‘২০০০ কোটি টাকা দেনা রেখে ৯৩৭ কোটির রেকর্ড মুনাফা দেখালো বিমান’—এই শিরোনামে গত সোমবার (১৮ আগস্ট) জাগো নিউজে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদলিপি দিয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। বিমানের দাবি, ওই সংবাদে ভুল তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে, যা জনসাধারণকে বিভ্রান্ত করছে এবং জাতীয় পতাকাবাহী সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লিমিটেডের ভাবমূর্তিকে ক্ষুণ্ন করছে।
বুধবার (২০ আগস্ট) বিমানের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) এ বি এম রওশন কবিরের সই করা এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবাদলিপি পাঠানো হয়।
প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৯৩৭ কোটি টাকা অনিরীক্ষিত মুনাফা অর্জন করেছে। এ মুনাফা গণনায় আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত হিসাবরক্ষণের বকেয়া ভিত্তি নীতি অনুসরণ করা হয়েছে। এ নীতি অনুযায়ী, আয় এবং ব্যয়কে নগদ লেনদেনের সময় নয়, বরং যখন তা সংঘটিত হয় তখন হিসাবের মধ্যে ধরা হয়। সুতরাং, লাভ-ক্ষতির হিসাব নির্ভর করে আয়ের বিপরীতে ব্যয়ের প্রকৃত পরিমাণের ওপর, প্রদেয় অর্থ বা নগদ লেনদেনের ওপর নয়।
আপনাদের প্রতিবেদনে জেট ফুয়েল বাবদ বকেয়ার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলা হয়েছে যে, এ দায় পরিশোধ না করেই বিমান মুনাফা ঘোষণা করেছে। ওই প্রতিবেদনে মূলত দুটি স্বতন্ত্র আর্থিক ধারণাকে পরস্পরের সঙ্গে মিশ্রিত করে উপস্থাপন করা হয়েছে। মুনাফা হলো একটি আর্থিক বছরে আয় থেকে ব্যয় বাদ দেওয়ার পর অবশিষ্ট অর্থ, যা প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম কতটা লাভজনক তা নির্দেশ করে এবং এটি লাভ এবং ক্ষতির বিবৃতিতে প্রদর্শিত হয়।
অন্যদিকে, প্রদেয় হিসাব হলো ভবিষ্যতে পরিশোধযোগ্য অর্থ বা দায়, যা ব্যালান্স শিটে প্রদর্শিত হয়। একটি হলো আর্থিক ফলাফল, অন্যটি হলো আর্থিক দায়—এই দুটি ভিন্ন বিষয়কে একত্রে বিবেচনা করা সম্পূর্ণ ভুল এবং হিসাববিজ্ঞানের মৌলিক নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক। কোনো নির্দিষ্ট সময়ে প্রদেয় দায় থাকা মানেই যে তা প্রতিষ্ঠানের মুনাফার সাথে সমন্বয় করতে হবে তা হিসাববিজ্ঞানের মৌলিক নীতির পরিপন্থি। কারণ দায় বা বকেয়া আলাদা একটি আর্থিক উপাদান, যা মুনাফার হিসাবের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত নয়।
আরও পড়ুন ২০০০ কোটি টাকা দেনা রেখে ৯৩৭ কোটির রেকর্ড মুনাফা দেখালো বিমানআমরা দৃঢ়ভাবে জানাতে চাই যে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বিমানের ঘোষিত ৯৩৭ কোটি টাকার মুনাফা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত হিসাববিজ্ঞান নীতির ভিত্তিতে গণনা করা হয়েছে এবং বর্তমানে তা বাংলাদেশের স্বনামধন্য নিরীক্ষা কোম্পানির দ্বারা নিরীক্ষাধীন রয়েছে। আপনাদের প্রতিবেদনে এ বিষয়ে যে বিভ্রান্তি তৈরি করা হয়েছে তা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা আশা করি, আপনারা সংশোধিত প্রতিবেদন প্রকাশের মাধ্যমে পাঠকদের বিভ্রান্তি দূর করবেন এবং ভবিষ্যতে তথ্য যাচাই ছাড়া এমন সংবাদ প্রকাশ থেকে বিরত থাকবেন।
প্রতিবেদকের বক্তব্য: ওই প্রতিবেদনে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) সহযোগী প্রতিষ্ঠান পদ্মা অয়েলের কাছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বকেয়া টাকার কথাই উল্লেখ করা হয়েছে। যা বিপিসির বকেয়ার খাতায় উল্লেখ আছে। সে তথ্য বিশ্লেষণ করেই এ প্রতিবেদন তৈরি করেছে। এখানে প্রতিবেদকের নিজস্ব কোনো বক্তব্য নেই।
এমএমএ/এমকেআর/জিকেএস