কেমন হবে ঘরের আলো
ঘরের উজ্জ্বলতা বাড়াতে আলোর গুরুত্ব অনেক। ঘরের ধরন অনুযায়ী একেক ঘরের জন্য বেছে নিতে হবে একেক ধরনের আলো। মানানসই আলো সঠিকভাবে ব্যবহার না করলে ঘরের সৌন্দর্য অনেক সময় নষ্ট হয়ে যায়।
তাই কোন ঘরে কেমন আলো হবে জানাটা বেশ জরুরি। চাইলেই ঘরে আলো এবং ছায়াকে কেন্দ্র করে ঘরকে আকর্ষণীয় করে তোলা যায়।

১. কক্ষ অনুযায়ী আলো
অনেক ঘরেই শুধু একটি আলোর উৎস যথেষ্ট নয়। সে ক্ষেত্রে একাধিক আলোর উৎসের ব্যবস্থা রাখা ভালো। শুধু দেয়ালে নয়, প্রয়োজন বুঝে সিলিং থেকেও নানা রকম বাতি ঝুলিয়ে দিতে পারেন। এছাড়া ঘরে রাখতে পারেন টেবিল ল্যাম্প বা ফ্লোর ল্যাম্প। ঘরের কোনো অন্ধকার কোণ, করিডর বা খাবার ঘরে নজর দিতে হবে, যেখানে আলো সহজে পৌঁছায় না।

২. বসার ঘরের আলো
অতিথি আপ্যায়ন থেকে শুরু করে বন্ধুদের আড্ডা—সবই হয় বসার ঘরে। তাই বসার ঘরে ইচ্ছেমতো যেকোনো ধরনের লাইট ব্যবহার করতে পারেন। এই ঘরের দেয়ালে বিভিন্ন ছবির ফ্রেম রেখে সেখানে স্পটলাইট লাগিয়ে নিলে পুরো জায়গায় একটা নান্দনিক লুক আসবে।
বসার ঘর আয়তনে বড় হলে ঝাড়বাতি বসানো যেতে পারে। তবে ছোট ঘরে ঝাড়বাতি বেমানান লাগে। মাঝারি ধরনের বসার ঘরের জন্য সিলিং লাগোয়া ছোট আকারের ঝাড়বাতি বেছে নিলে দেখতে বেশ আকর্ষণীয় লাগবে। এছাড়া বেতের কিংবা বাঁশের বিভিন্ন স্ট্যান্ডিং ল্যাম্প রাখলেও সুন্দর দেখাবে। অতিথি এলে কিংবা সন্ধ্যার পর সেসব বাতি জ্বালিয়ে দিলে ঘরের শোভা বাড়বে।

৩. ছিমছাম শোবার ঘর
শোবার ঘরের হালকা ল্যাম্পশেড এবং স্লিপিং লাইট ব্যবহার করতে পারেন। ঘরের শোভা বাড়াতে হালকা নীল, বেগুনি বা সবুজ রঙের বাতি ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়া স্নিগ্ধ আলোর টেবিল ল্যাম্প বা ডিমেবল লাইট ব্যবহার করলে রাতে গভীর ঘুম হবে।
বিছানার পাশে কর্নারে একটু কম আলোর বিভিন্ন রঙের লাইটের ব্যবহারের ফলে রুমের মধ্যে আলো-ছায়ার খেলা তৈরি হবে। যা ক্লান্ত দেহকে সামান্য হলেও আরাম দেবে। ড্রেসিং টেবিলের উপর ও ড্রইংরুমের কর্নারে স্পট লাইট, এলইডি ওয়াল লাইট লাগিয়ে নিতে পারেন, যা পুরো রুমে এক ধরনের মায়াবী আলোয় আলোকিত করে দেবে।

৪. খাবার ঘরে
খাবার ঘরে আরামদায়ক পরিবেশ তৈরি করতে উষ্ণ আলো ব্যবহার করতে পারেন। টেবিলের ওপর বাড়তি আলোর জন্য ঝুলন্ত বাতি বা পেন্ডেন্ট লাইট দিলে ভালো লাগবে। টেবিলের আকৃতি অনুযায়ী দুই বা তিনটি বাতি সিলিং থেকে সারি বেঁধে ঝুলিয়ে দিতে পারেন। তবে বাতি এমনভাবে ঝুলিয়ে নিন, যেন আলো খাবারে পড়ে।
৫. গাছের উপর আলো
ঘরের যেখানে গাছ আছে, সেই স্থানগুলো বা বাগান আলোকিত করতে এলইডি লাইট ব্যবহার করা যেতে পারে। মুখবন্ধ বয়ামে ফেইরি লাইট আটকিয়ে সাজাতে পারেন। স্বচ্ছ বয়ামের মধ্যে শামুক, বিডস অথবা প্লাস্টিকের গাছসহ লাইট রাখলে ঘরের শোভা বাড়াবে। এছাড়া গাছ রাখার স্ট্যান্ডের ফাঁকে ফাঁকে বয়াম ভর্তি আলো সাজিয়ে সাজিয়ে রাখলে মন ভালো হয়ে যাবে।
৬. শিশুদের ঘরে আলো
শিশুদের ঘরে পর্যাপ্ত আলো থাকতে হবে। কিন্তু তা যেন চোখের সমস্যা তৈরি না করে। এনার্জি সেভিং এলইডি লাইট, ডিমেবল হিডেন স্পটলাইট, ওয়ার্ম এলইডি স্ট্রিপস দেওয়া ট্রে কোভস কিংবা ওয়াল লাইট বেছে নিতে পারেন।
ঘরের বিভিন্ন কোণে স্পটলাইট বা ওয়ার্ম ফোকাস লাইট ব্যবহার করলে পুরো ঘর আলোকিত হবে। শিশুর ঘরে রাতে ঘুমানোর সময় জিরো পাওয়ারে হালকা নীল আলো ব্যবহার করলে ভালো হবে।

কোথায় পাবেন
ডেকোরেটিভ লাইটের বেশির ভাগই চীনের তৈরি। বাংলাদেশে সোয়াশ, ক্রিসেন্ট, অন্বেষা ইত্যাদি কোম্পানি ডেকোরেটিভ লাইট ও শেড তৈরি করছে। এর মধ্যে সোয়াশ ও ক্রিসেন্টের পণ্য কেবল তাদের শোরুমে পাওয়া যায়। এছাড়া পুরানা পল্টনের শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণি, নবাবপুর, নিউমার্কেট, বসুন্ধরা সিটি ও উত্তরার লাইটিং সিটিতে রয়েছে ডেকোরেটিভ লাইটের দোকান।
সূত্র: হাউস অব হ্যাকনি, টাইমস অব ইন্ডিয়া
এসএকেওয়াই/এএমপি/জিকেএস