খেলাধুলা

পাকিস্তানকে হারিয়ে ৯ বছরের আক্ষেপ ঘুচাতে পারবে বাংলাদেশ?

পাকিস্তানকে হারিয়ে ৯ বছরের আক্ষেপ ঘুচাতে পারবে বাংলাদেশ?

ইতিহাসের সাক্ষ্য আর রেকর্ড বিবরণী অনুসারে, পাকিস্তানের বিপক্ষে এখন পর্যন্ত টি টোয়েন্টিতে মাত্র তিনবার জিতেছে বাংলাদেশ। তথ্যটা ভুল কিংবা মিথ্যা নয়। তৃতীয় জয়টি আবার কোনো দ্বিপাক্ষিক সিরিজে নয়। এমনকি ক্রিকেটের কোনো প্রতিযোগিতামূলক কিংবা প্রতিষ্ঠিত আসরেও না।

Advertisement

পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের তৃতীয় জয়টি আসে এশিয়ান গেমস ক্রিকেটে। ২০২৩ সালে চীনের হাংজুতে অনুুষ্ঠিত মহাদেশীয় ক্রীড়া আসরে অন্যান্য খেলার সঙ্গে ক্রিকেটও অন্তর্ভূক্ত ছিল। ইতিহাস জানাচ্ছে, টি-টোয়েন্টিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে ২২ ম্যাচে বাংলাদেশের ৩ জয়ের দুটিই এসেছে ঘরের মাঠ শেরে বাংলা স্টেডিয়াম থেকে। জয় দুটি ২০১৫ ও ২০১৬ সালে মাশরাফি বিন মর্তুজার নেতৃত্বে।

২০১৫ সালে মাশরাফির নেতৃত্বে ৭ উইকেটে জিতেছিল বাংলাদেশ। শেরে বাংলায় সেই ম্যাচে এক জোড়া ফিফটি উপহার দিয়ে যৌথভাবে জয়ের নায়ক হয়েছিলেন সাকিব আল হাসান (৪১ বলে ৫৭*) ও সাব্বির রহমান (৩২ বলে ৫১*)। এরপর দেশের মাটিতে মাত্র একবার জয়ের দেখা পায় বাংলাদেশ। সেটিও হোম অব ক্রিকেটখ্যাত শেরে বাংলায়। ২০১৬ সালের ২ মার্চ এশিয়া কাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৫ উইকেটে জিতেছিল বাংলাদেশ। এরপর আর ঘরের মাঠে জেতা সম্ভব হয়নি টাইগারদের। এরপরই ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হাংজুতে সেই জয়। এশিয়ান গেমস ক্রিকেটে তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে ডিএল ম্যাথডে পাকিস্তানকে ৬ উইকেটে হারিয়েছিল বাংলাদেশ।

ওই ম্যাচে দু’দেশের কারোই মূল দল অংশ নেয়নি। বাংলাদেশ ‘এ’ দল খেলেছিল সাইফ হাসানের নেতৃত্বে, আর পাকিস্তান ‘এ’ দলের ক্যাপ্টেন ছিলেন ওয়ানডে ও টেস্ট না খেলা কাশিম আকরাম।

Advertisement

মোদ্দা কথা, এশিয়ান গেমস ক্রিকেটের জয়টা সে অর্থে ধর্তব্য নয়। তাই ঘুরেফিরে একটি কথাই সামনে আসছে। সেটি হলো- বাংলাদেশ ২০১৬ সালেই শেষবার টি-টোয়েন্টিতে পাকিস্তানকে হারিয়েছিল বাংলাদেশ।

এরপর কেটে গেছে ৯ বছর। অবশেষে আজ রোববার আবার মিরপুরের শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে মুখোমুখি বাংলাদেশ ও পাকিস্তান। এবার কি বাংলাদেশ পারবে ৯ বছরের অপেক্ষার প্রহর শেষ করতে? ২০১৫-২০১৬ সালে মাশরাফির নেতৃত্বে শহিদ আফ্রিদির পাকিস্তানকে বধ করার পর এবার লিটন দাসের নেতৃত্বে কি পাকিস্তানকে আবারও হারানো সম্ভব হবে? কেউ কেউ কিছু হিসাব মেলানোর চেষ্টা করছেন। কারো কারো হিসাব, যেহেতু বাংলাদেশ প্রায় কাছাকাছি উইকেটে শ্রীলঙ্কাকে তাদেরই মাটিতে হারিয়ে এসেছে, তাই লিটনবাহিনীর মনোবল এখন তুঙ্গে। তাদের আস্থা ও আত্মবিশ্বাসটাও এখন বেশ প্রবল। তাই বাংলাদেশের সম্ভাবনাই বেশি। অর্থাৎ ঘরের মাঠে টাইগারদেরই ফেবারিট মানছেন তারা।

আবার কারো চিন্তা এমন, বাংলাদেশ মে-জুনে লাহোরে তিন ম্যাচের সিরিজে পাকিস্তানের কাছে পাত্তাই পায়নি। ৩-০ ব্যবধানে হেরেছে। এবারও পারা কঠিন হবে। কিন্তু অনেকেই কন্ডিশনকে বিবেচনায় আনছেন না। সে কথা তাদের মাথায় নেই। কন্ডিশন বিবেচনায় এই সিরিজে বাংলাদেশেরই সম্ভাবনা বেশি।

কারণ, পাকিস্তানের বর্তমান দলটিতে নেই বাবর আজম, মোহাম্মদ রিজওয়ান ও শান মাসুদের অভিজ্ঞ, পরিণত ও দক্ষ উইলোবাজ। ২০২১ সালে বাংলাদেশের মাটিতে সর্বশেষ সিরিজে পাকিস্তান ৩-০ ব্যবধানে জিতেছিল রিজওয়ান ও বাবর আজমের ব্যাটের দাপটে। যেহেতু তুলনামূলক স্লো উইকেটে ধরে খেলার সামর্থ্য অনেক বেশি তাদের।

Advertisement

সেই জায়গায় প্রথমবার বাংলাদেশের মাটিতে খেলতে আসা সালমান আলি আগা, টপঅর্ডার ফখর জামান, সাইম আইয়ুব ও মোহাম্মদ হারিসদের সবাই ফ্রি স্ট্রোক মেকার। মারমুখী ব্যাটিং করেন। তাদের রয়েসয়ে ও ধরে খেলার অভ্যাস কম। শেরে বাংলার উইকেট আগের মতো স্লো ও লো থাকলে তাদের ভালো করা কঠিন হবে।

কাজেই একঝাঁক মারকুটে ব্যাটার নিয়ে বাংলাদেশে আসা পাকিস্তানিদের আগ্রাসী আর আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলার পরিকল্পনা কতটা সফল হয়, সেটাই দেখার। দেখা যাক সেই লড়াইয়ে কার মুখে শোভা পায় শেষ হাসি?

এআরবি/এমএইচ/