দেশজুড়ে

এনামুলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গেলে হয়রানির শিকার হন কর্মকর্তারা

বগুড়া সদরের সহকারী যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা এনামুল হকের বিরুদ্ধে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের আওতায় থাকা যুবকদের ঋণের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। একাধিকবার অভিযোগের পরও রাজনৈতিক আশ্রয়ে বহাল রয়েছেন তিনি। তবে এনামুল হকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গেলে উল্টো নিজেদের হয়রানির শিকার হতে হয় বলে জানিয়েছেন যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর বগুড়ার উপপরিচালক তোছাদ্দেক হোসেন।

অনুসন্ধানে জানা যায়, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের নিয়ম অনুযায়ী, প্রশিক্ষিত যুবকদের আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য সহজ শর্তে ঋণ প্রদান করা হয়। কিন্তু এনামুল হকের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি নিজের স্বার্থে এসব ঋণের টাকা নয়ছয় করেছেন।

জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার সহকারী যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা দেওয়ান মো. রায়হানুল হকের কাছে ঋণ মঞ্জুরের জন্য একাধিকবার সুপারিশ করেন এনামুল হক। এসময় তিনি ঢাকারপাড়া গ্রামের মনিরা চৌধুরী মেমিকে নিজের স্ত্রী পরিচয় দিয়ে তার নামে দুই লাখ টাকা ঋণ উত্তোলন করেন। ঋণ পরিশোধ না হওয়ায় রায়হানুল এনামুলের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, মেমির সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই এবং ঋণ পরিশোধের দায়িত্বও তার নয়। এঘটনায় ১০ ফেব্রুয়ারি জয়পুরহাট জেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপপরিচালক মতিয়ার রহমান বগুড়া জেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরকে চিঠি দিয়ে এনামুলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানান।

এছাড়া এনামুল হকের বিরুদ্ধে ঋণ জালিয়াতির আরও অভিযোগ রয়েছে। কাহালু উপজেলায় কর্মরত থাকাকালে দুর্গাপুরের নূহুর আলী নামে এক ব্যবসায়ীর জমির মূল দলিল নিয়ে আব্দুল মজিদের নামে ২০ হাজার টাকা ঋণ উত্তোলন করেন তিনি। দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও নূহুর আলী তার জমির দলিল ফেরত পাননি। গত বছরের ২৭ অক্টোবর বগুড়া যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের এক তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, এনামুল হক প্রতারণার মাধ্যমে ভুয়া দলিল ব্যবহার করে অন্যের নামে ঋণ তুলেছেন এবং অর্থ আত্মসাৎ করেছেন।

এছাড়া এনামুল হকের বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগও রয়েছে। ২০১৭ সালে বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলায় কর্মরত থাকাকালে ভাড়া বাসায় এক নারীর সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় ধরা পড়েন তিনি। পরবর্তীতে তাকে সুনামগঞ্জের ছাতকে বদলি করা হয়। কিন্তু রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে আবারও বগুড়ায় ফিরতে সক্ষম হন তিনি।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, একসময় আওয়ামী লীগের কিছু নেতার ছত্রছায়ায় ছিলেন এনামুল হক। বর্তমানে বিএনপি নেতাদের ছত্রছায়ায় থেকে বহাল তবিয়তে রয়েছেন তিনি। ফলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও কর্তৃপক্ষ কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারছে না।

এনামুল হক তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি সব টাকা পরিশোধ করেছি। এসব মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ।

যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর বগুড়ার উপপরিচালক তোছাদ্দেক হোসেন বলেন, এনামুল হকের বিরুদ্ধে প্রায়ই অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গেলে উল্টো আমাদের হয়রানির শিকার হতে হয়। এরপরও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে তার বিষয়ে জানানো হয়েছে।

এফএ/জেআইএম