আন্তর্জাতিক

যুক্তরাষ্ট্রে গরুর মাংসের দামে নতুন রেকর্ড, কারণ কী?

যুক্তরাষ্ট্রে দ্রুতগতিতে বাড়ছে গরুর মাংসের দাম। এটি সাধারণ ভোক্তাদের বাজারের খরচ উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়ে দিয়েছে। দেশটিতে ২০২৫ সালের জুন মাসে গরুর কিমা প্রতি পাউন্ডের দাম ছয় ডলার ছাড়িয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ১০ দশমিক ৩ শতাংশ বেশি। একই সময়ে স্টেকের দাম বেড়েছে ১২ দশমিক ৪ শতাংশ।

যুক্তরাষ্ট্রে চাহিদা বাড়লেও সরবরাহ ব্যবস্থা সংকুচিত হয়ে পড়েছে। আমেরিকান ফার্মার্স ব্যুরো ফেডারেশনের (এএফবিএফ) তথ্যমতে, ২০২৫ সালের শুরুতে দেশজুড়ে গবাদি পশুর সংখ্যা ছিল ৮ কোটি ৭০ লাখের নিচে, যা গত ৭৫ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।

এএফবিএফের অর্থনীতিবিদ বার্ন্ট নেলসন জানান, খাদ্য খরচের কারণে অনেক কৃষক গাভি পালনের চেয়ে কসাইখানায় বিক্রি করার পথ বেছে নিচ্ছেন। গরুর চড়া দাম এবং ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তা কৃষকদের প্রজননের বদলে বিক্রিতে উৎসাহিত করছে।

আরও পড়ুন>>

আমেরিকায় ডিমের দামে সর্বকালের রেকর্ড, বাড়তে পারে আরও যুক্তরাষ্ট্রে দামের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে কফি চুরির ঘটনা ট্রাম্পের কঠোর বাণিজ্যনীতি, আমেরিকায় উদ্বেগ বাড়াচ্ছে মূল্যস্ফীতি ট্রাম্পের পরিকল্পনায় যুক্তরাষ্ট্রে দাম বাড়তে পারে যেসব পণ্যের

কিন্তু দাম বাড়লেও গরুর খামারিদের লাভ হচ্ছে খুবই কম। কারণ খাদ্য, পানি ও পরিবহন খরচও উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব

মিশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটির খাদ্য অর্থনীতিবিদ ডেভিড ওর্তেগা বলেন, গরুর খামার ও উৎপাদনে জলবায়ু পরিবর্তনের দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়ছে।

২০২২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের গ্রেট প্লেইন অঞ্চলে দীর্ঘমেয়াদি খরার কারণে বহু খামার গবাদি পশু বিক্রি করতে বাধ্য হয়। এতে খাদ্যের দামও বেড়ে যায়, যা দীর্ঘমেয়াদে প্রজনন ক্ষমতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।

আমদানিনির্ভরতা ও শুল্কের ঝুঁকি

যুক্তরাষ্ট্র অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বাড়ালেও দেশটি এখনো প্রচুর গরুর মাংস আমদানি করে। এর একটি বড় অংশ আসে ব্রাজিল ও অস্ট্রেলিয়া থেকে।

ব্রাজিলের বিরুদ্ধে সাবেক প্রেসিডেন্ট জেইর বলসোনারোর বিচার নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন। যদি এই শুল্ক কার্যকর হয়, তাহলে কিমা মাংসের দাম আরও বাড়তে পারে।

অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার মধ্যেও বাণিজ্য নিয়ে উত্তেজনা রয়েছে, যেখানে ট্রাম্প আগস্ট থেকে ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন।

সূত্র: টাইমকেএএ/