পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের উত্তর ওয়াজিরিস্তান জেলার দত্তা খেল এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনীর বিশেষ অভিযানে ‘ভারত-সমর্থিত সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর’ অন্তত ১৪ জন সদস্য নিহত হয়েছেন। বুধবার (৪ জুন) পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ অধিদপ্তর (আইএসপিআর) এ তথ্য জানিয়েছে।
Advertisement
আইএসপিআর এক বিবৃতিতে জানায়, সোমবার (২ জুন) ও মঙ্গলবার (৩ জুন) গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে দত্তা খেল ‘ফিতনা-আল-খারিজ’ নামে জঙ্গি গোষ্ঠীটির সদস্যদের উপস্থিতি শনাক্ত করে অভিযান চালায় নিরাপত্তা বাহিনী। সংঘর্ষে ভারতীয় মদদপুষ্ট এই জঙ্গি গোষ্ঠীর ১৪ সদস্য নিহত হন।
অভিযান চলাকালে উভয় পক্ষের মধ্যে তীব্র গোলাগুলি হয় ও পাকিস্তানি বাহিনী সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে বলে জানানো হয়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এখনো এলাকায় পরিচ্ছন্নতামূলক অভিযান চলছে যাতে কোনো ভারতীয় মদদপুষ্ট জঙ্গি গা-ঢাকা দিয়ে থাকতে না পারে। পাকিস্তানি নিরাপত্তা বাহিনী ভারতের পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত সন্ত্রাসবাদকে সমূলে ধ্বংস করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
Advertisement
ইসলামাবাদভিত্তিক থিঙ্কট্যাংক পাকিস্তান ইনস্টিটিউট ফর কনফ্লিক্ট অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজ (পিআইসিএসএস) জানায়, মে মাসে পাকিস্তানে মোট ৮৫টি জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটে, যা এপ্রিলের ৮১টির তুলনায় কিছুটা বেশি। এসব হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ১১৩ জন, যাদের মধ্যে ৫২ জন নিরাপত্তা সদস্য, ৪৬ জন বেসামরিক নাগরিক, ১১ জন জঙ্গি ও ৪ জন শান্তি কমিটির সদস্য।
এর আগেও খাইবার পাখতুনখোয়া ও বেলুচিস্তান প্রদেশে ‘ভারত-সমর্থিত সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর’ অন্তত ১২ জনকে হত্যা করার দাবি করেছিল পাকিস্তান। তার মধ্যে পাখতুনখোয়ায় ৯ জন ও বেলুচিস্তানে ৩ জন নিহত হন।
পাকিস্তানি সেনাবাহিনী বলেছে, যতদিন না দেশের শেষ শত্রু নির্মূল হবে, ততদিন এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
‘ফিতনা-আল-খারিজ’ কে?
Advertisement
২০২৪ সালের জুলাই মাসে পাকিস্তান সরকার এক নির্দেশনার মাধ্যমে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তানকে (টিটিপি) ‘ফিতনা-আল-খারিজ’ হিসেবে ঘোষণা করে। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী, পাকিস্তানে যেকোনো জঙ্গি গোষ্ঠীকে এখন থেকে ‘খারিজি’ (বিতাড়িত) বলে অভিহিত করতে হবে।
আইএসপিআর প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরি একাধিকবার অভিযোগ করেছেন, ভারত রাষ্ট্রীয়ভাবে পাকিস্তানে সন্ত্রাসবাদ ছড়িয়ে দিচ্ছে ও সামরিক গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে এসব হামলা পরিচালিত হচ্ছে। তিনি বলেছেন, পহেলগামে পরবর্তী পরিস্থিতিতে ভারতের সামরিক বাহিনী পাকিস্তানে সন্ত্রাসী হামলা চালানোর আগে নিজেদের ‘অ্যাসেট’দের সক্রিয় করেছে। বেলুচিস্তান, খাইবার পাখতুনখোয়া ও অন্যান্য অঞ্চলে এদের তৎপরতা বেড়েছে।
২০২২ সালের নভেম্বর মাসে টিটিপি সরকারের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি ভেঙে দেওয়ার পর থেকেই পাকিস্তানে সন্ত্রাসী হামলার মাত্রা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে, বিশেষ করে খাইবার পাখতুনখোয়া ও বেলুচিস্তানে।
সূত্র: ডন
এসএএইচ