চব্বিশের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতদের মধ্যে সাড়ে ৮২ শতাংশই বিষণ্নতায় এবং ৬৪ শতাংশ তীব্র আঘাত পরবর্তী মানসিক চাপে ভুগছেন।
সোমবার (১৮ আগস্ট) বাংলাদেশ মেডিকেল ইউনিভার্সিটিতে (বিএমইউ) এক সেমিনারে এ তথ্য জানান বক্তারা। সেমিনারে বিষয়বস্তু ছিল- ‘বিয়ন্ড দ্য হেডলাইনস: মেন্টাল হেলথ কনসিকোয়েন্সেস অফ দ্য জুলাই আপরাইজিং অ্যান্ড মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি’।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন কেন্দ্রীয় সাব-কমিটির চেয়ারপারসন অধ্যাপক ডা. আফজালুন নেসা এবং সঞ্চালনা করেন সদস্য সচিব সহযোগী অধ্যাপক ডা. খালেদ মাহবুব মোর্শেদ মামুন।
বিএমইউ’র কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. নাহরীন আখতার বলেন, ট্রমা, সহিংসতা ও মানসিক অসুস্থতা প্রতিরোধের জন্য পারিবারিক ও সামাজিক সচেতনতা অত্যন্ত জরুরি। মানসিক স্বাস্থ্য অবহেলা না করে সুরক্ষায় সবাইকে দায়িত্ববান হতে হবে।
সেমিনারে বলা হয়, মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমানবিধ্বস্ত হয়ে সৃষ্ট ট্র্যাজেডির শিকার শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্তকরণ এবং দ্রুত মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা প্রদানের ওপর গুরুত্বারোপ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে বিএমইউ, ডিএমসিএইচ, এনআইএমএইচ, সাজেদা ফাউন্ডেশন ও ব্র্যাকের সমন্বয়ে বিশেষ মানসিক স্বাস্থ্য টিম গঠন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:
দগ্ধদের দেখতে বার্ন ইনস্টিটিউটে ব্রিটিশ হাইকমিশনার গবেষণা উপস্থাপনামনোরোগবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ডা. নাহিদ মাহজাবিন মোর্শেদ তার প্রবন্ধে বলেন, ‘শৈশবের ট্রমা ও সহিংসতা শিশুদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশে গভীর প্রভাব ফেলে। প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্তকরণ ও দ্রুত সহায়তা দিলে দীর্ঘমেয়াদি মানসিক রোগ প্রতিরোধ সম্ভব।’
সহযোগী অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ শামসুল আহসান জানান, বিএমইউ, নিটোর ও এনআইইউতে ভর্তি হওয়া ২১৭ জন আহত রোগীর মধ্যে সাড়ে ৮২ শতাংশ বিষণ্নতায় এবং ৬৪ শতাংশ তীব্র আঘাত পরবর্তী মানসিক চাপে ভুগছেন। বিশেষ করে গ্রামীণ রোগীরা চিকিৎসা-পরবর্তী অনিশ্চয়তার কারণে বেশি উদ্বিগ্ন ও ঝুঁকিপূর্ণ মনে করছেন।
মাইলস্টোন ট্র্যাজেডির শিকারদের জন্য ইতোমধ্যে হটলাইন সেবা চালু হয়েছে। এছাড়া কাউন্সেলিং, গ্রুপ সেশন ও প্রয়োজনে ওষুধ ব্যবহারের মাধ্যমে সহায়তা দেয়া হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আক্রান্তদের মধ্যে বার্ন ভিক্টিম ও ইনজুরডদের মানসিক অবস্থা নিরূপণ করে চিকিৎসা জরুরি।
বক্তারা বলেন, শিশু-কিশোরদের মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষায় পরিবার, শিক্ষক ও সমাজকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। দ্রুত হস্তক্ষেপ মানে ভবিষ্যতের জটিলতা প্রতিরোধ করা।
এসইউজে/এনএইচআর/এমএস