জাতীয়

ডাকসু নির্বাচনের মাধ্যমে ছাত্ররাজনীতিতে হবে সুষ্ঠু প্রতিযোগিতা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে আগামী ৯ সেপ্টেম্বর। এরইমধ্যে ঘোষণা করা হয়েছে নির্বাচনী তফসিল। এবারের নির্বাচন কেমন হতে পারে, এই নির্বাচন কী ধরনের সুফল বয়ে আনবে এসব বিষয় নিয়ে ডাকসুর সাবেক সাধারণ সম্পাদক ডা. মুশতাক হোসেনের সঙ্গে কথা বলেছেন জাগো নিউজের প্ল্যানিং এডিটর মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল।

১৯৭২ সালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের (বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র) প্রার্থী হয়ে ঢাকা কলেজ ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন ডা. মুশতাক হোসেন। ১৯৮৯ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাধারণ সম্পাদক (জিএস) নির্বাচিত হন। বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (বাংলাদেশ জাসদ) স্থায়ী কমিটির সদস্যও তিনি।

আরও পড়ুন:

ডাকসু নির্বাচন ৯ সেপ্টেম্বর ডাকসু ভোটে আলোচনায় যারা, সাজানো হচ্ছে রণকৌশল ডাকসু নির্বাচন, হলে প্রবেশে কড়াকড়ি

জাগো নিউজ: সম্প্রতি ডাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে এই তফসিল ঘোষণাকে আপনি কতটুকু যৌক্তিক বলে মনে করেন?

ডা. মুশতাক হোসেন: ডাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা একেবারেই যৌক্তিক বলে মনে করি। এটি একটি সঠিক পদক্ষেপ। ছাত্র আন্দোলন চলমান রাখতে একটা প্রতিনিধিত্বের জায়গায় যাওয়া উচিত। এতে সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা উপকৃত হবে। শুধু ঢাকা নয়; চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনাসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং পরবর্তী পর্যায়ে জেলা-উপজেলার কলেজগুলোতেও ছাত্র প্রতিনিধিত্বমূলক নির্বাচন হওয়া উচিত।

জাগো নিউজ: জাতীয় নির্বাচনের আগে এই ডাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পেছনে কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে কি?

ডা. মুশতাক হোসেন: আমি মনে করি না এই তফসিল ঘোষণার পেছনে কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে। ছাত্র প্রতিনিধিত্বমূলক নির্বাচন সে ছাত্ররাজনীতি করুক বা মুক্ত জাতীয় রাজনীতি করুক, তাদের জন্য এটি স্পষ্ট বার্তা। এটিও জাতীয় রাজনীতিতেও অনুপ্রাণিত করবে। ডাকসু নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হলে, সেটা ভবিষ্যতে একটি ভালো মানের জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের দৃষ্টান্ত হতে পারে।

জাগো নিউজ: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ডাকসু নির্বাচনের এই উদ্যোগ ছাত্রসমাজের জন্য কী বার্তা দেয়?

ডা. মুশতাক হোসেন: প্রশাসনের এই উদ্যোগ ছাত্রসমাজকে গণতান্ত্রিক পথে যাত্রা এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের অনুশীলনে উৎসাহ দেবে।

আরও পড়ুন:

ডাকসু নির্বাচন: প্রার্থী হতে পারবেন যারা সবার আগে ডাকসুর প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিলেন উমামা ফাতেমা ছাত্রনেতা থেকে জাতীয় রাজনীতিতে, ডাকসু ভিপিদের অতীত-বর্তমান

জাগো নিউজ: বর্তমানে ক্যাম্পাসে যেসব ছাত্র সংগঠন সক্রিয়, তারা কি সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরিতে প্রস্তুত?

ডা. মুশতাক হোসেন: এটা ছাত্র সংগঠনগুলোর নেতারা ভালো বলতে পারবে। তবে সাবেক ছাত্রনেতা হিসেবে আমার পর্যবেক্ষণ হলো, যারা অতীতে ছাত্র সংগঠন করতো, তাদের অনেকেই ইতিবাচকভাবে ডাকসু নির্বাচনের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন।

জাগো নিউজ: আপনি কি মনে করেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিরপেক্ষভাবে এই নির্বাচন পরিচালনা করতে পারবে?

ডা. মুশতাক হোসেন: এ ব্যাপারে ছাত্র সংগঠনগুলোর ভূমিকাই গুরুত্বপূর্ণ হবে। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিরপেক্ষ আচরণের কোনো বিকল্প নেই সেটা যে কোনো নির্বাচনের ক্ষেত্রে হোক।

জাগো নিউজ: আপনার সময়ে ডাকসু নির্বাচনের অভিজ্ঞতা কেমন ছিল? তখনকার প্রেক্ষাপটের সঙ্গে কীভাবে তুলনা করবেন?

ডা. মুশতাক হোসেন: আমাদের সময় ডাকসু নির্বাচন আন্দোলনের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এখন যদি আন্দোলন ছাড়াই নির্বাচন হয়, সেটাই হবে একটি বড় অগ্রগতি।

জাগো নিউজ: ডাকসু নির্বাচনের মধ্য দিয়ে কি ছাত্ররাজনীতি আবারও সক্রিয় ও কার্যকর হতে পারে বলে আপনি আশাবাদী?

ডা. মুশতাক হোসেন: ছাত্ররাজনীতি প্রসঙ্গে বলবো, ডাকসু নির্বাচনের মাধ্যমে প্রতিনিধিদের মধ্যে ছাত্ররাজনীতিতে আরও সুষ্ঠু প্রতিযোগিতা তৈরি হবে।

আরও পড়ুন:

ডাকসু ও হল সংসদে ভোটার সংখ্যা ৩৯৯৩২, ছাত্রী ৪৭ শতাংশ ডাকসু নির্বাচনে প্রচারে মানতে হবে যেসব নিয়ম ‘শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতে ডাকসু নির্বাচন জরুরি’ রাকসু থেকে উঠে এসে জাতীয় নেতৃত্বে তারা

জাগো নিউজ: বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় কীভাবে এই ডাকসু নির্বাচন জাতীয় রাজনীতিতে প্রভাব ফেলতে পারে বলে আপনি মনে করেন?

ডা. মুশতাক হোসেন: জাতীয় রাজনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে আমি মনে করি। ডাকসু নির্বাচন জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের একটি মানদণ্ডও হতে পারে।

জাগো নিউজ: আপনার মতে, একটি গ্রহণযোগ্য ডাকসু নির্বাচন আয়োজন করতে হলে কী কী শর্ত বা পরিবেশ নিশ্চিত করা জরুরি?

ডা. মুশতাক হোসেন: ছাত্র-শিক্ষক উভয়ের জন্যই এ নির্বাচন আকর্ষণীয়। অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনী পরিবেশ তৈরি করতে হবে যাতে সংগঠনগুলো শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারে। একটি ভালো নির্বাচন উপহার দেয়।

এমইউ/এসএনআর/এমএমএআর/এমএস