ফরিদপুর-ভাঙ্গা মহাসড়ক যেন মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে। ফরিদপুরের রাজবাড়ী রাস্তার মোড় থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত প্রায় ৩২ কিলোমিটার সড়কজুড়ে অসংখ্য খানাখন্দ তৈরি হয়েছে। এতে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। পদ্মা সেতু চালুর পর সড়কের ওপর যানবাহনের চাপ বহুগুণ বাড়লেও এটি চার লেনে উন্নীত করার প্রস্তাবনা এখন পর্যন্ত আলোর মুখ দেখেনি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৩২ কিলোমিটার মহাসড়কের অবস্থা পুরোটাই নাজুক। বাখুণ্ডায় প্রায় ২০০ মিটার, মহিলা রোড এলাকায় ৩০০ মিটার এবং তালমা মোড়ে ১০০ মিটার অংশে দুর্ভোগের শেষ নেই। চলতি সপ্তাহে টানা বৃষ্টিতে সড়কের বিভিন্ন স্থানে নতুন করে ছোট-বড় অসংখ্য গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে যানবাহন চলাচলের জন্য চরম বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে সড়কটি।
মহাসড়কে নিয়মিত চলাচলকারী ইকবাল মাহমুদ ক্ষোভ প্রকাশ করে জাগো নিউজকে বলেন, ‘এটি কি কোনো সড়ক? মৃত্যুভয় মাথায় নিয়ে চলাচল করতে হয়। ঝাঁকুনিতে শরীর ব্যথা হয়ে যায়। প্রতিদিনই দুর্ঘটনা ঘটেছে। অথচ সড়কটি নিয়ে কারও মাথাব্যথা নেই।’
আলী হোসেন মাতুব্বর নামের আরেক চালক বলেন, ‘ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ৮০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে যেখানে দেড় ঘণ্টা লাগে, সেখানে ভাঙ্গা গোল চত্বর থেকে ফরিদপুরের রাজবাড়ী রাস্তার মোড় পর্যন্ত ৩২ কিলোমিটার পথ যেতে প্রায় সময় লাগে দুই ঘণ্টা। সড়কের অবস্থা চরম বেহাল। ধীরগতিতে গাড়ি চালাতে হয়। উল্টে যাওয়ার ঝুঁকি তো আছেই।’
অ্যাম্বুলেন্সচালক কবীর হোসেন বলেন, ‘মুমূর্ষু রোগীদের নিয়ে দিনে একাধিকবার ফরিদপুর শহরে আসতে হয়। কিন্তু এই মহাসড়কের যে অবস্থা, তাতে গাড়ি চালানো কঠিন। নগরকান্দা থেকে ফরিদপুর আসতে আগে যেখানে আগে ৩০ মিনিট সময় লাগতো, এখন কমপক্ষে দেড় ঘণ্টার বেশি সময় লাগে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফরিদপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী খালিদ সাইফুল্লাহ সরদার বলেন, ‘ভাঙ্গা গোলচত্বর থেকে ফরিদপুর নদী গবেষণা পর্যন্ত মহাসড়ক সংস্কারে এরইমধ্যে টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে কার্যাদেশও দেওয়া হয়েছে। তবে গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টির কারণে ঠিকাদার কাজ শুরু করতে পারছেন না। দুর্ঘটনা এড়াতে ছোট গাড়িগুলোর চলাচলের জন্য রাস্তার দুপাশ প্রশস্ত করে সংস্কারের জন্য ঠিকাদারকে ৯ মাস সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘চার লেন প্রকল্পের বিষয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণ শাখা ভূমি অধিগ্রহণের কাজ করছে। ভূমি অধিগ্রহণের কাজ ধীরগতিতে চলায় প্রকল্পের অগ্রগতি ব্যাহত হচ্ছে।
ফরিদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. সোহরাব হোসেন বলেন, চার লেন প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণের কাজ স্বাভাবিক গতিতেই চলছে। এটি সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। তারপরও ভূমি অধিগ্রহণের কাজের অগ্রগতির জন্য দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এন কে বি নয়ন/এসআর/এমএস