সাহিত্য

সিবগাতুর রহমানের ছড়া: আমাদের ছেলেবেলা

সিবগাতুর রহমানের ছড়া: আমাদের ছেলেবেলা

আয় খোকা-খুকি শুনবি যদি আমাদের ছেলেবেলা,ছিল না তখনো এত আধুনিক যন্ত্রের সব খেলা।কাটিয়েছি কত স্বর্ণালি দিন আমরা মোদের গাঁয়ে,যে গাঁয়ের সাথে নারীর বাঁধন যেমন পুতে ও মায়ে।

Advertisement

একসাথে সবে বহুদূর হেঁটে যাইতাম পাঠশালায়,দিনমান ধরি পাঠ শেষ করি ফিরিতাম শেষবেলায়।দুপুরবেলায় খেলতাম লাই পদ্মা দিঘির জলে,বিকালে আবারও মিতালি মাঠে মিলতাম সকলে।

সন্ধ্যার আগে ফিরতাম ঘরে মোয়াজ্জিনের ডাকে,কুপির আলোয় পাঠ শেষ করে কিচ্ছা শুনেছি বাঁকে।জম্পেশ কত আড্ডা জমতো কেবিন তলির ছায়,দিনগুলো যেন আষ্টেপৃষ্ঠে আজও মিশে আছে গায়।

বিলের জলেতে মাছ ধরে কাটিয়েছি কত বেলা,মাঠে ছেড়ে দিয়ে গরুর পাল জমতো দারুণ খেলা।ঝড়ের দিনে ফলের বাগানে আম কুড়ানোর সুখ,বাজ পড়া সেই দিনের কথা ভাবলেই কাঁপে বুক।

Advertisement

বৈশাখ মাসে মৌ মৌ করতো নতুন ধানের ঘ্রাণ,আম-কাঁঠালের মধুর রসে আকুল হতো প্রাণ।তিতাসের বুকে থই থই ঢেউয়ে ভরা বর্ষার জলে,রং-বেরঙের নৌকার বাইচ দেখতাম সবে মিলে।

ভরা বর্ষায় পূর্ণিমার রাতে ঘুরতাম ডিঙি না’য়ে,কথা বলতাম জ্যোৎস্নার সাথে উদাস করা বা’য়ে।শরতের আকাশে ঘুড়ি উড়িয়েছি বন্ধুরা সব মিলে,মেঘের কাছে পাঠিয়েছি চিঠি রঙিন সুতার রিলে।

ভরদুপুরে মিঠা মিঠা রোদে ঝিরিঝিরি বায়ু সনে,চরকা বুড়ির সুতার পেছনে দৌড়াতাম আনমনে।মঞ্চনাটক দেখিয়া কেটেছে কত না শীতের রাতি,মাঠের কোণে সকলে মিলে খেলেছি চড়ুইভাতি।

শীতের সকালে মিষ্টি রোদে উঠানে বিছিয়ে পাটি,ভাই-বোন সবে একসাথে বসে পড়তাম পরিপাটি।মায়ের হাতের জাদুর ছোঁয়ায় দেখতো দুই নয়ন,নানান জাতের শীতের পিঠায় ভরে উঠতো মন।

Advertisement

আজকে তোমরা কম্পিউটারে খেলছো ঘরের কোণে,চোখ ভিজে ওঠে সোনালি সেই দিনগুলো হলে মনে।সেই দিনগুলো আজও মনে পড়ে ভুলতে পারি না,ছেলেবেলা আর মায়ের মতোন আমার সোনার গাঁ।

এসইউ/জেআইএম