চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, চট্টগ্রামের প্রতিটি নাগরিকের জন্য মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করাই আমার মূল লক্ষ্য। জনবল বৃদ্ধি, স্থাপনা সংস্কার, নতুন যন্ত্রপাতি সংগ্রহ ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগকে ঢেলে সাজানোর মাধ্যমে চট্টগ্রামবাসীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে চাই।
বৃহস্পতিবার (১৪ আগষ্ট) নগরীর টাইগারপাসস্থ চসিক কার্যালয়ে চসিকের স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ ঘোষণা দেন তিনি।
চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাছে মেয়র চসিকের স্বাস্থ্য বিভাগের মানোন্নয়নে করণীয় সম্পর্কে জানতে চাইলে সভায় চিকিৎসকরা বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরেন। তারা জানান, সিটি করপোরেশন বন্দরটিলা মাতৃসদন হাসপাতাল, ছাফা মোতালেব মাতৃসদন হাসপাতাল ও মোস্তফা হাকিম মাতৃসদন হাসপাতালে লিফটের অভাবে রোগী, বিশেষ করে গর্ভবতী নারীদের মারাত্মক কষ্ট পোহাতে হচ্ছে। এছাড়া চসিকের অনেক হাসপাতালে কনসালটেন্ট সংকট, কর্মী সংকট, লজিস্টিক ঘাটতি, যন্ত্রপাতির অভাব, অ্যাম্বুলেন্স সংকট ও পুরাতন ভবনের সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার বিষয়টিও তারা উল্লেখ করেন।
আরও পড়ুন পশুর চ্যানেল ড্রেজিংয়ে নৌবাহিনীর সঙ্গে মোংলা বন্দরের সমঝোতা ২৫ আগস্ট কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক সেমিনার করবে সরকারজবাবে মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন তার বক্তব্যে বলেন, চট্টগ্রামের প্রতিটি নাগরিকের জন্য মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করাই আমার মূল লক্ষ্য। এজন্য হাসপাতালগুলোতে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম, পর্যাপ্ত জনবল ও উন্নত অবকাঠামো নিশ্চিত করা হবে। চিকিৎসকদের যেসব সমস্যা আছে, সেগুলো সমাধানে আমরা দ্রুত পদক্ষেপ নেবো। বিশেষ করে যেখানে কনসালটেন্ট ও চিকিৎসক সংকট রয়েছে, সেখানে প্রয়োজনভেদে নতুন নিয়োগ দেওয়া হবে। হাসপাতালের পুরাতন ভবনগুলো সংস্কার এবং লিফট, অ্যাম্বুলেন্সসহ প্রয়োজনীয় সুবিধা যুক্ত করা হবে। আমি চাই চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন পরিচালিত হাসপাতালগুলো যেন রোগীর আস্থা অর্জন করতে পারে এবং এখানে এসে কেউ যেন চিকিৎসা বঞ্চিত না হন।
মেয়র আরও বলেন, আমি দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই প্রথম যে প্রতিষ্ঠানটি পরিদর্শন করেছি সেটি হলো মেমন মাতৃসদন হাসপাতাল। একসময় নারী ও নবজাতক শিশুদের সেবায় মেমন হাসপাতালের চট্টগ্রামে বিশেষ সুনাম ছিল। কিন্তু পরিদর্শনকালে চিকিৎসক ও রোগীদের সঙ্গে কথা বলে বুঝলাম হাসপাতালটিতে যন্ত্রপাতির ঘাটতি আছে। পরবর্তীতে মেমনে প্রয়োজনীয় বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ও জনবল বাড়ানোয় ধীরে ধীরে নাগরিকদের আস্থা ফিরছে মেমনের প্রতি। এছাড়া, স্বাস্থ্যবিভাগের অন্যান্য যেসব প্রতিষ্ঠান আছে সেগুলোও ঢেলে সাজাবো।
চসিক মেয়র বলেন, চসিকের স্বাস্থ্য বিভাগকে প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ টাকা ভর্তুকি দিতে হয়। অথচ, এ বিভাগটিকে সুন্দরভাবে গড়লে এটি চসিকের জন্য একদিকে আয়বর্ধক হবে, অন্যদিকে নগরবাসীর জন্য স্বল্পব্যয়ে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করবে। প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি এবং লোকবল দিয়ে চসিকের স্বাস্থ্য বিভাগকে ঢেলে সাজানো হবে। বন্দরটিলা হাসপাতাল, মোস্তফা হাকিম হাসপাতালসহ করপোরেশনের বেশ কিছু ভালো বড় হাসপাতাল রয়েছে। এগুলো সংস্কার করে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগের হারানো ভাবমূর্তি ফিরিয়ে আনা হবে। আমি ২০০১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতালের নেতৃত্বে ছিলাম। ভঙ্গুর এই প্রতিষ্ঠানটিকে আমি নিজের পায়ে শক্তিশালী করে দাঁড় করিয়েছিলাম। ইনশাআল্লাহ আমার আগের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে চসিকের স্বাস্থ্য বিভাগকে ঢেলে সাজাবো, জনগণের স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার অধিকার বাস্তবায়ন করব।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, চসিক সচিব মো. আশরাফুল আমিন, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. ইমাম হোসেন রানা, প্রধান প্রকৌশলী আনিসুর রহমান, প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির চৌধুরী, ডা. তপন কুমার চক্রবর্তী, হোসনে আরা বেগমসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
এমআরএএইচ/এএমএ/জিকেএস