কাউন্সিলর সুকুমার দাশ, নজিপুর প্রেস ক্লাবের সভাপতি ইখতিয়ার উদ্দীন আজাদ, সাংবাদিক টিপু সুলতান ওই হোটেল গিয়ে দেখেন তাঈহিম টেবিল পরিস্কারের কাজ করছে। মেয়র হোটেল মালিককে বলে তাঈহিমের কাজ বন্ধ করে দেন। তিনি ঘোষণা দেন তাঈহিম আজ থেকে আর হোটেল বয় নয়, এখন থেকে সে নিয়মিত স্কুলে পড়াশুনা করবে। পলিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকা শাকুরা জাহান শিউলি জানান, গরিব ও অভাবী সংসারের সন্তান তাঈহিম একজন মেধাবী ছাত্র। শুধু তাঈহিম নয় এরকম হাজারো মেধাবী ছাত্রকে অর্থের অভাবে ঝরে পড়তে হয়। অল্প বয়সে সংসারের হাল নিজের কাঁধে তুলে নিতে হয়। তিনি সমাজের প্রতিটি বৃত্তবানের কাছে গরিব ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়ানো জন্য অনুরোধ করেন।মেয়র রেজাউল কবির চৌধুরী বাবু জানান, বর্তমান সরকার শিক্ষা বান্ধব সরকার। সরকার বিনামূল্যে শিক্ষার্থীদের বই বিতরণ করেন। স্কুল থেকে যেন শিক্ষার্থী ঝরে না পড়ে এজন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। সেই কার্যক্রমের অংশ হিসেবে আমরা তাঈহিমকে পেয়েছি। তাঈহিমের পড়াশুনার খরচ আজ থেকে আমি বহন করবো। আব্বাস আলী/এফএ/আরআইপি