জয়পুরহাটে একটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক থেকে আয়া পর্যন্ত একই পরিবারের নিকটাত্মীয় ছয়জন কর্মরত রয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ সম্মিলিত একটি তালিকাসহ জয়পুরহাট জেলা প্রশাসক ও জেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর দেওয়া অভিযোগে উঠে এসেছে এসব তথ্য।
জয়পুরহাট সদর উপজেলার শ্যামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শামসুর রহমান দুলালের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগে বলা হয়েছে, ১৯৬৫ সালে প্রতিষ্ঠিত এই প্রতিষ্ঠানটি এমপিভুক্ত হয় ১৯৭২ সালে। তখন সভাপতি হন তৎকালীন কৃষকলীগের থানা সভাপতি হোসেন আলী মণ্ডল। তারপর তিনি তার সমমানা দলীয় ব্যক্তিদের নিয়ে কমিটি গঠন করেন। তখন থেকেই যোগ্যতা যাচাই ছাড়াই শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ দিয়ে আসছেন তিনি। ক্ষমতাবলে সভাপতি হোসেন আলী তার দ্বিতীয় ছেলে শামসুর রহমান দুলালকে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ দেন এবং চাচাতো ভাই আলতাফ হোসেন বিদ্যালয়ের নৈশপ্রহরী হিসেবে নিয়োগ পান।
১৯৯৮ সালে বড় ছেলে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহ আলম লোকমানকে বিদ্যালয়ের সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়। এর কিছুদিন পরে দলীয় ক্ষমতাবলে সভাপতি শাহ আলম সিনিয়র শিক্ষককে বাদ দিয়ে তার আপন ভাই শামসুর রহমান দুলালকে প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ দেন। এরপর ২০২৪ সালে শাহ আলম লোকমান মারা গেলে তার আপন ফুপাতো ভাই জবেদ মুহুরী সভাপতি হন।
অভিযোগের ভিত্তিতে এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিদ্যালয়টির বর্তমান প্রধান শিক্ষক শামসুর রহমান দুলাল। তিনি ছাড়াও তার ছোট ভাই পুরানাপৈল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা সোহরাব হোসেন বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক, ভাতিজা মাশরুফ হোসেন মিরাজ নিরাপত্তাকর্মী, চাচাতো ভাই ফিরোজ হোসেন নৈশপ্রহরী, ভাগিনা নুর আলম পরিচ্ছন্নতাকর্মী এবং চাচাতো বোন সোনিয়া আক্তার আয়া পদে কর্মরত।
শ্যামপুর গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা সোহেল রানা বলেন, ‘এই প্রতিষ্ঠানে অনেক অনিয়ম-দুর্নীতি রয়েছে। নিজের পরিবারের লোকজনকে অর্থের বিনিময়ে নিয়োগ দিয়েছেন প্রধান শিক্ষক। আমরা তদন্ত সাপেক্ষে তার বিচার চাই।’
একই গ্রামের এনামুল বাবু বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক নিয়োগ বাণিজ্য করেছেন, প্রতিষ্ঠানের কোনো উন্নয়ন করেননি। এমনকি স্কুলের গেটও বিক্রি করে খেয়েছেন। আমি চাই তিনি যদি অন্যায় করেন তার শাস্তি হওয়া দরকার।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক শামসুর রহমান দুলাল জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমার বিষয়ে যেসব অভিযোগ দেওয়া হচ্ছে সেগুলো ঠিক না। যত নিয়োগ দেওয়া হয়েছে সবগুলো নিয়োগ বোর্ডের মাধ্যমে দেওয়া হয়েছে। তারপরও আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে, কর্তৃপক্ষ যে ব্যবস্থা নেবে আমি মাথা মেনে নেবো।’
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তোফাজ্জল হোসেন বলেন, আমরা ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনিয়মের একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আল মামুন/এসআর/এএসএম