চলমান মূল্যস্ফীতির চাপ মোকাবিলায় কর্মীদের মজুরি বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে জাপানের শীর্ষস্থানীয় কোম্পানিগুলো। বুধবার (১২ মার্চ) এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে।
প্রতিবছর বসন্তকালে ‘শুনতো’ নামে পরিচিত আলোচনার মাধ্যমে শ্রমিক ইউনিয়ন ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ মজুরি নির্ধারণ করে, যা এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া নতুন অর্থবছরের জন্য কার্যকর হয়। জাপান কাউন্সিল অব মেটালওয়ার্কার্স ইউনিয়নের (জেসিএম) তথ্যানুসারে, বেশিরভাগ সদস্য সংগঠনই গত বছরের তুলনায় প্রায় একই মাত্রার মজুরি বৃদ্ধি নিশ্চিত করেছে।
আরও পড়ুন>>
ট্রাম্পের শুল্ক এড়াতে যুক্তরাষ্ট্রে গাড়ি তৈরি করবে হোন্ডা হোন্ডা-নিসানের একীভূত হওয়ার পরিকল্পনা বাতিল যে উপায়ে জাপানের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি দূর করতে চান ট্রাম্পজেসিএম-এর অধীনে থাকা ৫৩টি প্রধান শ্রমিক ইউনিয়নের মধ্যে ৫০টি এরই মধ্যে তাদের চূড়ান্ত প্রস্তাব পেয়েছে। মূল বেতনের গড় বৃদ্ধি হয়েছে ১৪ হাজার ৫৬৬ ইয়েন (প্রায় ৯৮ ডলার), যা গত বছরের তুলনায় ৯৯ দশমিক ৫ শতাংশ সমপরিমাণ।
জেসিএম চেয়ারম্যান আকিহিরো কানেকো বলেন, কেবল বড় কোম্পানিগুলো সন্তুষ্ট থাকলেই চলবে না, ছোট ও মাঝারি আকারের প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মীদের জন্যও এটি নিশ্চিত করতে হবে। তাই আমরা বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি।
এ বছর ৩০টি ইউনিয়নের দাবি সম্পূর্ণ বা তার চেয়েও বেশি পরিমাণে মেনে নেওয়া হয়েছে।
বিশ্বখ্যাত গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টয়োটা মোটর তার শ্রমিক ইউনিয়নের দাবি পুরোপুরি মেনে নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি ১৯৯৯ সালের পর সর্বোচ্চ হারে বোনাস দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা সাত মাসের বেতনের সমপরিমাণ। এছাড়া, বিভিন্ন পদ অনুযায়ী ৯ হাজার ৯৫০ থেকে ২৪ হাজার ৪৫০ ইয়েন পর্যন্ত মাসিক বেতন বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
টয়োটা মোটরের মানবসম্পদ প্রধান তাকানোরি আজুমা বলেন, আমাদের কর্মীরা মূল্যস্ফীতির চাপে রয়েছেন। তাই তাদের উদ্বেগ কমানোর জন্য আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছি।
জাপানের বৃহত্তম শ্রমিক ফেডারেশন রেনগোর তথ্যানুসারে, এবারের গড় মজুরি বৃদ্ধির হার ৬ দশমিক ০৯ শতাংশ, যা গত বছরের তুলনায় ০ দশমিক ২৪ শতাংশ বেশি এবং ১৯৯৩ সালের পর সর্বোচ্চ।
জাপানের মূল্যস্ফীতি ক্রমাগত বাড়ছে, যা খাদ্য ও জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধির ফলে আরও জটিল হয়ে উঠেছে। সরকারিভাবে জানানো হয়েছে, জানুয়ারিতে মূল্যস্ফীতির হার বেড়ে ৪ শতাংশ হয়েছে, যা গত এক বছরে সর্বোচ্চ।
বিশ্লেষকরা বলছেন, মজুরি বৃদ্ধির এই প্রবণতা অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। মিতসুবিশি ইউএফজে রিসার্চ অ্যান্ড কনসাল্টিং-এর প্রধান অর্থনীতিবিদ শিনইচিরো কোবায়াশি বলেন, এটি মজুরি ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ইতিবাচক চক্র গঠনে সহায়ক হতে পারে।
কেএএ/