জাতীয়

বছরজুড়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের অভিযান, তবু কমে না দূষণ

বছরজুড়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের অভিযান, তবু কমে না দূষণ

• অভিযানে কমছে না দূষণ• আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয়ের অভাব• জনসচেতনতা ও রাজনৈতিক সদিচ্ছা জরুরি

Advertisement

বায়ুদূষণে বছরে অধিকাংশ সময় বিশ্বের শীর্ষ তিনে থাকে রাজধানী ঢাকা। ঘোষিত ‘নীরব’ এলাকায়ও শব্দদূষণ মাত্রাতিরিক্ত। পলিথিনের ব্যবহার আশঙ্কাজনক পর্যায়ে। খাল-নদী দখল নৈমিত্তিক ব্যাপার। এভাবেই চলছে নগরবাসীর জীবন। দূষণ রোধে পরিবেশ অধিদপ্তরের নিয়মিত অভিযানে হচ্ছে কোটি কোটি টাকা জরিমানা। তবুও কমছে না দূষণের মাত্রা।

নিয়ম ভাঙার অসুস্থ প্রতিযোগিতায় সারাদেশের পরিবেশই হয়ে উঠছে বিপজ্জনক। তবে ঢাকায় দেশের অন্য এলাকার তুলনায় দূষণ কয়েকগুণ বেশি। প্রশ্ন উঠছে—নিয়মিত অভিযান ও জরিমানা সত্ত্বেও কেন থামানো যাচ্ছে না এই দূষণযজ্ঞ?

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কেবল আইন প্রয়োগ বা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়ে এলে আমাদের এ সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব নয়। দূষণের মূল কারণগুলোর প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে। দূষণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম নিয়মিত তদারকি করতে হবে। এছাড়া পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিতকরণ, স্থানীয় জনগণকে সম্পৃক্ত করে সচেতনতা সৃষ্টি ও রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকার দাবি জানিয়েছেন তারা।

Advertisement

৬ বছরে ৯ হাজার ৬৬৬ অভিযান

পরিবেশ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, গত ছয় বছরে পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণে পরিবেশ অধিদপ্তর গৃহীত কার্যক্রমে ৯ হাজার ৬৬৬টি মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এসব অভিযানে মামলা হয়েছে ২২ হাজার ৫৩৭টি। জরিমানা আদায় ১৫৩ কোটি ৫৯ লাখ ৬৯ হাজার ৫৪২ টাকা। ৩৪৬ জনকে দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড।

দূষণ দিন দিন শহরকে বসবাসের অযোগ্য করে তুলছে। দূষণের উৎসগুলো চিহ্নিত করেই সেখানে কাজ করতে হবে। সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের গাফিলতিতে যে দূষণ হচ্ছে সেটাও খেয়াল রাখতে হবে। ফিটনেসবিহীন গাড়ি একদম তুলে দিতে হবে।- বাপা সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবীর

এছাড়া গত ছয় বছরে ভাঙা হয়েছে ১ হাজার ৯১৭টি ইটভাটা। ১১টি সিসা/ব্যাটারি গলানোর কারখানার কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে। শব্দদূষণ রোধে জব্দ করা হয়েছে ৫ হাজার ৮৯৫টি হর্ন।

পরিবেশ অধিদপ্তরের এনফোর্সমেন্ট অ্যান্ড মনিটরিং উইং থেকে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সবশেষ জুলাই ২০২৪ থেকে মার্চ ২০২৫ পর্যন্ত ৯ মাসে পরিবেশ অধিদপ্তর পরিচালিত ১ হাজার ৬৬৭টি মোবাইল কোর্ট অভিযানে বায়ুদূষণ, শব্দদূষণ, অবৈধ ইটভাটা, জলাশয় ভরাটসহ বিভিন্ন পরিবেশ দূষণকারী কার্যক্রমের বিরুদ্ধে ৩ হাজার ৭৩৯টি মামলা হয়েছে। জরিমানা আদায় করা হয়েছে ২৯ কোটি ৭৬ লাখ ৩৩ হাজার ২৪৩ টাকা।

Advertisement

গত ৯ মাসে বায়ুদূষণ রোধে যানবাহনের কালো ধোঁয়ার বিরুদ্ধে অভিযানে ২০টি মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হয়। এতে ১২৭টি মামলা করা হয়। মোট জরিমানা আদায় করা হয় ৪ লাখ ৭৩ হাজার ৫০০ টাকা।

এছাড়া ইটভাটার বিরুদ্ধে পরিচালিত অভিযানে ৬০৪টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে ১ হাজার ৪৩৫টি মামলা করা হয়। বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয় ১১ জনকে। এসব অভিযানে মোট জরিমানা আদায় হয় ২৭ কোটি ৪১ লাখ ৯৯ হাজার টাকা। একই সঙ্গে ৭৭৪টি অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করে দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন পরিবেশবান্ধব যান সাইকেলের লেন ঝুলছে শুধু ‘সাইনবোর্ডে’ উপকূলের প্লাস্টিক-পলিথিনের শেষ গন্তব্য সুন্দরবন যানবাহনের কালো ধোঁয়ায় ঢাকছে ঢাকা

নির্মাণসামগ্রীর মাধ্যমে দূষণের বিরুদ্ধে ১১৩টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে ২১২টি মামলা করা হয়। এসব অভিযানে মোট জরিমানা আদায় হয় ৪৮ লাখ ২৬ হাজার টাকা। সিসা ব্যাটারি কারখানার বিরুদ্ধে ১১টি অভিযানে ১৯টি মামলা করা হয়, জরিমানা দেড় লাখ টাকা।

মাত্রাতিরিক্ত বায়ুদূষণ

এত এত অভিযানের পরেও কমেনি ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার বায়ুদূষণ। দূষণ বিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠান বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্রের (ক্যাপস) তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের বায়ুদূষণ আগের আট বছরের জানুয়ারি মাসের গড় মানের তুলনায় ২৪ দশমিক ৫২ শতাংশ বেশি। আট বছরের (২০১৭-২৪) জানুয়ারি মাসের গড় দূষণের মান ছিল ২৫৫ দশমিক ৪৮। ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে তা ছিল ৩১৮। আগের বছরের জানুয়ারিতে এটি ছিল ৩০২।

আইনে যেমন সমস্যা আমাদের পলিসিতেও সমস্যা। চালকরা খুবই অসচেতন। তাদের ট্রেনিং জরুরি। কোনো একটা জায়গায় একসঙ্গে ৩০ থেকে ৪০টি গাড়ি যখন হর্ন দেয় তখন কতটুকু আওয়াজ হয়, কতটুকু ক্ষতি হয় সেই মেজারমেন্ট আমরা কখনোই করি না।- ওয়ার্ক ফর বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান গাউছ পিয়ারী

একই ভাবে বিগত ৯ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাস বায়ুদূষণের দিক থেকে ছিল শীর্ষে। এছাড়া ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের বায়ুদূষণ আগের আট বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের গড় মানের তুলনায় ১৪ দশমিক ৭৪ শতাংশ বেশি ছিল। ফেব্রুয়ারিতে ঢাকার বায়ুর মান ছিল ২৬২। এটি ৯ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। ২০২৪ সালের নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসও দূষণের দিক থেকে আগের ৮ থেকে ৯ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ বলে জানায় ক্যাপস।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবীর জাগো নিউজকে বলেন, ‘এই দূষণ দিন দিন শহরকে বসবাসের অযোগ্য করে তুলছে। দূষণের উৎসগুলো চিহ্নিত করেই সেখানে কাজ করতে হবে। সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের গাফিলতিতে যে দূষণ হচ্ছে সেটাও খেয়াল রাখতে হবে। ফিটনেসবিহীন গাড়ি একদম তুলে দিতে হবে। এর পরিবর্তে পরিবেশবান্ধব ইলেকট্রিক গাড়ির ব্যবহার বাড়ানো যেতে পারে।’

কমছে না শব্দদূষণ

অভিযানেও নিয়ন্ত্রণে আসেনি শব্দের মাত্রা। বিশ্লেষকরা বলছেন, ঢাকা শহরে যে হারে শব্দের মাত্রা বেড়ে যাচ্ছে মানুষ এই শব্দের কারণে দিন দিন তার শ্রবণশক্তি হারিয়ে ফেলছে। মানুষের মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাচ্ছে। শব্দদূষণের অন্যতম কারণ হচ্ছে অতিরিক্ত গাড়ির হর্ন। এছাড়া ইটভাঙার মেশিন, জেনারেটর, কলকারখানার সৃষ্ট শব্দ ইত্যাদি।

একজন মানুষের সহনীয় শব্দের মাত্রা হলো ৪৫ ডেসিবেল। অথচ ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকায় শব্দের মাত্রা ৬৮ থেকে ১৩০ ডেসিবেল বা অধিক মাত্রার শব্দ হচ্ছে।

ওয়ার্ক ফর বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট গত ১২ জানুয়ারি থেকে ২০ মার্চ পর্যন্ত ঢাকা শহরের ২০টি স্থানে শব্দের মাত্রা পরিমাপ করে। শব্দদূষণ পরিমাপকালে দেখা যায়, বেশিরভাগ শব্দের কারণ হলো বিভিন্ন গাড়ির হর্ন। অযথা গাড়ির হর্ন বাজিয়ে শব্দদূষণ করে, এছাড়া অ্যাম্বুলেন্সের হর্ন ইটভাঙার মেশিনের হর্ন তো আছেই।

সংস্থাটির তথ্য অনুযায়ী, ঢাকার ২০টি স্থানে সংগৃহীত শব্দের মাত্রা কোথাও সরকারি মানদণ্ড অনুযায়ী ছিল না। সব জায়গায় দূষণের মাত্রা ছিল অনেক বেশি।

অথচ শব্দদূষণ বিধিমালা-২০০৬ অনুযায়ী আবাসিক এলাকায় রাত ৯টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত শব্দের মাত্রা ৪৫ ডেসিবেল এবং দিনের অন্য সময় ৫৫ ডেসিবেল অতিক্রম করতে পারবে না। বাণিজ্যিক এলাকায় তা যথাক্রমে ৬০ ও ৭০ ডেসিবেল। হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালতের আশপাশে ১০০ মিটার পর্যন্ত নীরব এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা রয়েছে। সেখানে রাতে ৪০ ও দিনে ৫০ ডেসিবেল শব্দমাত্রা নির্ধারণ করে দেওয়া আছে।

অভিযান দিয়ে সবটুকু নির্মূল হয় না। এনফোর্স করে কোনো আইন বাস্তবায়ন হয় না। মানুষের সচেতনতা ছাড়া শব্দদূষণ কমবে না। বিশেষ করে যারা গাড়িচালক তারা অধৈর্য। শব্দদূষণ বিধিমালা সংশোধনের চেষ্টা চলছে। আমাদের উপদেষ্টা মহোদয় দূষণের বিরুদ্ধে এখন আন্তঃসমন্বয় করছেন।- পরিবেশ অধিদপ্তরের মনিটরিং ও এনফোর্সমেন্ট বিভাগের উপ-পরিচালক আহমেদ কবির

ডব্লিউ বিবি ট্রাস্টের তথ্যমতে, ঢাকার ২০টি স্থানের মধ্যে সবচেয়ে বেশি শব্দদূষণ মগবাজারে। সেখানে সকালে শব্দের মাত্রা সর্বোচ্চ ১৩০ ডেসিবেল, বিকেলে ১২৭ ডেসিবেল। সকালে সর্বনিম্ন ৭০ ডেসিবেল, বিকেলে ছিল ৮০ ডেসিবেল।

সবচেয়ে কম শব্দের মাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ এলাকায়। সেখানে সকালে ৯০ ডেসিবেল ও বিকেলে ৯৬ ডেসিবেল রেকর্ড করা হয়েছে।

এছাড়া রাজধানীর গুলিস্তান এলাকায় সকালে ৯৯ ডেসিবেল ও বিকেলে ১২২ ডেসিবেল, ধানমন্ডি-১৫ এলাকায় সকালে ৮৮ ডেসিবেল ও বিকেলে ৯০ ডেসিবেল।

এছাড়া ঢাকার মালিবাগ, মতিঝিল, মৎস্য ভবন, ফার্মগেট, নীলক্ষেত, পল্টন, কাকরাইল, তেজগাঁও সাতরাস্তা, কারওয়ান বাজার, মহাখালী, শাহবাগ, সায়েন্সল্যাব, আসাদগেট, বাংলামোটর, ধানমন্ডির কোথাও সকাল-বিকেলে শব্দের মাত্রা সরকার নির্ধারিত ডেসিবেল অনুযায়ী ছিল না। সব জায়গায় শব্দের মাত্র ১০০ ডেসিবেলের বেশি ছিল।

শব্দদূষণের বিরুদ্ধে অভিযান

গত ৯ মাসে শব্দদূষণের বিরুদ্ধে অভিযানে ২৬৯টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে পরিবেশ অধিদপ্তর। এসব অভিযানে ৭৩৬টি মামলা করা হয়। জরিমানা আদায় করা হয় ১ লাখ ৪৭ হাজার ৮শ টাকা। ২৬৯টি অভিযানে ১৬৮টি হাইড্রোলিক হর্ন জব্দ করা হয়।

শব্দদূষণের শাস্তি

আইনে শাস্তি হিসেবে বলা আছে, আইন অমান্য করলে প্রথমবার অপরাধের জন্য এক মাস কারাদণ্ড বা অনধিক পাঁচ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড এবং পরবর্তী অপরাধের জন্য ছয় মাস কারাদণ্ড বা অনধিক ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হওয়ার বিধান রয়েছে।

শব্দদূষণ বেশি নীরব এলাকায়

পরিবেশ অধিদপ্তর সারাদেশে ১২টি নীরব এলাকা ঘোষণা করেছে। ঢাকায় পাঁচটি। সবশেষ যুক্ত হয়েছে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকা। আগে নীরব এলাকা ঘোষণা করা হয় সচিবালয়, আগারগাঁও, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এলাকা।

বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্রের (ক্যাপস) একটি গবেষণায় দেখা যায়, নীরব এলাকার কোনোটিতেই আইন অনুযায়ী নীরব এলাকা গঠিত হয়নি। সবগুলোতেই শব্দের মাত্রা বেশি। নীরব এলাকা সচিবালয়ের ১২টি লোকেশনে শব্দের মাত্রা গড়ে ৭৯ দশমিক ৫ ডেসিবেল। জাতীয় সংসদ এলাকায় ৭১ দশমিক ৮৬ ডেসিবেল, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় এলাকায় ৭৫ দশমিক ৫৮ ডেসিবেল, আগারগাঁও এলাকায় ৭২ দশমিক ৮৬ ডেসিবেল পাওয়া গেছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, শব্দদূষণ রোধে যে দুটি আইন রয়েছে সেটি ভালো ভূমিকা রাখতে পারছে না। আইনের সংজ্ঞা অনুযায়ী পুরো ঢাকা শহরই নীরব এলাকা। কোথাও হর্ন দেওয়া যাবে না। আইন প্রয়োগ করতে গেলে এটা বড় সীমাবদ্ধতা মনে করছেন তারা। তাই আইনের সংশোধন জরুরি। পাশাপাশি মানুষের সচেতনতা প্রয়োজন।

ওয়ার্ক ফর বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান গাউছ পিয়ারী জাগো নিউজকে বলেন, ‘আইনে যেমন সমস্যা আমাদের পলিসিতেও সমস্যা। ড্রাইভাররা খুবই অসচেতন। তাদের ট্রেনিং জরুরি। কোনো একটা জায়গায় একসঙ্গে ৩০ থেকে ৪০টি গাড়ি যখন হর্ন দেয় তখন কতটুকু আওয়াজ হয়, কতটুকু ক্ষতি হয় সেই মেজারমেন্ট আমরা কখনোই করি না। বিশেষ করে স্কুল, হাসপাতাল, মসজিদ-মন্দির এলাকায় সবচেয়ে বেশি অ্যালার্ট থাকতে হবে চালকদের।’

তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি সাধারণ মানুষ যারা পরিবহনে চলেন, তারা চালকের পেছনে বসে চালককে সচেতন করা নৈতিক দায়িত্ব। রাস্তা পারাপারের সময়েও আমরা দেখি, গাড়িগুলো অযথা হর্ন দেয়। সিগন্যাল ছাড়ার সময় গাড়িগুলো হর্ন দিতে থাকে। এই বিষয়গুলোতে ট্রাফিক ম্যানেজমেন্টকে কঠোর হতে হবে। শব্দদূষণের কারণে মাথাব্যথা, অস্থিরতা তৈরি হয়। মানসিক বিষণ্নতার অন্যতম কারণ। পশু-পাখিরাও ভুক্তভোগী। ব্যাহত হয় উদ্ভিদের পরগায়ন।’

যা বলছে পরিবেশ অধিদপ্তর

পরিবেশ অধিদপ্তরের মনিটরিং ও এনফোর্সমেন্ট বিভাগের উপ-পরিচালক আহমেদ কবির জাগো নিউজকে বলেন, ‘অভিযান দিয়ে সবটুকু নির্মূল হয় না। এনফোর্স করে কোনো আইন বাস্তবায়ন হয় না। মানুষের সচেতনতা ছাড়া শব্দদূষণ কমবে না। বিশেষ করে যারা গাড়িচালক তারা অধৈর্য। শব্দদূষণ বিধিমালা সংশোধনের চেষ্টা চলছে। আমাদের উপদেষ্টা মহোদয় দূষণের বিরুদ্ধে এখন আন্তঃসমন্বয় করছেন।’

আরএএস/এএসএ/এমএফএ/এএসএম