সেই বেদনামাখা ছবিটা আর্জেন্টিনা ও লিওনেল মেসির ভক্তদের হৃদয়ে ক্ষত হয়ে বেঁচেছিল ২০২২ সাল পর্যন্ত। ২০২২ সালে কাতারের লুসাইল স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপ ট্রফির ছোঁয়া পাওয়ার মধ্য দিয়ে চিরদিনের আক্ষেপ ঘুচিয়েছিলেন মেসি। ৩৬ বছর পর বিশ্বকাপ শিরোপা ঘরে তুলতে পারলো আর্জেন্টিনা।
২০২২ সালের ৮ বছর আগে, ঠিক আজকের দিনে হৃদয় ভেঙেছিল লিওনেল মেসি এবং আর্জেন্টিনার। পোডিয়ামে যখন রানারআপ দলের সদস্য হিসেবে রুপালি মেডেলটা নিতে যাচ্ছিলেন মেসি, তখনকার একটি ছবি ছিল হৃদয়বিদারক। বিশ্বকাপ ট্রফির পাশ দিয়ে মাথা নিচু করে যাচ্ছিলেন মেসির মত বিশ্বসেরা একজন তারকা, সে ছবিটা হৃদয়ে রক্তক্ষরণ ঘটিয়েছিল আর্জেন্টিনা এবং মেসির কোটি ভক্তের।
২০১৪ সালের ১৪ জুলাই, রিও ডি জেনিরোর মারাকানা স্টেডিয়ামে ফুটবল বিশ্বের আরও একটি ট্র্যাজেডি ঘটেছিল। ১৯৫০ সালে এই মারাকানাতেই ঘটেছিল ফুটবল ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ট্র্যাজেডির ঘটনা। উরুগুয়ের কাছে হেরে ব্রাজিলের বিশ্বকাপ জিততে না পারার পর ঘটা মারাকানাজ্জো নামে সেই ট্র্যাজেডির ঘটনা ব্রাজিলিয়ানদের জাতীয় ইতিহাসে অন্তর্ভূক্ত হয়ে আছে।
২০১৪ সালের বিশ্বকাপের ফাইনালে জার্মানির কাছে হেরে আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জিততে না পারার ঘটনা আর্জেন্টাইন এবং মেসি ভক্তদের জন্য এক ট্র্যাজেডি।
ম্যাচের ১১৩তম মিনিটে এই শটেই মেসিদের হৃদয়ভাঙা গোলটি করেছিলেন মারিও গোৎসে
সেমিফাইনালে ব্রাজিলকে ৭-১ গোলে হারিয়ে ফাইনালে উঠে এসেছিল জার্মানি। অন্যদিকে নেদারল্যান্ডসকে হারিয়ে ফাইনালে ওঠে লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনা। ১৯৯০ বিশ্বকাপের পর মেসির হাত ধরে এই প্রথম ফাইনালে উঠলো আলবিসেলেস্তারা। মেসির প্রথমবার ফাইনালে ওঠার পর তার মত একজন বিশ্বসেরা ফুটবলারের হাতেই বিশ্বকাপ শিরোপাটা দেখতে চেয়েছিল অনেকে।
কিন্তু জার্মানি ছিল খুবই টাফ একটি দল। একঝাঁক দুর্ধর্ষ তারকা ফুটবলারের সমন্বয়ে গড়া জোয়াকিম লো’র জার্মানি। অন্যদিকে আলেহান্দ্রো সাবেলার অধীনে মেসিই একমাত্র নির্ভরযোগ্য ভরসা আর্জেন্টিনা দলে। অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া ইনজুরির কারণে ফাইনাল খেলতে পারেননি। দলে ছিলেন গঞ্জালো হিগুয়াইন। যাকে অনেকেই মজা করে বলতেন ‘মিস্টার মিস মাস্টার’। হিগুয়াইন যে সহজ সুযোগগুলো মিস করেছিলেন, সেগুলো মিস না করলে হয়তো ২০১৪ সালেই গল্পটা ভিন্নভাবে লেখা যেতো।
ফাইনাল হারের পর নতমুখে হতাশ মেসি
তবুও, যোগ্য দল হিসেবেই দুটি দল উঠে এসেছিল ফাইনালে। শিরোপার লড়াইটাও হয়েছিল হাড্ডাহাড্ডি। নির্ধারিত সময় খেলা ছিল গোলশূন্য ড্র। খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। সেখানেও গোল হতে বেশ সময় লাগছিলো। অতিরিক্ত সময়ের ২৩ মিনিট পর্যন্ত গোল হচ্ছিল না। অবশেষে ১১৩তম মিনিটে মিরোস্লাভ ক্লোসার পরিবর্তে মাঠে নামা মারিও গোৎসের দুর্দান্ত এক গোলে বিশ্বকাপ জয় নিশ্চিত করে জার্মানি।
সেই বিশ্বকাপের পর শোকে পাথর হয়ে গিয়েছিলেন লিওনেল মেসি। তিনি নিজেই স্বীকার করেছিলেন, বেশ কিছুদিন ঘুমাতেও পারেননি।
আইএইচএস/