ভারতের বেসামরিক বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রক সংস্থা ডিজিসিএ (ডিজিসিএ) জানিয়েছে, গত এক বছরে এয়ার ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধে ৫১টি নিরাপত্তাজনিত লঙ্ঘন ধরা পড়েছে। সংস্থাটির বার্ষিক নিরীক্ষায় এ তথ্য উঠে এসেছে। যদিও গত মাসে গুজরাটে বোয়িং ৭৮৭ দুর্ঘটনায় ২৬০ জন নিহত হওয়ার ঘটনার সঙ্গে এই অনিয়মগুলো সরাসরি সম্পর্কিত নয়।
এদিন সাতটি ‘লেভেল ১’ লঙ্ঘন, অর্থাৎ সবচেয়ে গুরুতর ধরনের নিরাপত্তা ত্রুটি চিহ্নিত হয়েছে। তবে এগুলোর বিস্তারিত প্রকাশ করা হয়নি।
এর প্রতিক্রিয়ায় এক বিবৃতিতে এয়ার ইন্ডিয়া জানিয়েছে, তারা ডিজিসিএর নিরীক্ষায় ‘সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা’ বজায় রেখেছে এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সংশোধনী ব্যবস্থা ও জবাব জমা দেবে।
আরও পড়ুন>>
ভারতের আটটি বাণিজ্যিক বিমান সংস্থার ওপর নিরীক্ষা চালিয়ে মোট ২৬৩টি নিরাপত্তাজনিত ত্রুটি চিহ্নিত করেছে ডিজিসিএ। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৫৭টি অনিয়ম ধরা পড়ে অ্যালায়েন্স এয়ারে, এরপর ঘোদাওয়াট স্টার (৪১), কুইক জেট (৩৫), ইন্ডিগো (২৩), স্পাইসজেট (১৪) এবং এয়ার ইন্ডিয়া ও এর সহযোগী এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস মিলিয়ে ৫১টি।
ত্রুটির ধরন:
লেভেল ১: সরাসরি বিমান নিরাপত্তাকে বিপন্ন করে এমন অনিয়ম।লেভেল ২: অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ, তবে সম্ভাব্যভাবে নিরাপত্তা ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে।
ডিজিসিএ জানিয়েছে, বড় আকারের বিমান সংস্থার ক্ষেত্রে অনিয়মের সংখ্যা বেশি হওয়া অস্বাভাবিক নয়। কারণ তাদের কার্যক্রম ও বিমান বহর অনেক বড়। এটি ‘পরিসরের প্রতিফলন’, ব্যতিক্রমী ব্যর্থতা নয়।
এর আগে রয়টার্সের তথ্যে উঠে এসেছিল পাইলটদের প্রশিক্ষণে ঘাটতি, অননুমোদিত সিমুলেটর ব্যবহার, বোয়িং ৭৮৭ ও ৭৭৭ উড়োজাহাজের পাইলটদের পর্যবেক্ষণ ঘাটতি এবং রোস্টার ব্যবস্থায় ত্রুটির মতো বিষয়গুলো।
এ বছরের মার্চে এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসকে ইঞ্জিনের যন্ত্রাংশ বদলে দেরি করার জন্য সতর্ক করা হয়। এমনকি নথি জালিয়াতি করে সংশ্লিষ্টতা দেখানোর অভিযোগও ছিল।
ডিজিসিএ প্রধান ফায়েজ আহমেদ কিদোয়াই বিবিসিকে বলেন, এ ধরনের তথ্য সংস্থা নিজেরাই জমা দিচ্ছে—এটি নিরাপত্তা সংস্কৃতির উন্নতির ইঙ্গিত। ত্রুটি মেনে নেওয়া ঠিক নয়, তবে রিপোর্টিং শুরু হয়েছে—এটি ইতিবাচক।
কিদোয়াই বলেন, ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে মাত্র দুটি বছর ভারত গ্লোবাল অ্যাভারেজের চেয়ে বেশি দুর্ঘটনা দেখেছে। উভয় বছরেই বড় ধরনের দুর্ঘটনা হয়েছিল।
সূত্র: বিবিসিকেএএ/