কয়েকদিনের দাবদাহে পুড়ছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ। কাঠফাটা রোদে অস্থির জনজীবন। এমনই একসময়ে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছে ‘বন্ধু ফাউন্ডেশন’ নামের একটি বেসরকারি সংস্থা। সুর্নিমল পরিবেশ নিশ্চিতে চাষিদের বৃক্ষরোপণে নগদ অর্থ দিয়ে সহায়তা করছে সংস্থাটি। একটি চারা রোপণে চাষি পাচ্ছেন ৬০ টাকা। এতে রক্ষা হবে পরিবেশ, লাভবান হবেন চাষি। এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
Advertisement
শিবগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা একটি স্কুলের সহকারী শিক্ষক এমদাদ হোসেন। তিনি নাচোল উপজেলার এক হাজার আমগাছের চারা রোপণ করেছেন। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘গতবছর এক হাজার আমগাছের চারা রোপণ করেছিলাম। পরে বন্ধু ফাউন্ডেশনের সদস্যরা এসে আমার বাগান পরিদর্শন করে গেছেন। চলতি বছরে এক হাজার আমগাছ রোপণের জন্য তারা আমাকে ৪০ হাজার টাকা দিয়েছেন।েএতে আমগাছের পরিচর্যার খরচ প্রায় উঠে গেছে।’
ধাইনগর ইউয়নের বাসিন্দা শরিফুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ‘জন্ম থেকেই আম ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। সেই ধারাবাহিকতায় দুই হাজার আমগাছের চারা রোপণ করেছিলাম। এরমধ্যে হঠাৎ করে পরিচয় হয় এক এনজিও কর্মকর্তার সঙ্গে। তিনি আমাকে জানান, এই দুই হাজার গাছ পরিচর্যার জন্য তিনি আমাকে ৮০ হাজার টাকা দেবেন। কথা অনুযায়ী তারা আমার বাগান পরিদর্শন করে ৮০ হাজার টাকা দিয়েছেন।’
শিবগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা সাব্বু খান। তিনিও এক হাজার কাটিমন আমের চারা লাগিয়েছেন। পরে বন্ধু ফাউন্ডেশনের আবেদন করে পেয়েছেন ৪০ হাজার টাকা।
Advertisement
বন্ধু ফাউন্ডেশনের জেলা সমন্বয়ক আসহারুল ইসলাম জানান, শুধু চাঁপাইনবাবগঞ্জ নয়, সারাদেশে ৫১ প্রজাতির গাছ লাগাতে সহায়তা করছে সংস্থাটি। আগামী এক বছরে এক কোটির বেশি গাছ লাগাতে চান তারা। এতে যেমন কমবে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, তেমনি লাভবান হবেন চাষিরা।
তিনি বলেন, ‘জাপান ও কোরিয়ার অর্থায়নে এই প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জে গত তিন বছরে এক লাখ ৩০ হাজার বৃক্ষরোপণে অর্থ সহায়তা দিয়েছে সংস্থাটি। আরও দুই লাখের বেশি বৃক্ষরোপণ করে অর্থ সহায়তার জন্য আবেদন করেছেন এখানকার ৩২৯ জন চাষি। পর্যায়ক্রমে তাদেরও অর্থ সহায়তা দেওয়া হবে।’
শিবগঞ্জ ম্যাংগো প্রোডিউসার কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল খান শামীম বলেন, আগামীতে এসব গাছ থেকে ব্যাপক পরিমাণ ফল বিদেশে রপ্তানি হবে। কর্মসংস্থান হবে হাজারও মানুষের। এতে স্থানীয় অর্থনীতি চাঙা হবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মো. ইয়াসিন আলী বলেন, আমগাছ রোপণে উদ্বুদ্ধ করছে সংস্থাটি। এতে দিন দিন বাড়ছে আমসহ বিভিন্ন ফলের গাছ। এসব গাছের ফল বিদেশে রপ্তানি হলে অর্জন হবে বৈদাশিক মুদ্রা। যা ভূমিকা রাখবে জেলার অর্থনীতিতে।
Advertisement
চাঁপাইনবাবগঞ্জ বন সংরক্ষণের সহকারী পরিচালক মো. আবু সাঈদ বলেন, যে কোনো স্থানে গাছ বাড়লে নিশ্চিত হবে সুর্নিমল বাতাস। গাছ পরিবেশের জন্য অত্যন্ত উপকারী। তাই পরিবেশ রক্ষায় গাছ লাগানোর বিকল্প নেই।
সোহান মাহমুদ/এসআর/জিকেএস