আইন-আদালত

কলেজছাত্র হৃদয়কে গুলি করা কনস্টেবল আকরামকে জিজ্ঞাসাবাদ ১১ মার্চ

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেছেন, আপনারা জানেন জুলাই আন্দোলনের সময় গাজীপুরের কোনাবাড়িতে হৃদয় নামে একজন শিক্ষার্থীকে বন্দুক ঠেকিয়ে গুলি করে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার ভাইরাল ভিডিও সারা দুনিয়া দেখেছে। কিন্তু সেই হৃদয়ের মরদেহ এখনো পাওয়া যায়নি।

তিনি বলেন, হৃদয়ের মরদেহ খুঁজে বের করতে আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ করার দরকার। তাই আসামি কনস্টেবল আকরাম হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। তাকে আগামী ১১ মার্চ জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

বুধবার (৫ মার্চ) ট্রাইব্যুনালে এক ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন তিনি। এর আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রজনতার আন্দোলন চলাকালে গাজীপুরের কোনাবাড়িতে সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেফতার সাবেক ৫ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রতিবেদন জমা দিতে আগামী ১৫ জুন দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মোহাম্মদ গোলাম মর্তুজা মজুমদার নেতৃত্বাধীন ৩ সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন।

শুনানি শেষে ট্রাইব্যুনালে প্রেস ব্রিফিংয়ে চিফ প্রসিকিউটর বলেন, মরদেহ না পাওয়া গেলেও ভিডিও ফুটেজ রয়েছে। হৃদয়কে যিনি গুলি করেছেন তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এরপর এ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে দুইমাস সময় প্রার্থনা করা হলে আদালত আগামী ১৫ জুনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। কিন্তু তার মরদেহ খুঁজে বের করতে আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ করার দরকার। তাই এ ঘটনায় গ্রেফতার কনস্টেবল আকরাম হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। তাকে আগামী ১১ মার্চ জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

আরও পড়ুন গাজীপুরের ওসি ও ডিবি পরিদর্শকসহ ৫ পুলিশ সদস্য ট্রাইব্যুনালে

তিনি বলেন, কনস্টেবল আকরাম হোসেনকে আজ ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য ট্রাইব্যুনালের কাছে আমরা একদিনের অনুমতি চেয়েছি। আগামী ১১ মার্চ তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। অর্থাৎ আমাদের তদন্ত সংস্থা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে। আজ আদেশের আগে আসামি সাবেক ওসি আশরাফ উদ্দিন, কনস্টেবল আকরাম হোসেন, ওসি শফিকুল ইসলাম, কনস্টেবল ফাহিম হাসান ও কনস্টেবল মাহমুদুল হাসানকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।

চিফ প্রসিকিউটর বলেন, ‘গাজীপুরের কোনাবাড়িতে গত ৫ আগস্ট একটি নির্মম হত্যাকাণ্ড হয়। তারা একজন বিক্ষোভকারীকে ধরে নিয়ে নানাভাবে অত্যাচার করে। বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য তাকে ঘিরে ধরে রাস্তার মাঝখানে নিয়ে যায়। ঠান্ডা মাথায় তাকে পেছন থেকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এরপর আরেকজন পুলিশ সদস্য এসে তাকে টেনে গলির মধ্যে নিয়ে যায়। আজ পর্যন্ত তার স্বজনরা জানে না, হৃদয়ের মরদেহ কোথায় আছে।’

তিনি বলেন, ‘তদন্ত সংস্থা এ বিষয়ে তদন্ত করছে। এ মামলার আসামি কনস্টেবল আকরাম পিঠে রাইফেল ঠেকিয়ে সেই বিক্ষোভকারী হৃদয় হোসেনকে গুলি করে। গোটা দুনিয়া এই নির্মম দৃশ্য দেখেছে মিডিয়ার কল্যাণে।

এর আগে সকাল ১০ টার দিকে জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় গাজীপুরের কলেজছাত্র হৃদয় হত্যার অভিযোগে সাবেক ওসি ও ডিবি পরিদর্শকসহ ৫ পুলিশ সদস্যকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে।

এফএইচ/এমএএইচ/জিকেএস