আধুনিক সাজসজ্জার অন্যতম একটি ধারা হচ্ছে বোহেমিয়ান ধারা। সংক্ষেপে যা বোহো থিম হিসেবে পরিচিত। বোহেমিয়ান মানেই এলোমেলো নয়, এটি সৃজনশীল বিশৃঙ্খলা। বোহেমিয়ান অন্দর সাজানো অন্য দশটা অন্দর সাজানোর থেকে আলাদা। বোহেমিয়ান ঘর মানেই কোনো নিয়মে বাঁধা নয়। এটি একটি শিল্পের মতো, আপনি যা ভালোবাসেন, তাই দিয়ে সাজাতে পারেন। তবে এর জন্য দরকার একটা স্থির শৈল্পিক চিন্তাভাবনা।
সাজাবেন যেভাবে
ঘরের মধ্যে যদি এলোমেলো বিষয়টাকে ফুটিয়ে তুলতে হলে অবশ্যই অনেকগুলো দিকে খেয়াল রাখতে হয়। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক উপাদানের সমন্বয় এবং পরিবেশবান্ধব উপকরণ ব্যবহারের মাধ্যম এই ধারায় ঘর সাজানো হয়। সহজ ভাবে বলতে গেলে এলোমেলোর জিনিসগুলোকে একটা সৃজনশীল রূপ দেওয়াই হলো এই ধারার রীতি। এই যেমন কুরুশে বোনা পর্দার সঙ্গে পুঁতির ঝালর, টুপি, ঝুড়ি, রঙিন কার্পেট, আদিবাসী শিল্পকর্ম, এমনকি ফেলে দেওয়া গাছের ডাল দিয়ে সাজিয়ে ফেলতে পারেন আপনার ঘরটি। আবার চাইলে বেতের ল্যাম্পশেড, নানা ধরনের কুশন ও মোড়া ব্যবহার করে ঘরে বোহেমিয়ান ধারায় ফুটিয়ে তুলতে পারেন। একটু গ্রাম্য পরিবেশের সৃষ্টি করতে লণ্ঠন, সুগন্ধি মোমবাতি, প্রদীপ, হারিকেন দিয়ে সাজিয়ে নিতে পারেন। নব্বই দশকের ধারাতে সাজাতে হারিয়ে যাওয়া ল্যান্ডফোন, রেডিও, ছোটখাটো বাদ্যযন্ত্র ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়া নানি-দাদিদের আমলের সিন্দুক, আলমারি, ড্রেসিং টেবিলগুলো নতুন আঙ্গিকে সাজিয়ে ঘরের ঐতিহ্যবাহী এবং ব্যক্তিগত স্পর্শ যোগ করতে পারেন।
বিভিন্ন রঙের মিশ্রণ
বোহেমিয়ান ধারায় অন্দরে সাজাতে উজ্জ্বল রঙের প্রাধান্য বেশি পেয়ে থাকে। ঘরকে উজ্জ্বল রংগুলো অনেক বেশি প্রাণবন্ত করে তোলে । সবুজ, ব্রাউন, কমলা, নীলের শেড ব্যবহার করে ঘর সাজাতে পারেন। রঙের নিজস্ব স্বাতন্ত্র্য বজায় রেখে আধুনিক পরিবেশ তৈরি করে।
প্রকৃতির মিশ্রণ
প্রাকৃতিক উপাদানের ব্যবহার বোহো থিমে আসবাব এবং সাজসজ্জার মধ্যে বিভিন্ন ধরনের নকশা ও কারুকার্য প্রাধান্য পায়। বোহো থিমের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো ‘মিশ্রণ’। এখানে সবকিছুই একত্রে মিশে থাকে, কোনো একটি নির্দিষ্ট সাজানোর প্যাটার্ন অনুসরণ করা হয় না। বিভিন্ন স্টাইল এবং উপাদানের মিশ্রণ এই থিমকে তার অনন্য পরিচয় দেয়। প্রতিটি জিনিস আলাদা আলাদা করে গল্প বলে, ঘরে আসা অতিথিরাও মুগ্ধ হয়ে যাবেন আপনার ঘরের সাজসজ্জা দেখে।
আরও পড়ুন কেমন হবে ঘরের আলো অফিসের ডেস্ক যেভাবে সাজাবেননরম আলো লাইটিং
নরম আলো ব্যবহার বোহো সজ্জা ঘরকে বেশি আকর্ষণীয় করে। নিয়মিত আলোর পরিবর্তে পরী লাইট, স্ট্রিং লাইট, লণ্ঠন বা সুগন্ধযুক্ত মোমবাতি বেছে নিতে পারেন। এছাড়া হাতে তৈরি নকশা করা টেবিল ল্যাম্প ব্যবহার করে আপনার ঘরে ছায়াময় পরিবেশ তৈরি করতে পারেন।
ভারসাম্য রাখতে হবে
বোহেমিয়ান স্টাইলে ঘর সাজাতে স্বাধীনতা থাকলেও কিছু নির্দিষ্ট দিক খেয়াল রাখলে সাজটা সুন্দর, ভারসাম্যপূর্ণ হয়। ঘর পুরোপুরি আসবাবে বোঝাই না করে কিছু খালি জায়গা রাখলে মনও হালকা লাগে। বেশি রং বা প্রিন্ট ব্যবহার করলেও যেন চোখে ধাঁধা না লাগে। কিছু নিউট্রাল বা হালকা ব্যাকগ্রাউন্ড রাখলে ঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া, বেটার হোমস অ্যান্ড গার্ডেনস
এসএকেওয়াই/জিকেএস