ধর্ম

মায়ের কাজা রোজা সন্তানরা আদায় করতে পারবেন?

মায়ের কাজা রোজা সন্তানরা আদায় করতে পারবেন?

রোজা ইসলামের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ফরজ আমল, ইসলামের মূল পাঁচ স্তম্ভের অন্তর্ভুক্ত। কোনো অসুস্থতা, অসুবিধা বা অবহেলায় রোজা ছুটে গেলে যত দ্রুত সম্ভব ওই রোজার কাজা আদায় করা উচিত।

Advertisement

কেউ যদি রোজা রাখতে পুরোপুরি অক্ষম হন, তাহলে তিনি রোজার বদলে ফিদিয়া দেবেন অর্থাৎ প্রতিটি রোজার জন্য কোনো দরিদ্র ব্যক্তিকে দুই বেলা খাবার খাওয়াবেন অথবা দুবেলা খাবারের মূল্য দিয়ে দেবেন।

রোজা বা নামাজের কাজা আদায় করার আগেই যদি কারো মৃত্যু হয়ে যায়, সন্তানদের সেটা জানা থাকে, তাহলে তারা তার পক্ষ থেকে রোজা রেখে তার কাজা আদায় করতে পারবেন না। মায়ের রোজা ছেলে বা মেয়ে রাখতে পারবেন না। বাবার রোজাও ছেলে বা মেয়ে রাখতে পারবেন না।

জীবিত বা মৃত কোনো কোনো ব্যক্তির নামাজ-রোজা আরেকজন পড়ে বা রেখে কাজা আদায়ের সুযোগ ইসলামে নেই। আবদুল্লাহ ইবনে ওমরকে (রা.) অন্যের পক্ষ থেকে রোজা রাখা বা নামাজ আদায় করা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেছিলেন,

Advertisement

لاَ يَصُومُ أَحَدٌ عَنْ أَحَدٍ، وَلاَ يُصَلِّي أَحَدٌ عَنْ أَحَدٍ.কেউ অন্যের পক্ষ থেকে রোজা রাখবে না এবং অন্যের পক্ষ থেকে নামাজ পড়বে না। (মুআত্তা ইমাম মালেক: ৯৪)

তবে সন্তানরা চাইলে মৃত মা বা বাবার কাজা রোজার জন্য তাদের পক্ষ থেকে ফিদিয়া আদায় করতে পারেন।

মৃত ব্যক্তি যদি তার সম্পদ থেকে তার রোজার ফিদিয়া আদায়ের জন্য অসিয়ত করে যান, তাহলে তার এক তৃতীয়াংশ সম্পদ থেকে কাফফারা আদায় করা সন্তান বা আত্মীয়দের ওপর আবশ্যক।

আর যদি তার কোনো সম্পদ না থাকে, বা তিনি সম্পদ রেখে গেছেন কিন্তু কোনো কাফফারা আদায়ের অসিয়ত করে যাননি, তাহলে মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে ফিদিয়া আদায় করা সন্তান বা আত্মীয়দের জন্য জরুরি নয়। তবে ফিদিয়া আদায় করে দেওয়া উত্তম। ফিদিয়া আদায় করলে মৃত ব্যক্তির উপকৃত হবে বলে আশা করা যায়।

Advertisement

যেভাবে রোজার ফিদিয়া আদায় করবেন

মৃত ব্যক্তির রোজার ফিদিয়া আদায় করতে চাইলে তার জিম্মায় থাকা প্রতিদিনের রোজার জন্য সাদকায়ে ফিতরের সমান খাবার বা তার মূল্য অর্থাৎ গম হলে সর্বনিম্ন ১ কেজি ৬৩২.৯৬ গ্রাম গম বা তার মূল্য এবং জব খেজুর, পনির ও কিশমিশ হলে সর্বনিম্ন ৩ কেজি ২৬৫.৯২ গ্রাম বা তার মূল্য কোনো দরিদ্র ব্যক্তিকে দান করতে হবে।

উল্লিখিত খাবারগুলোর বাজারদর অনুযায়ী টাকায় ফিদিয়া ও সদকাতুল ফিতরের সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ মূল্য নির্ধারিত হয়। এ বছর (১৪৪৬ হিজরি) বাংলাদেশ সরকারের সদকাতুল ফিতর নির্ধারণ কমিটির পক্ষ থেকে বাংলাদেশে সাদাকাতুল ফিতরের পরিমাণ জনপ্রতি সর্বনিম্ন ১১০ টাকা ও সর্বোচ্চ ২ হাজার ৮০৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল।

যারা জাকাত গ্রহণ করতে পারেন, তাদের ফিদিয়া দেওয়া যায়। অর্থাৎ দরিদ্র, অভাবগ্রস্ত বা ঋণগ্রস্ত ইত্যাদি ব্যক্তিদের ফিদিয়া আদায়ের নিয়তে খাবার খাওয়ালে বা তার মূল্য দান করলে ফিদিয়া আদায় হয়ে যায়।

ওএফএফ/এএসএম