জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম বলেছেন, সরকার বর্তমান সময়ের অর্থনীতির সমস্যাগুলো অ্যাড্রেস করতে পেরেছে। কিন্তু তার প্রোপার সলিউশন বা স্ট্র্যাটেজি বা যেই বৈষম্যহীন ভিশনের কথা আমরা বলছি, এক বছরের জন্য বাজেট হলেও বাস্তবভিত্তিক,নতুন বন্দোবস্তের যে আকাঙ্ক্ষা, অর্থনৈতিক রূপান্তরের আকাঙ্ক্ষার-এগুলোর পূর্ণ প্রতিফলন ঘটেনি বলে আমরা মনে করি।
Advertisement
মঙ্গলবার (৩ জুন) রাজধানীর বাংলামোটরে জাতীয় নাগরিক পার্টির অস্থায়ী কার্যালয়ে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট নিয়ে দলটির আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়ায় একথা বলেন তিনি।
নাহিদ ইসলাম বলেন, আগের যে অর্থনীতির কাঠামো, যে লুটপাটের অর্থনীতি এবং ঋণগ্রস্ত অবস্থা ছিল সেই অর্থনীতির বাস্তবতায় সরকারকে পরিচালিত হতে হচ্ছে এবং বাজেট উপস্থাপন করতে হয়েছে। আগের অর্থনীতির কাঠামোর অনেক ছাপ এই বাজেটের মধ্যে দেখা যাচ্ছে।
আরও পড়ুন
Advertisement
তিনি বলেন, গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে তৈরি হওয়া নতুন বাংলাদেশে আমাদের আকাঙ্ক্ষা ছিল ধনী-গরিবের আয় বৈষম্য কমে আসবে। কিন্তু এই বাজেটে আমরা আয় বৈষম্য কমানোর কার্যকর কোনো উদ্যোগ দেখিনি। করদাতার সংখ্যা যেটি আগে ছিল, সেটিই বিদ্যমান। যেসব ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কর ফাঁকি দেন, তাদের করের আওতায় আনার কার্যকর কোনো উদ্যোগ আমরা দেখিনি। ফলে নিম্নবিত্ত এবং মধ্যবিত্তের ওপর যে করের চাপ ছিল সেটি অব্যাহত থাকবে।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, কর্মসংস্থানের আন্দোলন থেকেই জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সূত্রপাত। ফলে তরুণদের ব্যাপকভাবে প্রত্যাশা বেকার সমস্যার সমাধান এবং কর্মসংস্থান বাড়ানোর উদ্যোগ থাকবে। কিন্তু সেটি আমরা দেখতে পাইনি। গত এক বছরে ২৬ লাখ বেকার বেড়েছে। কর্মসংস্থান বাড়াতে যে ধরনের বিনিয়োগ বাড়ানোর দরকার ছিল সেরকম কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ব্যাংকের ওপর নির্ভরশীলতা অব্যাহত রয়েছে। আগের আমলের মতোই ধারাবাহিকতা রয়েছে।
নাহিদ ইসলাম বলেন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি খাতে তেমন নতুনত্ব নেই। শিক্ষা খাতে ন্যূনতম জিডিপি ২ শতাংশ বরাদ্দ দেওয়া উচিত বলে আমরা মনে করছি, যেটা ১ দশমিক ৭ শতাংশ হয়েছে। একইভাবে স্বাস্থ্য ও অন্যান্য খাতেও বরাদ্দ বাড়েনি।
তিনি বলেন, বিগত ১৬ বছর ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থায় আমাদের শুধু রাজনৈতিক কাঠামোই ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি, ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাংলাদেশের অর্থনীতি। গণঅভ্যুত্থানের পরে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যখন দায়িত্ব নেয় তখন বাংলাদেশের অর্থনীতি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে ছিল। আমরা ব্যাংকগুলোর দুর্দশা দেখেছি, ঋণগ্রস্ত অবস্থা এবং লুটপাটের মধ্যে বাংলাদেশ ছিল।
Advertisement
এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, অভ্যুত্থানের পরে অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর দেশবাসীর প্রত্যাশা ছিল যে, অর্থনীতির একটা রূপান্তর ঘটবে। বৈষম্যহীন আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থা এবং বৈষম্যহীন সমাজের জন্য আমাদের যে প্রত্যাশা সেটি গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার একটা বিষয়।
এনএস/এএমএ/এমএস