আন্তর্জাতিক

হিটলারের বাড়ী নিয়ে বিপাকে অস্ট্রিয়া

হিটলারের জন্মস্থান বাড়ী নিয়ে বিপাকে পড়েছে অস্ট্রিয়া। দেশটির ব্রাউনাউ শহরের এই বাড়ি যাতে নব্য নাৎসিরা তীর্থস্থানে পরিণত করতে না পারে, সেজন্যে সত্তুরের দশক থেকে অস্ট্রিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাড়িটি ভাড়া নিয়ে অন্য কাজে ব্যবহার করেছে। শুরু থেকে বাড়িটি প্রতিবন্ধীদের দিবাযত্ন কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা। পরে গত তিন বছর আগে বাড়িটি কিনে নেন গ্যালিয়ন দ্য পামার নামে এক লোক। এর পর থেকে এটি খালি পড়ে আছে।সম্প্রতি রাশিয়ার একজন এমপি বাড়ীটি কিনে নিয়ে তা ধ্বংস করে ফেলার প্রস্তাব দেন।  কিন্তু এ প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছে বাড়ীর মালিক।জানা গেছে, ব্রাউনাউ শহরের মূল কেন্দ্র থেকে অল্প দূরে সতের শতকের উপর নির্মিত এ বাড়ীতেই ১৮৮৯ সালে ক্লারা হিটলারে গর্ভে জন্ম এডলফ হিটলারের। একসময় এই বাড়ীটি ছিল সরাইখানা। হিটলারের বয়স যখন মাত্র তিন বছর, তখন তারা এই বাড়ী ছেড়ে যান।স্থানীয় এক শিক্ষক ইয়োজফ কোগলার জানান, হিটলারের প্রতি সহানুভুতিশীল নব্য নাৎসিরা এখনো এই বাড়িটি দেখতে আসে। ইতিহাসবিদ ফ্লগিয়ান ক্যাটাংকো জানান, বাড়ীটির মালিক গ্যালিয়ন দ্য পামার এটির কোন রকম সংস্কার বা উন্নয়নের রাজী নয়।  এই বাড়ীটাকে কোন অফিস বা অন্য কোন কাজে ব্যবহারে তিনি রাজী নন। বাড়ীটায় কোন রকম সংস্কার করা হোক, সেটিও তিনি চান না।ফ্লগিয়ান ক্যাটাংকো মনে করেন, বাড়ী না থাকলেও সেই ইতিহাস মুছে যাবে না, লোকে ঠিকই জানবে যে হিটলার এই শহরেই জন্মেছিলেন। ব্রাউনাউ শহরের মানুষ স্বাভাবিকভাবেই শহরের এই ইতিহাস নিয়ে অস্বস্তিতে ভোগেন।শহরের ডেপুটি মেয়র ক্রিস্টিয়ান শিলটিয়েফ মনে করেন, এসব ভুলে সামনে এগিয়ে যাওয়ার সময় এসেছে। এই বিষয়টা নিয়ে শহরের মানুষ আসলে ত্যক্ত-বিরক্ত। কারণ ব্রাউনাউ শহরের ভাবমূর্তির জন্য এটা একটা সমস্যা। ১৯৩৮ সালে যখন হিটলার অস্ট্রিয়া দখল করে জার্মানির অংশ করে নিলেন, তখন লোকজন দুই হাত তুলে তাকে স্বাগত জানিয়েছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বহুদিন পর্যন্ত নাৎসিবাদের সেই গ্লানিময় ইতিহাস নিয়ে কথা বলতে চায়নি অস্ট্রিয়ানরা।ইতিহাসবিদ ফ্লগিয়ান ক্যাটাংকো মনে করেন, অতীতকে অস্বীকার করে এই সমস্যার মোকাবেলা করা যাবে না। তার মতে হিটলারের বাড়ী অবশ্যই একটা ঐতিহাসিক স্থান, সেটি কোন সমস্যা নয়। সমস্যাটা হলো কিভাবে এই ইতিহাসের মোকাবেলা করা হবে। ঠিক করতে হবে সেটাই।