জাতীয়

ওসমান হাদি বিপ্লবী নতুন বাংলাদেশের মুখ: প্রেস সচিব

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, ওসমান হাদি স্বাধীনতার এক নতুন মানদণ্ড স্থাপনকারী ঐতিহাসিক সংগ্রামের মূর্ত প্রতীক। তিনি বিপ্লবী নতুন বাংলাদেশের মুখ।

রোববার (১৪ ডিসেম্বর) সামাজিকযোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তার ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি এ কথা বলেন।

স্ট্যাটাসে তিনি বলেন, ওসমান হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে টার্গেট করা হয়েছিল-তার কণ্ঠরোধ করাই ছিল মূল লক্ষ্য। এটি এখন স্পষ্ট যে এই বর্বর হামলা চালিয়েছে ‌‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ (বিএএল) ফ্যাসিবাদী সন্ত্রাসীরা’। শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করা কোটি কোটি তরুণ বাংলাদেশির মধ্যে ভয় ও আতঙ্ক ছড়িয়ে দেওয়া এর উদ্দেশ্য ছিল।

তিনি বলেন, ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে এই বর্বরোচিত হামলাটি ঘটে। ঠিক ৫৪ বছর আগে এই একই সপ্তাহে, পাকিস্তানি দখলদার বাহিনী এবং তাদের স্থানীয় দোসররা আমাদের বহু শ্রেষ্ঠ বুদ্ধিজীবীকে নির্মমভাবে হত্যা করেছিল। সেই সময়ও একটি উদীয়মান জাতির কণ্ঠস্বর চিরতরে স্তব্ধ করে দেওয়া এবং জনগণের মধ্যে ত্রাস সৃষ্টি করা তাদের স্পষ্ট লক্ষ্য ছিল।

শফিকুল আলম বলেন, হাদি হয়তো আমাদের শহীদ পণ্ডিতদের মতো শিক্ষাবিদ বা অ্যাকাডেমিক বুদ্ধিজীবী নন, কিন্তু তিনি তার মতোই শক্তিশালী কিছু-তিনি লাখ লাখ মানুষের কণ্ঠস্বর। তিনি একটি নতুন বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন, যে জাতি আর কোনো বিদেশি-সমর্থিত পুতুল রানির দ্বারা শাসিত নয়। তিনি স্বাধীনতার এক নতুন মানদণ্ড স্থাপনকারী ঐতিহাসিক সংগ্রামের মূর্ত প্রতীক। তিনি বিপ্লবী নতুন বাংলাদেশের মুখ।

প্রেস সচিব বলেন, একটা সময় ছিল যখন বহু ‘বিএএল’ কর্মী ইতিহাসের সঠিক পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন। তাজউদ্দীন আহমদের নেতৃত্বে, অসংখ্য দলীয় কর্মকর্তা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আমাদের গৌরবময় স্বাধীনতা যুদ্ধ পরিচালনা করেছিলেন। কিন্তু ২০২৪ সালে এবং জুলাই বিপ্লবের আগের সেই ১৬ বছর ধরে ‘বিএএল’ সম্পূর্ণরূপে ইতিহাসের ভুল পক্ষে দাঁড়িয়েছিল।

এর কর্মকর্তা-কর্মীরা হয়ে উঠেছিলেন নতুন রাজাকার ও আল-বদর। তারা একটি গোটা প্রজন্মকে স্তব্ধ করার জন্য অস্ত্র তুলে নিয়েছিল। তবে এক দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ‘জেন জি’ তাদের পরাজিত করেছে। তবুও সাম্প্রতিক সপ্তাহের ঘটনাগুলো প্রমাণ করে যে শেখ হাসিনা ২০০৯ সালে ক্ষমতা দখলের পর যে নৃশংস, সন্ত্রাসী-ফ্যাসিবাদী সংগঠনে এটিকে পরিণত করেছিলেন, তা আজও একই রয়ে গেছে।

শফিকুল আলম আরও বলেন, ১৯৭১ সালের ডিসেম্বরে বাংলাদেশ তার শ্রেষ্ঠ কিছু আত্মাকে হারিয়েছিল, তবে জাতি নীরব হয়নি। ১৯৭৫ সালের জানুয়ারিতে শেখ মুজিব যখন এক-দলীয় শাসন চাপিয়েছিলেন, তখনও জাতি নীরব হয়নি। গত জুলাই ও আগস্ট মাসে হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর যখন আমাদের কিছু উজ্জ্বল তরুণকে জবাই করা হয়েছিল, তখনও জাতি নীরব হয়নি। এবং ২০২৫ সালের ডিসেম্বরেও জাতি নীরব হবে না-হাসিনা এবং ‘বাঙালির কসাই’ হিসেবে পরিচিত আসাদুজ্জামান খান কামাল যাই পরিকল্পনা করে থাকুন না কেন।

তিনি বলেন, তারা হয়তো আপাতত হাদিকে চুপ করিয়ে দিয়েছে। কিন্তু সারাদেশে লাখ লাখ হাদি রয়েছে। এই হাদিরাই একটি নতুন বাংলাদেশ গড়বে-এমন একটি দেশ, যেখানে ‘বিএএল’ পরিণত হওয়া এই ফ্যাসিবাদী ও সন্ত্রাসীদের কোনো স্থান থাকবে না।

এমইউ/এমআরএম/জেআইএম