দেশজুড়ে

সড়কে সেনাবাহিনীর কৃতিত্বে যানজটমুক্ত ময়মনসিংহ

সড়কে সেনাবাহিনীর কৃতিত্বে যানজটমুক্ত ময়মনসিংহ

ময়মনসিংহের সড়ক-মহাসড়কগুলোর বিভিন্ন এলাকায় বছরের দুইটি ঈদে যানজটের সৃষ্টি হয়। বিভিন্ন মোড়ে যানজট তীব্র আকার ধারণ করে। এতে ঘরমুখো যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন। তবে সেনাবাহিনীর তৎপরতায় গত ঈদে সড়ক ছিল যানজটমুক্ত। ফলে যানজটের ভোগান্তি ছাড়াই গন্তব্যে যেতে পেরেছেন সব শ্রেণি-পেশার মানুষ। এবারও সড়কে নেই যানজট, যার মূলে রয়েছে সেনাবাহিনীর তৎপরতা।

Advertisement

শুক্রবার (৬ জুন) রাত ৯টার দিকে নগরীর পাটগুদাম ব্রিজ মোড়ে গিয়ে দেখা যায়, ট্রাফিক ও থানা পুলিশের পাশাপাশি যানজট নিরসনে কাজ করছেন সেনাবাহিনীর সদস্যরা। সেনাবাহিনী মোড়ের আশপাশে কোনো ধরনের যানবাহন থামতে দিচ্ছেন না তারা। গুটিকয়েক গাড়ি থামতে চাইলে যাত্রী ওঠানোর যৎসামান্য সময় দিচ্ছেন সেনা সদস্যরা। দ্রুত মোড় ত্যাগ করতে যানবাহনের চালকদের বাধ্য করা হচ্ছে।

যাত্রী ও স্থানীয়রা জানান, ঈদের কয়েকদিন আগে থেকে সড়ক-মহাসড়কে যানবাহনের চাপ কয়েকগুণ বেড়ে যায়। সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট। এমন চিত্র বহু বছর ধরে দেখে আসলেও গত ঈদুল ফিতরে যানজট ছিল না। কারণ, ওই ঈদের আগে পুলিশ ও প্রশাসন চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করেছে। তখন সড়কে যানজট না থাকায় পুলিশ ও প্রশাসন প্রশংসাও কুড়িয়েছে। গত কোরবানির ঈদে (ঈদুল আজহা) পুলিশ ও প্রশাসনের চেষ্টার পাশাপাশি সেনাবাহিনীর তৎপরতায় যাত্রীরা সন্তুষ্ট হন। কারণ, সড়কে ছিল না যানজট। এবারও সেনাবাহিনী বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কসহ যানজট সৃষ্টি হয় এমন মোড়গুলোতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ায় যানজটের কবল থেকে মুক্তি পেয়েছে নাড়ির টানে ঘরমুখো মানুষ।

পাটগুদাম ব্রিজ মোড়ে বাসে ওঠার জন্য দাঁড়িয়ে ছিলেন মাইনু মিয়া। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, সিএনজিচালিত অটোরিকশা দিয়ে ভালুকা থেকে পাটগুদাম ব্রিজ মোড় পর্যন্ত এসেছি। সড়কের কোথাও যানজট ছিল না। সড়কে পুলিশ কিংবা ট্রাফিক পুলিশের তৎপরতা যতই থাকুক, আমি মনে করি, সেনাবাহিনীর ভয়ে যত্রতত্র গাড়ি থামাননি চালকরা। এতে যানজটের সৃষ্টি হয়নি।

Advertisement

একই মোড়ে দাড়িয়ে থাকা ইদ্রিস আলী নামের একজন মধ্যবয়সী বলেন, চালক ও হেলপাররা সেনাবাহিনীকে বেশি ভয় পান। এজন্য তারা যেখানে সেখানে গাড়ি থামাচ্ছেন না। সেনাবাহিনী যদি সড়কে অবস্থান না করতো, তাহলে সড়ক যানজটমুক্ত করতে পুলিশ ও প্রশাসনকে বেগ পেতে হতো।

সড়কে যানজট না থাকার কারন সম্পর্কে জানতে চাইলে আলম এন্টারপ্রাইজ বাসের চালক হুমায়ুন কবির বলেন, ময়মনসিংহের সড়কগুলোর কোথাও যানজট নেই। বিভিন্ন স্থানে সেনাবাহিনী অবস্থান করছে। সেনাবাহিনী দেখলেই সতর্ক হয়ে যাই। কারণ, আমার ভুলের জন্য আমাকে কিংবা হেলপারকে যেকোনোভাবে শাস্তি দিতে পারে। এসব দিক চিন্তা করে যত্রতত্র গাড়ি থামাই না। আমার মতো অন্য চালকরাও সেনাবাহিনীর বিষয়টি মাথায় রেখে গাড়ি চালাচ্ছেন। ফলে সড়কে যানজট নেই বললেই চলে।

আব্দুস সাত্তার নামের আরেকটি বাসের চালক বলেন, সড়কে যানজট না থাকায় যাত্রীরা স্বস্তি নিয়ে বাড়ি ফিরছেন। এতে আমরাও (চালকরা) খুশি। কারণ, তীব্র যানজটের কবলে পড়লে অনেক তেল পোড়ে। এতে টাকাও বেশি খরচ হয়।

ময়মনসিংহ ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক আবু নাছের মো. জহির বলেন, যানজট নিরসনে আমাদের চেষ্টার কমতি ছিল না। ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা দিনরাত কাজ করেছেন। পুলিশ, প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর চেষ্টায় যানজটের ভোগান্তি ছিল না।

Advertisement

এমডিকেএম/এএমএ