বাংলাদেশের কোচরা অবহেলিত। জাতীয় দলের ব্যবস্থাপনায় তাদের সেভাবে সুযোগ দেয়া হয় না। জাতীয় দলের কোচিং প্যানেলে স্থানীয় কোচদের রাখার দাবি অনেক পুরোনো। সেই দাবি মেনে বিসিবি টিম বাংলাদেশের প্রধান সহকারী কোচের দায়িত্ব দিয়েছে মোহাম্মদ সালাউদ্দিনকে।
গত বছরই অ্যাসিস্ট্যান্ট হেড কোচের দায়িত্ব পেয়েছেন সালাউদ্দিন। দেশের কোচদের মধ্যে তার নামডাক ও সুনাম-সুখ্যাতি বেশ। তার সাফল্যও আছে অনেক। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে দল চ্যাম্পিয়ন করানোর কৃতিত্বকে মানদণ্ড ধরলে কোচ হিসেবে খালেদ মাহমুদ সুজনের পেছনে থাকবেন সালাউদ্দিন।
তবে বিপিএলে ট্রফি বিজয়ী স্থানীয় কোচদের মধ্যে সালাউদ্দিনের ধারে কাছে নেই কেউ। সাকিব, তামিম, মুশফিকের মত বড় তারকারাও কোনো সমস্যা হলে বা সময় খারাপ গেলেই সালাউদ্দিনের কাছে ছুটে যান।
সেই প্রজন্ম থেকে শুরু করে এখনকার প্রজন্মের একটা বড় অংশের কাছে ‘সালাউদ্দিন স্যার, সালাউদ্দিন ভাই’ অনেক বড় নির্ভরতা। তাদের অনেকের ব্যাটিংয়ের সমস্যা, দুর্বলতা ও ঘাটতি-কমতি দূর করায় ‘সালাউদ্দিন থেরাপি’ কার্যকর, প্রমাণিত।
এটা সত্য। সালাউদ্দিন ঠাণ্ডা মাথায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা রাখেন। গত দুই প্রজন্মের ক্রিকেটারদের স্কিল, টেকনিক উন্নয়নে তার ভূমিকা আছে যথেষ্ট। কিন্তু কঠিন সত্য হলো, জাতীয় দলে সালাউদ্দিন আসার পর তাকে নিয়ে নেতিবাচক কথাও কম হচ্ছে না।
দীর্ঘদিনের দাবি মিটিয়ে প্রধান সহকারী কোচ হওয়ার পর সালাউদ্দিন চোখে পড়ার মতো তেমন কিছু করতে পারেননি। তার তত্ত্বাবধানে যতটা উন্নতি আশা করা হয়েছিল, এখনও ততটা দেখা যায়নি। ক্রিকেটারদের বিশেষ করে ব্যাটারদের অ্যাপ্রোচ, অ্যাপ্লিকেশন ও পারফরম্যান্স আগের মতই আছে। মাঝেমধ্যে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়তেও দেখা যাচ্ছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সালাউদ্দিনকে নিয়ে তাই কিছু তির্যক কথাবার্তাও হয়েছে, হচ্ছে। কিন্তু ক্রিকেট বোর্ড সেসবে কান দেয়নি। তার সঙ্গে চুক্তির মেয়াদকাল বাড়ানো হয়েছে। ২০২৭ সালের অক্টোবর পর্যন্ত বাংলাদেশের প্রধান সহকারী কোচের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এবং তার বেতনও বাড়িয়ে ১০ লাখ টাকা করা হয়েছে।
সত্যিই সালাউদ্দিনের চুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে? তার বেতন কি ১০ লাখ টাকা করা হয়েছে? এ প্রশ্নের উত্তর যাদের সবচেয়ে ভালো জানার কথা, জাতীয় দলের পরিচালনা-তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে থাকা বিসিবি পরিচালক ও ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান নাজমুল আবেদিন ফাহিম ও ক্রিকেট অপস ম্যানেজার শাহরিয়ার নাফীসের সঙ্গে যোগাযোগ করে জাগো নিউজ।
এই বিষয়ে তাদের কাছে জিজ্ঞেস করা হলে, তারা কেউই সরাসরি ‘হ্যাঁ’ বলেননি। আবার অস্বীকারও করেননি। যা বলেছেন, তার সারমর্ম হলো-সালাউদ্দিনের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ ও বেতন বাড়ানো হয়েছে। তবে খবরটা নতুন কিছু নয়। নাজমুল আবেদিন ফাহিম বলেন, ‘এটা তো নতুন খবর নয়, পুরোনো খবর।’
একই সুরে কথা বলেছেন ক্রিকেট অপারেশন্স ম্যানেজার শাহরিয়ার নাফীস। তার কথা, ‘কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের চুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে গত এপ্রিলে। আর বিসিবি তার সঙ্গে চুক্তি করেছে গত মে মাসে।’
তার মানে গত এপ্রিল থেকেই বর্ধিত মেয়াদে কাজ করছেন সালাউদ্দিন। বেতনও পাচ্ছেন আগের থেকে বেশি, মাসিক ১০ লাখ টাকা করে।
এআরবি/এমএমআর/জেআইএম